নিজস্ব প্রতিবেদক : গর্ভে সন্তান রেখে আফরোজা খাতুন (৩৩) নামে এক রোগীর ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নু। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে এই ধরণের অস্ত্রোপচার যশোরে এটাই প্রথম। সোমবার রাতে যশোর শহরের বেসরকারি একটি হসপিটালে রোগীর অস্ত্রোপচারটি করা হয়। বর্তমানে রোগী ও তার গর্ভের সন্তান সুস্থ রয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল রাতে যশোর শহরের বেজপাড়া মেইন রোড এলাকার ছয়তলার পাশের বাসিন্দা হুসাইন আহমেদের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আফরোজা খাতুনের হঠাৎ পেটে ব্যথা শুরু হয়। পরে তাকে আনা হয় গাইনী চিকিৎসক নুরজাহানের চেম্বারে। ওই চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সমস্যা ধরতে পারছিলেন না। পরে ওই চিকিৎসকের পরামর্শে গত ২০ এপ্রিল রোগীকে নেয়া হয় কলোরেক্টাল ও ল্যাপারোস্কপিক সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নুর কাছে। তিনি আল্ট্রাসনো রিপোর্ট দেখে নিশ্চিত হন রোগী অ্যাপেনডিক্সে আক্রান্ত হয়েছেন। তার অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেছে। তখন দ্রুত অস্ত্রোপচারের নির্দেশনা দেন।
ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নু জানান, ১৯ সপ্তাহের সন্তান গর্ভে রয়েছে আফরোজার। গর্ভাবস্থায় অ্যাপেন্ডিসাইটিস মানে কঠিন বিপদ। নির্দিষ্ট সময়ের আগে গর্ভপাত হতে পারে। এতে মা-শিশুর মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা থাকে। আফরোজার অ্যাপেনডিক্স ফেটে পেরিটোনাইটস হয়ে যায়। রোগী জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন। নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে রোগীর কাটা ছেড়া ছাড়া ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে অ্যাপেনডিক্স অস্ত্রোপচার করেন। অস্ত্রোপচার টিমে তাকে সহায়তা করেন ডা. আশরাফুজ্জামান ও ডা. কৌশিক আহমেদ। ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নু জানান, রোগীর গর্ভে সন্তান রেখে এই ধরণের অস্ত্রোপচার যশোরে তিনি প্রথমবারের মত করলেন। বর্তমানে মা ও তার গর্ভের সন্তান সুস্থ আছে।
রোগীর স্বামী হুসাইন আহমেদ জানান, পেটের যন্ত্রনায় তার স্ত্রী ছটফট করছিলেন। আবার গর্ভে সন্তান রয়েছে। স্ত্রী-সন্তানের চিন্তায় তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। ডা. মাহমুদুল হাসান পান্নুর সঠিক সময় অস্ত্রোপচার করার কারণে তার স্ত্রী ও গর্ভের সন্তান সুস্থ আছে। তিনি ও তার স্বজনরা ওই চিকিৎসকের প্রতি সন্তুষ্ট ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।