নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর শহরতলীর শেখহাটি আদর্শপাড়ার বৃদ্ধা শাহানারা বেগম সানা হত্যা মামলায় বাড়ির ভাড়াটিয়া দুই যুবককে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পিবিআই। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন পিবিআই’র তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজোয়ান।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো, নিহত শাহানারা বেগম সানার বাড়ির ভাড়াটিয়া যশোর সদরের তালবাড়িয়া গ্রামের মফিজুর রহমানের ছেলে সুমন ইসলাম ও একই গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে শরিফুল ইষলাম বাবলা।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর শহরতলীর শেখহাটির ইজিবাইক চালক আতিয়ার রহমান তার স্ত্রী শাহানারা বেগম সানা আদর্শপাড়ায় নিজ বাড়িতে বসবাস করতেন। তার বাড়িতে ভাড়া থাকতো শরিফুল ইসলাম বাবলা ও তার তার মামাতো ভাই সুমন ইসলাম। ২০২৪ সালের ৩০ অক্টোবর দুপুর ৩টার দিকে ইজিবাইক চালানোর জন্য বাইরে যান আতিয়ার রহমান। তিনি সন্ধ্যা ৬টায় ফিরে ঘরের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলানো দেখতে পান। বাড়ি বিভিন্ন কক্ষে এবং মূল গেটে তালা ঝুলানো থাকায় তিনি মনে করেন তার স্ত্রী বাইরে কোথাও গেছেন। এসময় আতিয়ার রহমান তার ছেলে ইউসুফ ও সোহেলকে ফোন করে জানতে পারেন, তাদের মা তাদের বাড়িতে যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর সানা বেগমকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশকে অবহিত করেন স্বজনরা।
পরদিন সকাল ৮টার দিকে আতিয়ার ও তার দুই ছেলে ও প্রতিবেশীদের নিয়ে বসতবাড়ির দেয়াল বেয়ে বাড়ির ভেতরে থাকা ছাগলকে খাবার দিতে যায়। এসময় ঘরের দরজার সাথে রক্ত মাখানো কাপড়ের টুকরা দেখে সন্দেহ হওয়ায় তালা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ সানা বেগমকে রক্তাক্ত মৃতদেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন। এ সংবাদ পেয়ে কোতয়ালি থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে ইউসুফ হোসেন দুই ভাড়াটিয়াকে সন্দেহ করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, শাহানারা বেগম সানার বাড়ির ভাড়াটিয়া বাবলা ও সুমনের কাছে ভাড়া বকেয়া ও বিদ্যুৎ বিল পাওনা ছিল। ভাড়ার টাকা চাইলে আসামিরা তাকে গালিগালাজ ও হুমকি দিত। আসামিরা একপর্যায়ে সানা বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ৩০ অক্টোবর দুপুরের পর বাবলার কাছে পাওনা টাকা চাইলে বাবলা ঘরে আসতে বলে। এ সময় সানা বেগম ঘরে গেলে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী আসামি সুমন দড়ি দিয়ে পেচিয়ে ধরে। এরমধ্যে বাবলা ধারালো চাকু দিয়ে সানা বেগমের গলায় পোচ দিয়ে মেঝেতে ফেলে দেয়। সুমন পুনরায় সানা বেগমের গলায় চাকু ঢুকিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ব্যবহৃত গহনা ও বাড়ির কিছু মালামাল নিয়ে সব রুম ও প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামিদের স্বীকারোক্তি জবানবন্দি ও সাক্ষিদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটে অভিযুক্ত দুইজনকে আটক দেখানো হয়েছে।