নিউজ ডেস্ক: পাল্টাপাল্টি হামলার চার দিনের মাথায় যুদ্ধবিরতিতে গেল ভারত ও পাকিস্তান।
শনিবার বিকাল থেকে এশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে এ যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের গত কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় সংঘাতের ‘আপাতত’ ইতি ঘটল।
যুদ্ধবিরতির আভাস সবার আগে আসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে।
সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাতে দীর্ঘ সময় ধরে আলোচনার পর আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা দিচ্ছি যে, ভারত ও পাকিস্তান অবিলম্বে একটি পূর্ণ অস্ত্রবিরতিতে রাজি হয়েছে।”
ট্রাম্পের পর অস্ত্রবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করে ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও।
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, “সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার সঙ্গে আপস করা ছাড়া পাকিস্তান সবসময় এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।”
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, “ভারতের স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা থেকে দুই দেশ স্থল, বিমান ও নৌপথে হামলা বন্ধ রাখতে রাজি হয়েছে।”
দুই পক্ষ সোমবার (১২ মে) আবার আলোচনায় বসবে বলেও তুলে ধরেন মিশ্রি।
বিবিসি বলছে, যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পর নয়া দিল্লিতে সংবাদ করেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
তারা বলেন, যুদ্ধবিরতির চুক্তি নয়া দিল্লি গ্রহণ করেছে। তবে দেশ রক্ষায় তারা সজাগ থাকবে।
যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার পরেই নিজেদের আকাশসীমা সব ধরনের ফ্লাইটের জন্য খুলে দেয় পাকিস্তান এয়ারপোর্ট অথরিটি (এপিএ)।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তার সূত্রপাত গত ২২ এপ্রিল।
ওই দিন কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার শোধ নিতে বুধবার প্রথম প্রহরে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। জবাবে পাকিস্তানও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গোলা বর্ষণ শুরু করে।
সেই হামলা পাল্টা হামলার চার দিনের মাথায় এসে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় যুদ্ধবিরতিতে গেল দুই দেশ।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান আজ সামরিক পদক্ষেপ ও গোলাগুলি বন্ধে সমঝোতায় পৌঁছেছে। ভারত ধারাবাহিকভাবে সন্ত্রাসবাদের সব ধরনের রূপ ও প্রকাশের বিরুদ্ধে দৃঢ় এবং আপসহীন অবস্থান বজায় রেখেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।”
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান ‘অবিলম্বে একটি অস্ত্রবিরতিতে এবং একটি নিরপেক্ষ স্থান বিস্তৃত বিষয়ের ওপর আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে।”
সামাজিক মাধ্যম এক্স এ তিনি বলেছেন, “শান্তির পথ বেছে নেওয়ায় আমরা প্রধানমন্ত্রী মোদী ও শরিফের রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার প্রশংস করি।”
তিনি জানান, তিনি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও শাহবাজ শরিফসহ ঊর্ধ্বতন ভারতীয় ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কাটিয়েছেন।
এর আগে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা কমিয়ে আনার উপায় খুঁজে বের করতে উভয় পক্ষের প্রতি আহ্বান জানান রুবিও।