বিল্লাল হোসেন: যশোর জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার সর্দার শরিফুল ইসলামের যৌন হয়রানীর ঘটনা ফাঁস হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর আমলে নিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক। শনিবার জমাদ্দার সর্দারকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন তিনি। শুনেছেন ভুক্তভোগী নারী স্বেচ্ছাসেবীর কাছ থেকে ঘটনার বর্ণনা।
এদিকে গত কয়েক মাসে অন্তত ১০ জন নারী স্বেচ্ছাসেবী কর্মক্ষেত্রে জমাদ্দার সর্দার শরিফুলের যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন বলে তথ্য মিলেছে।
হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, জমাদ্দার সর্দারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগের খবর গত ১০ নভেম্বর দৈনিক স্পন্দনে প্রকাশ হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তার এই কর্মকাণ্ডের জন্য তার মতো অনেক কর্মচারী তাকে ভৎসনা করেছেন।
তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ শনিবার ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার শরিফুল ইসলামকে তার কক্ষে ডেকে নেন। এ সময় যৌন হয়নারীর শিকার এক নারী স্বেচ্ছাসেবীকেও ডাকা হয়। তত্ত্বাবধায়কের সামনে তিনি কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার বর্ণনা দেন। পরে ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার শরিফুলকে এই ঘটনার জন্য আল্টিমেটাম দেন।
হাসপাতালের আরেক কর্মচারী জানান, এর আগেও শরিফুল ইসলাম নারী কর্মচারীকে যৌন হয়রানি করে সমালোচিত হন। সাবেক কর্মকর্তারা তাকে আল্টিমেটাম দিলেও কর্ণপাত করেননি। যৌন হয়রানি করা শরিফুলের নেশায় পরিণত হয়েছে। গত কয়েক মাসে অন্তত ১২ স্বেচ্ছাসেবীকে তিনি যৌন হয়রানি করেছেন। সামাজিকতার ভয় ও হাসপাতাল থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকির কারণে কেউ তার অপকর্মের প্রতিবাদ করার সাহস করেনি। কিন্তু সাহসী এক নারী তার বিপক্ষে হাসপাতালের কর্মকর্তা ও সংবাদকর্মীদের কাছে মুখ খুলেছেন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, পেটের দায়ে নারীরা হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবীর কাজ করেন। তাদের যৌন হয়রানির অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার সর্দার শরিফুলকে ডেকে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। আগামীতে এই ধরণের অভিযোগ উঠলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও জানান, আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ছুটিতে আছেন। তিনি কর্মস্থলে যোগদান করার পর শরিফুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার সর্দারের পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
গত রোববার (৫ নভেম্বর) বিকেলে গাইনী ওয়ার্ডে ভারপ্রাপ্ত জমাদ্দার সর্দার শরিফুল ইসলামের যৌন হয়রানির শিকার হন এক নারী স্বেচ্ছাসেবী।