Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒যশোরে এনসিপির জুলাই পদযাত্রার পথসভা

কোনো দুর্নীতিবাজ, দখলবাজকে ভয় পাবেন না : নাহিদ ইসলাম

এখন সময়: শনিবার, ১২ জুলাই , ২০২৫, ১২:৫১:১২ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, কোনো দুর্নীতিবাজ, দখলবাজকে ভয় পাবেন না। একটি রাজনৈতিক দল দাবি করে কোটি কোটি মানুষের দল নাকি তাদের। এই কোটি কোটি, লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের দেখায়েন না। আমরা ফ্যাসিবাদের আমলে দেখেছি কত মানুষ ছিল তাদের। সেই মানুষেরা কত আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা ১০জন মানুষ দাঁড়িয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আপনার ১০ জন, ২০জন, ১০০জন মানুষ নিয়েই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। হাজারে হাজারে লক্ষ লক্ষ মানুষ আবাবিল পাখির মত আমাদের সঙ্গে রাজপথে দাঁড়িয়েছিল। ফলে মানুষের হিসেব আমাদের দেখিয়েন না। যদি নৈতিকতার সাথে থাকেন, ইনসাফের সাথে থাকেন, তাহলে একজন মানুষ লক্ষ মানুষের সমান শক্তিশালী হয়ে যান। ইনশাল্লাহ আমরা সেই একজন মানুষ হতে চাই। আমরা দায় ও দরদের ইনসাফ ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গড়তে চাই। যারা ইনসাফের পক্ষে দাঁড়াবে, ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবে, যারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবে তেমন রাষ্ট্র চাই। যেখানে সমাজের সকল ধরণের মানুষ সমান হক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
শুক্রবার বিকেলে যশোর শহরের জজ আদালতের পাশে খেজুর গাছ চত্বরে জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রার পথসভায় তিনি এই কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন একসঙ্গে চাই। বিচার সংস্কার ছাড়া বাংলার জনগণ নির্বাচন মেনে নিবে না। যারা বিচার সংস্কার ছাড়া নির্বাচন চায়, তারাই নির্বাচনকে পিছিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নির্বাচন ও ভোটাধিকারের পক্ষে সত্যিকারের লড়াই করে যাচ্ছে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃত্ব। আমরা স্বাধীনতা এনেছি। আমরা সংস্কার আনবো। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে দেশের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে দলীয়করণ করতে দিবো না। আমরা চাই পুলিশ নিরপেক্ষভাবে জনগণের পক্ষে কাজ করবে। পুলিশ কোনো দলের অনুসারী হবে না। সরকারি দলের অনুসারীও হবে না। আমরা চাই আমলাতন্ত্র প্রশাসন কোনো দলের অনুসারী হবে না। কোনো সরকারি দলের নেতার উপর নির্ভর করবে না। তাদের মেধা যোগ্যতা অনুযায়ী প্রমোশন নির্ভর করবে। আমরা চাই বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গণপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করবে। আমরা চাই না সেনাবাহিনীর অফিসার তারা গুমের সাথে জড়িত হোক। আমরা চাই না সেনাবাহিনীর মত প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্ককরণ করবে। আমরা এই কলঙ্ক দূর করতে চাই। আমরা ইনসাফ ভিত্তিক কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবো।
যশোর জেলার দীর্ঘদিনের সমস্যা তুলে ধরে নাহিদ ইসলাম বলেন, যশোরের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনারী কেয়ার ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ চালু হয়নি। সেখানে আইসিইউ চালু হয়নি। যশোরের মানুষকে খুলনায় যেতে হয় চিকিৎসার জন্য। আমরা চাই যশোরের মানুষ যশোরেই সেবা পাবে। আমরা চাই যশোরের মানুষ যশোরেই শিক্ষা পাবে। আমরা ভবদহ এলাকার জলাবদ্ধতার কথা জানি। দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা সমস্যায় মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। সেই সমস্যার কথা জানি। এই সমস্যা দূর করার দায়িত্ব নিতে হবে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতৃবৃন্দকে। আমরা বেনাপোলের দুর্নীতি, মাদক কারবারের কথা জানি। দুর্নীতি মাদকের বিরুদ্ধে তরুণ ছাত্র-জনতাকে দাঁড়াতে হবে। গণঅভ্যুত্থানে যেমন আপনার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তেমনি যশোরসহ সারাদেশের মানুষের সমস্যায় পাশে দাঁড়াতে হবে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির মূখ্য সমন্বয়ক (উত্তর অঞ্চল) সারজিস আলমের সঞ্চালনায় পথসভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, মূখ্য সংগঠক হাসানত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য খালিদ সাইফুল্লাহ জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতৃবৃন্দ।
এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে যশোর শহরের একটি হোটেলের কনফারেন্স রুমে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে এনসিপি যশোর জেলা শাখা। সভায় বক্তাব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুম ও ডা. তাসনিম জারা, এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা।
পথসভায় দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, এনসিপিকে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বাচন বিরোধী করে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কথা বলি, তখন একটি রাজনীতিক দলের মন খারাপ হয়। আমরা যখন নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার কথা বলি, তখন একটি রাজনীতিক দল বেজার হয়। যখন আমরা একটি দলের টেন্ডারবাজির বিরুদ্ধে কথা বলি তখন তারা গোস্বা করে। যখন আমরা বলি, লন্ডনে বসে ষড়যন্ত্র হচ্ছে; তখন একটি দল বেজার হয়। আমরা চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে কথা বললে আপনাদের তো গায়ে লাগার কথা নয়। আপনারা যদি ফ্যাসিবাদ বিরোধী রাজনীতি করে থাকেন তাহলে তো গোস্বা করার কথা নয়।
আমরা সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এক সঙ্গে চাই মন্তব্য করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হাসিনার পতিত দোশরদের একটি পক্ষ পালিয়েছে ভারতে আরেকটি পক্ষ লন্ডনে। আমরা সংস্কারের পক্ষে, তার বিরুদ্ধে যদি কথা বলেন তাহলে ভেবেই নিবো আপনারা সংস্কারের বিরুদ্ধে। সংস্কারে বিরোধীতা করছেন।
ভারত ও লন্ডনে বসে আওয়ামী লীগের পতিত দোসররা ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা নির্বাচন চাই, কিন্তু অনেক সংস্কার ঠেকানোর নামে নির্বাচন পেছাতে চায়। আমাদের দাবি-জুলাই সনদ, বিচার, নির্বাচন সব প্যাকেজ আকারে হতে হবে। ভারত ও লন্ডনে বসে আওয়ামী লীগের পতিত দোসররা ষড়যন্ত্র করছে, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, সংস্কারের আলাপ টেবিলে আছে, রাজপথে নামাতে বাধ্য করবেন না । তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রত্যেকবার আন্দোলন হয়, জীবন দেয় ছাত্ররা, রক্ত দেয় ছাত্ররা আর কিছু রাজনৈতিক দল ফায়দা লোঠে। এসব রাজনীতিক দল ভেবে ছিলো, আন্দোলনের পর আমরা ঘরে ফিরে যাব। কিন্তু বাংলাদেশে গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম, বাংলাদেশকে যে সংস্কার করার স্বপ্ন দেখেছিলাম; সেটা না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। আমরা যখন সংস্কার নিয়ে কথা বলছি, তখন এসব রাজনীতিক দলদের ভিতর ভয় ঢুকে গেছে। আমরা শাপলা মার্কার কথা বলেছি তারা ভুলভাবে জাতীয় প্রতীক শাপলা ভেবে আমরা যেন শাপলা প্রতীক না পাই; সেটার ষড়যন্ত্র করছে।
বিএনপিকে ইঙ্গিত করে আকতার হোসেন বলেন, ‘আমরা যখন বাংলাদেশে সংস্কারের কথা বলছি; তখন শুধু তারা নির্বাচনের কথা বলছে। এনসিপির এই সদস্য সচিব বলেন, ‘যদি হাসিনার সিস্টেমে থাকে, হাসিনার সংবিধানে থাকে, হাসিনার বিচার বিভাগই থাকে, হাসিনার প্রশাসন থাকে তাহলে আমাদের নতুন করে যে বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন; সে স্বপ্ন স্বপ্নই থাকবে। সেটা কখনো বাস্তবায়ন হবে না।
সংস্কার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা বলছি সংস্কারে আলাপ টেবিলে আছে, সংস্কারের আলোচনা যদি আপনারা টেবিলেই না হলে; বাংলাদেশের মানুষ যখন রাজপথে নেমেছিল; এই সংস্কারের দাবিতে তারচেয়ে বহু গুনে রাজপথে নেমে আসবে। বাংলাদেশের মানুষ ভারতের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক চায়, কিন্তু তাদের দাদাগিরিকে মানবে না।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)