Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

গ্রামীণ খেলায় অংশ নিয়ে ফিরে পেলেন শৈশবের স্বাদ

এখন সময়: শনিবার, ১৮ জানুয়ারি , ২০২৫, ০৬:৫৪:১৭ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: চল্লিশ উর্ধ্ব বিভিন্ন প্রতিযোগী। সবার চোখ গামছা দিয়ে বাঁধা। প্রায় ৫০ গজ দূরেই তাদের জন্য রাখা একটি মাটির হাঁড়ি। হাঁড়িটি ভাঙার জন্য হাতে দেয়া হয়েছে একটি বাঁশের লাঠি। বিচারকের বাঁশি শুনেই পর্যায়ক্রমে হাঁড়ির দিকে ছুটছেন চোখবাঁধা প্রতিযোগী।  অন্ধের দৃষ্টিতে হেঁটে চলে প্রতিযোগিরা লাঠি দিয়ে হাঁড়ি ভাঙার চেষ্টা। অনেকেই ব্যর্থ হলেও শেষ পর্যন্ত একজন ভাঙলেন। সাথে সাথে উপস্থিত দর্শকেরা ফেঁটে পড়লেন উচ্ছ্বাসে। সাথে গণতালি। শুধু হাড়িভাঙ্গা নয়, যশোর সদর উপজেলার বলাডাঙ্গা গ্রামে হা ডু ডু, কাবাডি, হাঁস ধরা, মোরগ লড়াই, বালিশ চেয়ার, তৈলাক্ত কলাগাছে উঠা, অংক দৌড়, বস্তার উপরে বসে টানা দৌড়, অন্ধভাবে পথ চলা, মেরুদণ্ডের শক্তি পরীক্ষাসহ প্রায় ২২টি খেলায় মেতে ওঠেন গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা। ছিল যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতাও। 

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে শুক্রবার দিনভর এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে স্থানীয় যুবসমাজ। আনন্দ বিনোদনের গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলায় অংশ নিয়ে অনেকেই যেন ফিরে গেছেন শৈশবে। অতীতের স্মৃতিচারণ করলেন অনেকেই। আর তথ্য প্রযুক্তি আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় এমন আয়োজন দেখতে আশেপাশের গ্রামের শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের সহস্রাধিক দর্শকের সমাগম হয়।

আকবর ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, এ ধরণের খেলাধুলা এখন আর হয় না গ্রামে। আগে এ ধরণের আয়োজন পাড়া পাড়ায় হতো। অনেকদিন পর এ ধরণের খেলাধূলা করতে পেরে ছোটবেলার শৈশবে ফিরে গেলাম।

এ ধরণের খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে গ্রামটির বাড়ি বাড়ি উৎসবে রুপ নিয়েছে। খেলাধুলা দেখতে আত্মীয় স্বজনেরাও এসেছেন বেড়াতে। এমনটি একজন কাকলি বেগম। তিনি জানান,  ‘এ ধরণের আযোজন এখন আর হয় না। শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে এসেছি এ ধরণের খেলাধূলা দেখতে। ছোটবেলার খেলাধুলায় অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে। খেলায় বয়স যেন কোন বাধা নয় সেটি আবারও প্রমাণ মিললো এই আয়োজনে। ছোট বড় বৃদ্ধরা বিভিন্ন খেলায় অংশ নিয়ে নিজ পারদর্শিতায় হয়েছেন প্রথম, দ্বিতীয় তৃতীয়।

দীর্ঘদিন পর হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ এসব খেলাধুলা দেখে মুগ্ধ যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, এসব খেলাধুলা দেখে শৈশবে ফিরে গেলাম। এখন আর এমন প্রতিযোগিতার আয়োজন গ্রামে গ্রামে হয় না। তাই তো গ্রামে পাড়া পাড়ায় মানুষের মধ্যে বন্ধন হৃদতা কমে যাচ্ছে। সামাজিক ভাবে বন্ধন অটুট রাখতে এমন আয়োজন বেশি বেশি করা উচিত।

অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ও যশোর সরকারি মহিলা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলাগুলোকে আগামী প্রজন্মের কাছে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ ধরনের আয়োজন। অন্যদিকে শিশুরা এখন মুঠোফোনের আজব বাক্সে বন্দি। ভুলতে বসেছে গ্রামীণ সব ঐতিহ্য। অনেকেই আবার মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। তরুণ প্রজন্ম কে মাঠমুখি করতে এ আয়োজন বলে তিনি জানান। নতুন প্রজন্মের অনেকেই গ্রামীন খেলার নাম শুনেছে, কখনো দেখা হয়নি তাদের। তাই এমন আয়োজনে তারা ব্যাপক উৎসাহ দেখিয়েছে।

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)