মিরাজুল কবীর টিটো: যশোরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে অধিকাংশ সময় রোগী ভর্তি হলেও ডাক্তার ও নার্সদের ঠিকমত পাওয়া যায় না । ডাক্তাররা চেম্বার নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। কোন রোগী যদি সমস্যায় পড়ে তাদের স্বজনরা নার্সদের ডাকলে তারা গুরুত্ব দেন না। তারা নিজেদের মেকআপের কাজে ব্যস্ত থাকেন।
জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সোমবার সকালে কালেক্টরেট সভা কক্ষ অমিত্রাক্ষরে অনুষ্ঠিত জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই বিষয় নিয়ে জোর আলোচনা হয়। সেই সাথে আরো বলা হয়, ড্রাইভাররা রাস্তার ধারে বাস থামিয়ে রাখার বিষয়ে সচেতন না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সভায় আরো বলা হয়, হাসপাতালে বাথরুম ব্যবহারের অনুপযোগী। অনেক ওয়ার্ডে টয়লেটের কাছে রোগী বেডে রাখা হয়। তারা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।
চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, যশোরের মানুষ সঠিক চিকিৎসা সেবা পাওয়ার জন্য ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। অধিকাংশ সময় রোগী ভর্তি হলেও হাসপাতালে ডাক্তার ও নার্সদের পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরো বলেন গত আইনশৃঙ্খলা সভায় বলা হয় রাস্তার উপর বাস থামিয়ে রাখা যাবে না। তারপরও এটা কার্যকর হয়নি। বরং বোর্ড অফিসের সামনের রাস্তার পাশে বাস থামিয়ে রাখার কারণে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। কোরবানীর ঈদে হাটের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। গরু বিক্রি করে যাওয়ার সময় বিক্রেতার টাকা ছিনতাই হয়ে যায়। এজন্য বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন বলেন একই কথা। তিনি জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেন হঠাৎ করে হাসপাতাল পরির্দশনে যেতে তাহলে চিকিৎসার বিষয়ে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।
জেলা কাজী সমিতির সভাপতি মোশারেফ হোসেন বলেন হাসপাতালে টয়লেট ও বাথরুমে অনেক দুর্গন্ধ বের হওয়ার পাশাপাশি পানি জমে থাকে। এ কারণে ব্যবহারের অনুপযোগী। ওয়ার্ডে কোনো রোগী সমস্যায় পড়লে নার্সদের ডাকলে তারা কোনো গুরুত্ব দেন না। নার্সরা মেকআপ নিয়ে ব্যস্ত থাকেন।
যশোর ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাক্তার নাজমুস সাদিক বলেন, হাসপাতাল ২৫০ শয্যা হলেও চারগুন রোগী বেশি ভর্তি হয়। রোগীর তুলনায় ডাক্তারসহ জনবল সংকট রয়েছে। এ কারণে চিকিৎসা সেবা কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। যতটুকু জনবল আছে তাই দিয়ে যথাসাধ্য চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের প্রতিনিধি ডাক্তার বিচিত্র মল্লিক বলেন, হাসপাতালে দালালদের উৎপাতের কারণে রোগীরা প্রতারিত হচ্ছে। দালাল মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে দালালমুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে। তিনি বলেন, ফিটনেস বিহীন পরিবহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। রাস্তার উপর বাস থামিয়ে রাখলে জরিমানা করা হবে। কোরবানীর ঈদের সময় চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। এজন্য পর্যাপ্ত লবণের ব্যবস্থা থাকবে। জালটাকার বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে। শহরের যানজটমুক্ত করতে বৈধ অটোরিকসা চলাচল বন্ধ করতে হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, মনিহার এলাকায় পুলিশ গেলে বাস রাস্তার উপর থেকে সরিয়ে ফেলছে। পুলিশ চলে আসলে আবার রাখা হচ্ছে। এ বিষয়ে চালকদের সচেতন হতে হবে। এরপর রাস্তার উপর বাস থামিয়ে রাখলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন আইনশৃঙ্খলা ভাল রাখতে প্রত্যেক মামলার আসামি গ্রেফতার করা হচ্ছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, নীলগঞ্জ বাইপাস সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয় না। এতে করে রাস্তায় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুধু এ সড়ক নয় পৌরসভার অনেক বাইপাস সড়ক গুলো চলাচলের অনুপযোগী। এগুলো সংস্কার করা জরুরী।
স্থানীয় সরকার বিভাগগের উপপরিচালক ও পৌর প্রশাসক রফিকুল হাসান বলেন, নীলগঞ্জের বাইপাস সড়ক সংস্কারে ব্যয় হবে ৭ কোটি টাকা। ওই রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মেরামতের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ মাসের মধ্যে পৌরসভার সব রাস্তার গর্ত বন্ধ করার কাজ শুরু করা হবে। ১ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ চারটি মোড়ে টাওয়ার লাইট স্থাপন করা হবে। এ সময় বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।