আবু সাঈদ মিলন, ঝিকরগাছা : দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যশোর-২ (চৌগাছা-ঝিকরগাছা) আসন থেকে এবার ১৬ জন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু আসনটিতে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনিরকে ফিরে পেতে চান চৌগাছা-ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের সূত্র জানায়, মনিরুল ইসলাম মনির চৌগাছা ও ঝিকরগাছা উপজেলার তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলেছেন দীর্ঘদিন ধরেই। সে সুবাদে দলের তৃণমূলে তার আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এর আগে তিনি ঝিকরগাছা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দশম জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার পিতা অন্যতম সংবিধান প্রণেতা আবুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর উপাধীপ্রাপ্ত ‘সাবাস চেয়ারম্যান’, ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য, ১৯৭১ সালে গণপরিষদ সদস্য, ১৯৭৩ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং ১৯৪৯-২০০৪ সাল পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ৫৫ বছর আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত যুক্ত ছিলেন।
মনিরুল ইসলাম মনির বাঁকড়া জে.কে হাইস্কুল ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৮৫-৮৬), যশোর সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৮৯-১৯৯০), শহীদ মশিয়ূর রহমান ল’ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি (১৯৯৩-৯৪), ১৯৯৬ সালে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত), মাত্র ২৬ বছর বয়সে ছাত্রলীগ থেকে সরাসরি যশোর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক (১৯৯৬-২০০৪), যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (২০০৪-২০১৫) ছিলেন। বর্তমানে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের ১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। একজন সুবক্তা হিসেবে নির্বাচনী এলাকাসহ দেশ-বিদেশ সুখ্যাতি রয়েছে তার।
২০০৯-১৩ সাল পর্যন্ত উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ২০১১ সালে বাংলাদেশের মধ্যে ঝিকরগাছা উপজেলা জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন। সংসদ সদস্য হিসেবে ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারি মুক্তিযুদ্ধের ৪৪ বছর পরে মহান জাতীয় সংসদে ১৩১ বিধিতে আনীত সিদ্ধান্ত প্রস্তাব বেসরকারি দিবসে কণ্ঠ ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয় এবং বীরঙ্গনারা মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির সকাল থেকে রাত পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অগ্রগতি ও উন্নয়নের বার্তা জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, হাটসভা, শান্তিসভা, শান্তি মিছিল, জনসভা ও পথসভা করেছেন। এছাড়া নবীণ ও প্রবীন ভোটারদের সমন্বয়ে ভোট কেন্দ্র কেন্দ্রিক কমিটি গঠন করে নৌকার নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন।
ঝিকরগাছার হাজিরবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোস্তফা আসাদুজ্জামান বলেন, সাধারণ জনগণ উন্নয়নে বিশ্বাসী। অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনিরের আমলে ঝিকরগাছা-চৌগাছায় যে উন্নয়ন হয়েছে। তা আর কোনো আমলে হয়নি। তার অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণে আওয়ামী লীগের ভোট বেড়েছে। দুই উপজেলাতেই তার ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। এবার জননেত্রী শেখ হাসিনা অ্যাড. মনিরকে যেনো মনোনয়ন দেন এটা আমাদের তৃণমূলের দাবি।
চৌগাছার স্বরুপদাহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সানোয়ার হোসেন বকুল বলেন, অ্যাড. মনিরের মতো কর্মীবান্ধব এমন নেতা সব জায়গায় প্রয়োজন। তিনি যেনো আমাদের নৌকার মাঝি হতে পারেন সেই দোয়া করি।
ঝিকরগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাহমুদ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনিরের উন্নয়নগুলো আমাদের দুই উপজেলা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছেন। এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুত পৌঁছে দিয়েছেন। রাস্তা, স্কুল-কলেজ নির্মাণ করেছেন। আমাদের প্রতিটি কর্মীদের হৃদয়ের দাবি অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির হবেন নৌকার মাঝি।
সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মুুকুল বলেন, অ্যাড. মনিরুল ইসলামের মতো একজন আপাদমস্তক রাজনীতিবিদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমার ব্যক্তিগত কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমাদের চাওয়া একটাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার হাতে নৌকা তুলে দেয়া হোক। তিনি নির্বাচিত হলে আমরা উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারবো এবং তৃণমূলের নেতাকর্মীরা মূল্যায়িত হবেন।
সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, আমি সর্বদা জনতার বারান্দায় হেঁটেছি। নেতাকর্মীদের বিপদে আপদে পাশে থেকেছি। আজীবন মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই।