ম.ম.রবি ডাকুয়া, মোংলা: পর্যটকদের ফেলে আসা প্লাস্টিকের মতো অপচনশীল বর্জ্যে ধীরে ধীরে বিপর্যয়ের পথে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন। সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসে আসা পানির বোতল, পলিথিন, প্যাকেট ও প্লাস্টিক সামগ্রী জমে থাকছে বনের বিভিন্ন খাল, চর ও সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায়। এসব প্লাস্টিক বর্জ্য সুন্দরবনের নদী-নালা ও খালে প্রবেশ করে বনের জীববৈচিত্র্যকে হুমকির মুখে ফেলেছে। ব্যাহত হচ্ছে বনের গাছপালা জন্মানো এবং মাছ ও জলজ প্রাণীর প্রাকৃতিক প্রজনন প্রক্রিয়া। এর আকার দিনে দিনে ভয়াবহ হচ্ছে।যাতে বনের ভয়াবহতা অতি নিকটে। এ পরিস্থিতিতে প্লাস্টিক দূষণ থেকে সুন্দরবনকে বাঁচাতে বিশেষ কার্যক্রম শুরু করেছে বন বিভাগ। ইতোমধ্যে সুন্দরবনের ডিমের চর, কচিখালী বিচসহ সমুদ্র তীরবর্তী বনাঞ্চল এলাকায় বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খুরিয়াখালী গ্রামের জেলে আলতাফ শেখ জীবিকার তাগিদে প্রায় ২০ বছর ধরে সুন্দরবনে মাছ ধরছেন।
তিনি জানান, বর্তমানে সুন্দরবনের নদীতে প্লাস্টিক বোতল, বিস্কুট আর চিপস এর প্যাকেট ভাসতে দেখা যায়। জাল ফেললে মাছের সাথে প্লাস্টিকের বোতল উঠে আসে। সুন্দরবনে আমরা যারা মাছ ধরতে যাই, তারা কখনই সুন্দরবনে এসব ফেলিনা। কিন্তু ক্ষতি আমাদের-ই হয়।
বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, প্লাস্টিক বর্জ্য মানবদেহের জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি এটি বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনকেও মারাত্মক ক্ষতি করছে। সমুদ্র ও সুন্দরবনের মাছের শরীরে এ বর্জ্য প্রবেশ করলে এবং সে মাছ যদি মানুষ খায়, তাহলে বড় ধরনের দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পূর্ব বিভাগে যোগদানের পর যখন বনের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনে যাই, তখন দেখতে পাই সমুদ্র তীরবর্তী বনসংলগ্ন এলাকাগুলোতে প্রচুর প্লাস্টিক বর্জ্য জমে আছে। এরপর থেকেই আমরা সুন্দরবনকে প্লাস্টিক মুক্ত রাখার লক্ষ্যে পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু করি।