শেখ কাজিম উদ্দিন, বেনাপোল : টানা বর্ষণে জলাবদ্ধতায় অচল হয়ে পড়েছিল দেশের অন্যতম বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল। শেডের অভ্যন্তরে পানি ঢুকে পড়ায় আমদানি পণ্য ভিজে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েন ব্যবসায়ীরা। এতে পণ্য খালাসে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় এবং আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়েন।
বিষয়টি নিয়ে কয়েকদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বুধবার (৯ জুলাই) বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডাঃ কাজী নাজিব হাসান বেনাপোল স্থলবন্দরের শেডগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে ইউএনও কাজী নাজিব হাসান বন্দরের পানি নিষ্কাশনে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন এবং পানি অপসারণের কাজ শুরু হয়। একইসাথে জলাবদ্ধতা নিরসন ও ভবিষ্যতে পানি জমে থাকলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে ৬ সদস্যের একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়।
এ সমন্বয় কমিটিতে বেনাপোল পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে সভাপতি মনোনীত করা হয়। অন্যান্যরা হলেন, বেনাপোল কাস্টম হাউস কমিশনার, বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালক, বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার, বেনাপোল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী ও সভাপতির মনোনীত স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ডাঃ কাজী নাজিব হাসান জানান, “আমি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও বেনাপোল পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব দিয়েছি। আমাদের প্রশাসন ও পৌরসভার সমন্বিত উদ্যোগে পানি অপসারণের কাজ চলছে। আশা করছি শিগগিরই শেডের সব পানি অপসারণ করে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে সমস্যাটি দীর্ঘদিন ধরে ভোগাচ্ছিল, সেটির সমাধানে বেনাপোল বন্দর ব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় প্রশাসন একসাথে কাজ করছে। সরেজমিনে গেলে পরিবর্তনটি দেখা যাবে।”
বেনাপোল হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন ৯২৫-এর সাধারণ সম্পাদক শহীদ আলী জানান, “গত দুই দিন ধরে শ্রমিক ইউনিয়ন ও বন্দর কর্তৃপক্ষ মিলে পানি অপসারণের চেষ্টা করছিল। আজ উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার যৌথ প্রচেষ্টায় পানি নিষ্কাশন ত্বরান্বিত হওয়ায় বন্দরে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা আশা করছি, ব্রিজের নিচ দিয়ে দ্রুত পানি বেরিয়ে যাবে এবং আর কোনো জলাবদ্ধতা থাকবে না।”
দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত স্থলবন্দর হিসেবে বেনাপোল দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। বন্দরে পানির স্থবিরতায় বাণিজ্য কার্যক্রম ব্যাহত হলে দেশের রাজস্ব আদায়েও প্রভাব পড়ে। তাই পানি নিষ্কাশনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে প্রশাসন, পৌরসভা ও বন্দর কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বেনাপোল বন্দরের শেড থেকে পানি অপসারণের কাজ চলমান রয়েছে এবং স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।