৩ দিনব্যাপী রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী ও লোকজমেলা শুরু আজ

২৮ বছরেও পূর্ণতা পায়নি দক্ষিণডিহি রবীন্দ্র কমপ্লেক্স

এখন সময়: মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০৫:৪৩:১১ পিএম

ফুলতলা (খুলনা) প্রতিনিধি: ২৮ বছরেও পূর্ণতা পায়নি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শ্বশুরবাড়ি খুলনার ফুলতলা উপজেলার দক্ষিণডিহির রবীন্দ্র  কমপ্লেক্স। প্রতিশ্রুতির মধ্যেই  সীমাবদ্ধ রয়েছে এ প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ। ভারতের শান্তিনিকেতনের আদলে কমপ্লেক্সটি গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও আজও বাস্তবায়ন হয়নি। এরকম অপূর্ণতার মধ্যেই  কমপ্লেক্সটিতে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী রবীন্দ্রজন্মজয়ন্তী ও লোকজ মেলা। বিশ^কবির ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আয়োজন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়,  ১৯৯৫ সালে খুলনা জেলার  তৎকালীন জেলা প্রশাসক কাজী রিয়াজুল হক দক্ষিণডিহিতে রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি দখলমুক্ত করার  উদ্যোগ নেন। ১৯৯৫ সালে ৭ সেপ্টেম্বর বাড়িটি দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর বাড়িটি সংরক্ষণ ও সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। ২০০০ সালের ৮ আগস্ট বাড়িটি দেখাশোনার দায়িত্ব নেয় প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর।

একই সঙ্গে কাজী রিয়াজুল হকের নেতৃত্বে ফুলতলায় সুধীজন, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে মতবিনিময় সভায় বাড়িটিকে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স করার সিদ্ধান্ত হয়। সেই থেকে কমপ্লেক্স ভবনের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের কাছে ৪৯ লাখ টাকা চেয়ে চিঠি দেয়া হয়। মন্ত্রণালয় এ বাবদ ২২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। ওই টাকা দিয়ে ২০১২ সালের মাঝামাঝি ভবন সংস্কার, একপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বিদ্যুৎ সংযোগসহ অন্যান্য কাজ করা হয়। এরই মধ্যে দোতলা ভবনের সামনে স্থাপন করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং তার স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর আবক্ষ মূর্তি। পুরোনো সবেদা তলায় নির্মিত হয়েছিল মৃণালিনী মঞ্চ।

কিন্তু বাড়িটি ঘিরে রবীন্দ্রনাথের কর্মময় জীবনের ওপর সংগ্রহশালা কাম লাইব্রেরি, অডিটোরিয়ামসহ রবীন্দ্র চর্চা কেন্দ্র, রেস্ট হাউস নির্মাণ এখনও হয়নি।  পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা, পিকনিক স্পট নির্মাণ, রবীন্দ্র কমপ্লেক্্ের প্রবেশের ৩টি রাস্তা প্রশস্তকরণের কাজ বাকি আছে। এছাড়া এখানে কুষ্টিয়ার শিলাইদহে প্রস্তাবিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা ক্যাম্পাস বা স্বতন্ত্র ইনষ্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, বেজেরডাঙ্গা রেলস্টেশনের নাম পরিবর্তন করে দক্ষিণডিহি রেলস্টেশন এবং খুলনা-বেনাপোলগামী ট্রেনকে মৃণালিনী এক্সপ্রেস নামকরণও বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া ভারতের শান্তিনিকেতনের আদলে রবীন্দ্র কমপ্লেক্স গড়ে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও ২৮ বছরেও হয়নি। বর্তমানে দৃশ্যমান কাজের মধ্যে শুধুমাত্র সীমানা প্রাচীর, মূল ভবনের সংস্কার ও রঙের কাজ, নিচতলায় অপূর্ণাঙ্গ লাইব্রেরি, সংগ্রহশালা ও দর্শনার্থীদের অবসর যাপনের জন্য ছাউনী, বিনোদনের জন্য পার্ক ও  টয়লেট।

এদিকে, কবিগুরুর ১৬২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। বিকেলে সাড়ে ৪টায় অনুষ্ঠানের  উদ্বোধন করবেন সাবেক মন্ত্রী ও নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি। খুলনা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুকুল কুমার মৈত্র অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ । মুখ্য অলোচক থাকবেন খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার সাধন রঞ্জন ঘোষ।

দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে ৪টায় শুরু হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খোশনূর রুবাইয়াৎ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম নজরুল ইসলাম। মুখ্য আলোচক থাকবেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও গবেষক প্রফেসর ড. স্বরোচিষ সরকার। 

বুধবার সমাপনী দিনে বিকাল সাড়ে ৪টায় খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার জিল্লুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পুলিশ কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মঈনুল হক, ও খুলনার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান।