লোহাগড়া প্রতিনিধি: সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মিমি আক্তার। কিন্তু অর্থাভাবে ভর্তি নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন তিনি। মিমি আক্তার নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রামের আফসার উদ্দিন সরদার ও মা শিউলি বেগমের কন্যা। তিন ভাই বোনের মধ্যে মিমি বড়। মিমি নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি ও দিঘলিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
আর এবার মেডিকেল কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। মেধাতালিকায় ২ হাজার ১১৬তম হয়েছেন তিনি।
তার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট এক খণ্ড জমিতে তাদের বসতভিটা। সেখানে দুটি ছোট একটি টিনের ঘর। মিমি আক্তার বলেন, ছোট থেকেই ইচ্ছা ছিল ডাক্তার হব। কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগে পড়লে অনেক খরচ। অসচ্ছলতার কারণে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চাইনি। তারপরও ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নে স্কুল কলেজের স্যারদের উৎসাহ ও সহযোগিতায় পড়েছি। মা বলতেন, পড়াশোনা তোমাদের প্রধান হাতিয়ার। তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে পড়েছি।
এখন মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ও পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেয়া পরিবারের পক্ষে কোনোভাবে সম্ভব নয়। তাই ভর্তি হতে পারব কিনা সেটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মেডিকেলে চান্স পেয়েছে মেয়ে, দুশ্চিন্তা কাটছে না দিনমজুর বাবার। মিমির বাবা আফসারউদ্দিন সরদার বলেন, ‘সবদিন কাজ পাওয়া যায় না। এবার শীতের কাপড়ের দরকার ছিল ছাওয়াল-মায়ের, তাও কিনে দিতে পারিনি। শুনলাম, মেডিকেলে ভর্তি হতি ২৫ হাজার টাকা লাগবি। দুইডে দেবদার গাছ আছে, তা বিক্রির জন্য খরিদ্দার দেখাইছিলাম। ১২ হাজার টাকা বলিছে। ভর্তিতে আরও ১৩ হাজার লাগবি। ভর্তি করেও বা কিভাবে খরচ চালাব? তাই ভর্তি করতি পারব কিনা, পড়াতি পারব কিনা তাই ভাবছি।’ নবগঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোশারেফ হোসেন বলেন, মিমি খুব মেধাবী। স্কুল ও কলেজের শিক্ষকদের সহযোগিতায় তার পড়াশোনা চলেছে। কিন্তু মেডিকেলে তো অনেক খরচ। সব মিলে ওই পরিবারের পক্ষে পড়াশোনা চালিয়ে নেয়া সম্ভব নয়। সুযোগ পেলে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার মতো মেধাবী মেয়েটি। তার পড়াশোনার জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা দরকার।