ফরহাদ খান, নড়াইল: নড়াইলের কালিয়া ও নড়াগাতী এলাকায় নাশকতার চারটি মামলায় নড়াইল-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা কবিরুল হক মুক্তির জামিন নামঞ্জুর করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কালিয়া থানার দু’টি নাশকতা মামলায় মুক্তিকে প্রথমে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেয়া হয়। আদালতের বিচারক রত্না সাহা তার জামিন নামঞ্জুর করেন। এরপর নড়াগাতী থানায় দায়েরকৃত আরো দু’টি নাশকতা মামলায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে নেয়া হয়। এই আদালতেও জামিন না মঞ্জুর করে মুক্তিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক মারুফ হাসান।
এদিকে, ওইদিন (বুধবার) সকাল ৯টার পরই কড়া পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে মুক্তিকে নড়াইলের আদালতে আনা হয়। তার সঙ্গে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়ার রহমানকেও প্রিজনভ্যান গাড়ি থেকে নামতে দেখা যায়।
এদিকে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত সোয়া ৯ টার দিকে ঢাকার গুলশানের নিকেতন এলাকা থেকে কবিরুল হক মুক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
ডিএমপি সূত্র জানায়, নড়াইল–-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুক্তির নামে একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে গত বছর গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নড়াইলে কয়েকটি মামলা দায়ের হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
রাজধানীর গুলশান থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেফতারের পর মুক্তির ছয়দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পুলিশের ১০ দিন রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ গত ২৫ সেপ্টেম্বর এই আদেশ দেন।
রিমান্ড আবেদনে উল্লেখ করা হয়, গ্রেফতার করার পর কবিরুল মুক্তির মোবাইল ফোন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের সব পর্যায়ের নেতা–কর্মীদের মধ্যে সরকার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করছেন তিনি। এ কাজে ফেসবুক মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রাম ব্যবহার করেছেন। সহিংসতা ছড়াতে প্ররোচনা দিচ্ছেন।
ইতোমধ্যে সাবেক এমপি মুক্তি ও তার স্ত্রী চন্দনা হকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক)।
কবিরুল হক মুক্তি নড়াইল-১ আসন থেকে ২০০৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। গত বছর গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এলাকায় প্রকাশ্যে দেখা যায়নি তাকে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাতে গ্রেফতারের পর গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকা থেকে মুক্তিকে নড়াইল জেলা কারাগারে আনা হয়।