Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

মণিরামপুরে ১৭ ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ

এখন সময়: শনিবার, ১০ মে , ২০২৫, ০৩:৩৮:২৪ এম

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ১৭ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে তিন মাস ধরে বিনা মূল্যের ওষুধ সরবরাহ বন্ধ। এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে নামমাত্র মৌখিক পরামর্শ নিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে রোগীদের। এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের সঙ্গী জনবল সংকটও চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়ার সরকারি প্রকল্পের সুফল মিলছে না রোগীদের।

সম্প্রতি মণিরামপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে ওষুধ না থাকার তথ্য মেলে। এরপর রোহিতা, ঢাকুরিয়া ও খানপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে একই তথ্য পাওয়া যায়।

উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো জন্মনিয়ন্ত্রণ, মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং বয়ঃসন্ধিকালীন সেবা (কিশোর প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা) নিয়ে কাজ করে। জন্মনিয়ন্ত্রণ মূল কাজ হলেও কোনো কেন্দ্রে থেকে জন্মনিয়ন্ত্রণের খাবার কোনো বড়ি রোগীরা সরবরাহ পাচ্ছেন না। আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স, ক্যালসিয়াম, কৃমিনাশক, প্যারাসিটামল, মেট্রোনিডাজল, পেন্টোনিক্স-২০, হিস্টাসিনসহ ২৮ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করার কথা স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো থেকে। প্রতি মাসে ওষুধের যে চাহিদা পাঠানো হয়, তার তুলনায় বরাদ্দ কম আসে। এক বছর ধরে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ হয় না। এর মধ্যে গত নভেম্বরে কিছু ওষুধ এসেছিল। এরপর থেকে ওষুধ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

মণিরামপুর সদর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক (এফডব্লিউভি) শ্রাবন্তী দাস বলেন, ‘কৃমিনাশক বড়ি ছাড়া কোনো ওষুধ নেই। ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও চলতি ফেব্রুয়ারিতে কোনো ওষুধ বরাদ্দ পাইনি।’

শ্রাবন্তী দাস আরও বলেন, ‘যখন ওষুধ দেওয়া হতো, তখন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রতিদিন ৩০-৪০ রোগী আসতেন। চাহিদার তুলনায় কম বরাদ্দ পাওয়ায় এক মাসের বরাদ্দের ওষুধ দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যেত। এখন ওষুধ আসা বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি রোগীরা জেনে গেছেন। এ জন্য সেবা নিতে লোকজন কম আসেন। যাঁরা আসেন তাঁদের রোগ সম্পর্কে মৌখিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কোনো ওষুধ দিতে পারছি না।’

রোহিতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক রিনা পারভেজ বলেন, ‘নভেম্বরের পর আর ওষুধ আসেনি। ওষুধ না থাকায় রোগীরাও এখন আর আসেন না। অন্তঃসত্ত্বা নারীরা এলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করি। বাকি সময় অলস বসে কাটাতে হচ্ছে।’

এদিকে শুধু ওষুধ নয়, জনবল সংকটও চরমে পৌঁছেছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে রোগীর পরামর্শ ও ওষুধ সরবরাহ দেওয়ার জন্য একজন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক (এফডব্লিউভি) ও একজন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) কাজ করে থাকেন। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে হরিহরনগর, মশ্মিমনগর, দূর্বাডাঙ্গা ও মনোহরপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই দুই পদে লোকবল শূন্য। অন্য কেন্দ্রগুলোতে এফডব্লিউভি থাকলেও রোহিতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র বাদে কোনো কেন্দ্রে উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) নেই।

ওষুধ সরবরাহ বন্ধ ও জনবল সংকটের বিষয়ে জানতে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ওই দপ্তরের উপজেলা মেডিকেল অফিসার সুদীপ্ত সেন বলেন, গত নভেম্বরের পর আর ওষুধ আসেনি। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। এপ্রিল অথবা মে মাসের মধ্যে ওষুধ আসার সম্ভাবনা আছে। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নিশাত তামান্নার সঙ্গে কথা বলে কিছু ওষুধ কেনার চেষ্টা করা হবে।

সুদীপ্ত সেন বলেন, আমাদের ১৭টি উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) পদের বিপরীতে শুধু রোহিতা ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজনের পদায়ন আছে। বাকি কেন্দ্রগুলোতে এই পদে লোকবল শূন্য। এ ছাড়া উপজেলার হরিহরনগর, মশ্মিমনগর, দূর্বাডাঙ্গা ও মনোহরপুর এই চারটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক পদও শূন্য রয়েছে। অন্য কেন্দ্র থেকে সপ্তাহে দুই দিন এফডব্লিউভি ও সেকমো পাঠিয়ে কেন্দ্রগুলো সচল রাখা হয়েছে।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)