শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি: বাগেরহাটের শরণখোলায় ৩৫/১ পোল্ডারের নির্মাণাধীন মূল বেড়িবাধ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে হস্তান্তরের আগে ডেবে যেতে শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়েছে বেড়িবাধ নির্মাণকারী সংস্থা সিআইপির। বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাঙন কবলিত গাবতলার আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করছে প্রকল্পের সাথে জড়িত কর্তৃপক্ষ। অন্য দিকে ভাঙন কবলিত এলাকার আধা কিলোমিটারের মধ্যে সঙ্গবদ্ধ একটি চক্র দীঘদিন ধরে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ওই এলাকায় গভীরতার সৃষ্টি হওয়ায় ভাঙন শুরু হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।
বুধবার অক্টোবর সকাল ৭টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার ভাঙন শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকালে আবারো মূল বেড়িবাধে প্রায় ১০০ মিটার ডেবে গেছে আর এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ওই এলাকায় বসবাসকারী কয়েকশত পরিবার।
ভাঙনের খবর বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামিম, বাগেরহাট জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুম বিল্লাহ, সিআইপি প্রজেক্টের ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার নাহিদ। এছাড়া ভাঙন কবলিত সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলার আশার আলো মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলতে শুরু করেছে প্রকল্প কর্মকর্তারা। আর এতে স্বস্তি এসেছে ওই এলাকায় বসবাসকারী গ্রামবাসীর মধ্যে।
এ ব্যাপারে সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরান হোসেন রাজিব ও সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য জাকির হাওলাদার বলেন, ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলায় ভাঙন রোধ হতে পারে বলে তারা মনে করেন। তবে বগি থেকে উত্তর সাউথখালী পর্যন্ত ব্যাপক আকারে নদী শাসন ব্যবস্থা না করলে অন্য যেকোনো যায়গা থেকে আবারও ভাঙন শুরু হতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দক্ষিণ সাউথখালী ইউনিয়নের গাবতলা এলাকার কয়েকজন গ্রামবাসী জানান একটি প্রভাবশালী মহলের ইন্দনে উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা গ্রামের কিচলু তালুকদার ও সেলিম বয়াতি ড্রেজার দিয়ে ভাঙন কবলিত এলাকার বলেশ্বর নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম শামিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, তিনি ইতোমধ্যে বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করেছেন এছাড়া যে কাজ শুরু হয়েছে তাতে ভাঙন কিছুটা কমলেও আরও ব্যাপক আকারে পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এ ব্যাপারে বেড়িবাধ নির্মাণ প্রকল্পের খুলনা বিভাগীয় কনসালটেন্ট সুপারভিশন ইঞ্জিনিয়ার শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক ভাঙন কবলিত এলাকার ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলানো শুরু হয়েছে। ব্যাপক আকারে কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালিদ হোসেন বলেন, তিনি বিষয়টি শুনে তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বাগেরহাটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ প্রকল্প কর্মকর্তাদের ভাঙনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে নির্দেশ দিয়েছেন এবং সে মোতাবেক ভাঙন কবলিত এলাকায় জিওব্যাগ ফেলানো শুরু হয়েছে।