স্পন্দন ডেস্ক : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হলেই তিনি নির্বাচন অযোগ্য হবেন। জনপ্রতিনিধি হয়ে থাকলে তিনি আর বহাল থাকতে পারবেন না।
এ ছাড়া সরকারি পদ বা দায়িত্বে থাকার অযোগ্য হবেন।
এই বিধান রেখে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৭৩ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারির উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার চলার মধ্যে বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংশোধিত এ অধ্যাদেশ অনুমোদন পাওয়ার তথ্য দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
অধ্যাদেশটি জারি হলে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের তথ্য তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, “অধ্যাদেশের মাধ্যমে ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট ১৯৭৩ এর নতুন সেকশন ২০ সি যুক্ত করা হয়েছে।”
“সংযোজিত ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইসিটি আইনের ৯১ ধারা অনুযায়ী আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্র দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া বা বহল থাকার অযোগ্য হবেন। একইভাবে তিনি স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার সদস্য, কমিশনার, চেয়ারম্যান, মেয়র বা প্রশাসক হিসাবে নির্বাচিত হওয়া বা বহাল থাকার অযোগ্য হবেন।
“এমনকি প্রজাতন্ত্রের চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া বা অন্য কোনো পাবলিক অফিসে অধিষ্ঠিত হওয়ারও অযোগ্য হবেন।”
গত বছরের ৫ অগাস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। সে দিন দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হাসিনার সরকারের মন্ত্রী-এমপি ও আওয়ামী লীগের নেতাদের কয়েকজন ধরা পড়েনে। অনেকেই বিদেশে বা আত্মগোপনে চলে গেছেন।
অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ কয়েকজন সাবেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা পড়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ বছর ১০ জুলাই ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে পাঁচ অভিযোগে বিচার শুরুর আদেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আসামিদের মধ্যে চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার আবেদন করেছেন। তিন আসামির মধ্যে একমাত্র তিনিই কারাগারে আটক আছেন, বাকি দুজনকে পলাতক দেখিয়ে ৪ অগাস্ট হতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।