শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, হাওড়-বাঁওড় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের কাছে ইজারা দিতে হবে। অমৎস্যজীবীদের কাছে বাঁওড়ের ইজারা দেয়া যাবে না। তিনি বলেন, আমরা এই ইজারার বিরুদ্ধে। তিন মন্ত্রণালয় ইজারা ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করছে। আশা করা যায় দ্রুতই এর সমাধান হবে।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হরিহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুল মাঠে প্রান্তিক খামারিদের এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, প্রকৃত মৎস্যজীবী বাদে বাঁওড় ইজরা দেয়া হচ্ছে এটা খুবই অন্যায় বলে আমরা মনে করি। যে এই বাঁওড়াগুলোকে ভূমি মন্ত্রণালয় অমৎস্যজীবীদেরকে দিয়ে দিবে শুধুই কিছু রাজস্বের জন্য। আমি হিসেব করে দেখেছি যে বেশি টাকা এই ইজারা থেকে আসে না। কিন্তু যাদেরকে দেয়া হয় না তারা না খেয়ে মরে। তাদের জীবন-জীবিকা নষ্ট হয়। তো কাজেই আমরা এই ইজারার বিরুদ্ধে।
অমৎস্যজীবীদের কাছে যেন ইজারা না দেয়া হয় এ বিষয়ে তিনি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইজারার বিষয়টি নিয়ে এখন আমরা মন্ত্রণালয় পর্যন্ত কথা বলছি। আইনি বা জলমহালের নীতিগত কোনো কোনো বাঁধা আছে কিনা এই বিষয়ে আমরা প্রথম আলোচনা করেছি। এসবে কিছু সংশোধন আনতে পারি কিনা সেটা আমি দেখবো। এইটুকু কথা আমি আপনাদেরকে দিচ্ছি।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ এখন ফ্যাসিবাদ মুক্ত। গত বছরের এই সময়ও আমরা ভাবতে পারিনি যে প্রাণ খুলে কথা বলতে পারবো, প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ করতে পারবো। কারণ সমাবেশ করলেই পুলিশ দিয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো। তিনি বলেন, দেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হলেও এখনো তাদের দোসররা ষড়যন্ত্র¿ করে যাচ্ছে। তাই সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
ফরিদা আক্তার বলেন, আমাদের দুধ আছে কিন্তু ভান্ডার নেই। এবার আমরা ক্যাটেল হাব তৈরির মাধ্যমে দুধের ভান্ডার গড়ে তুলবো। তিনি বলেন, সরাসরি খামারিদের কাছ থেকে যাতে টাটকা দুধ মানুষ কিনতে পারে সেই ব্যবস্থা করা হবে। গরু আমদানি করা হবে মান উন্নত বাজার বৃদ্ধির জন্য, মাংসের জন্য নয়। তিনি শৈলকুপাসহ জেলার খামারিদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকার একটি সুস্থ ও মানবিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। সমাজে কোনো বৈষম্য থাকবে না এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে।
শৈলকুপার স্থানীয় মৎস্যজীবী ও প্রান্তিক খামারিদের অংশগ্রহণে এ খামারি সমাবেশের আয়োজন করেছেন শৈলকুপা সম্মিলিত খামারি পরিষদ। এতে তরিকুল ইসলাম তুর্কির সভাপতিত্বে খামারী সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান, ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ। বক্তব্য রাখেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের গ্যাব্রিয়েল পিনেদাছ, এলডিডিপির প্রকল্প পরিচালক ড. মো. জসিম উদ্দিন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. আমিনুল হক, তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ফরিদুল ইসলাম, তানজির আলম রবিন, শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস, শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন বাবর ফিরোজ, শৈলকুপা সম্মিলিত খামারি পরিষদের সদস্য সচিব ওসমান আলী প্রমুখ।