Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

পৃথিবীর সুরক্ষায় ‘জিরো কার্বন’-ভিত্তিক  জীবনধারার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

এখন সময়: শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর , ২০২৪, ০৫:২২:১১ পিএম

 

স্পন্দন ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস আজ পৃথিবীকে জলবায়ু বিপর্যয় থেকে রক্ষা করার জন্য ‘শূন্য বর্জ্য ও শূন্য কার্বন’-এর ওপর ভিত্তি করে একটি নতুন জীবনধারা গড়ে তোলার পরামর্শ দিয়েছেন, যা একটি নতুন পৃথিবী গড়ার লক্ষ্যে তিনটি শূন্য ভিত্তিক তার দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন উপস্থাপন করে।

বুধবার আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে কপ২৯-এর ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তৃতাকালে তিনি বলেছেন, ‘টিকে থাকার জন্য আমাদের আরেকটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। একটি ভিন্ন জীবনধারার ওপর ভিত্তি করে আরেকটি প্রতি-সংস্কৃতি গড়তে হবে। এর ভিত্তি হবে শূন্য বর্জ্য; এ সংস্কৃতি নৈমিত্তিক ভোগ সীমিত করবে, কোনো বর্জ্য অবশিষ্ট রাখবে না।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এই জীবনযাত্রা হবে শূন্য কার্বনের ওপর ভিত্তি করে, যেখানে কোনো জীবাশ্ম জ্বালানি থাকবে না, থাকবে শুধু নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এতে এমন একটি অর্থনীতি গড়ে উঠবে যার ভিত্তি হবে মূলত সামাজিক ব্যবসার মতো ব্যক্তিগত পর্যায়ে শূন্য মুনাফা।

সামাজিক ব্যবসাকে সামাজিক ও পরিবেশগত সমস্যা সমাধানের একটি অলাভজনক ব্যবসা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করে তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসার একটি বিশাল অংশ পরিবেশ ও মানবজাতির সুরক্ষার ওপর মনোনিবেশ করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের জীবন কেবল সুরক্ষিতই হবে না, গুণগতভাবে উন্নতও হবে। এটি যুবকদের জন্য উদ্যোক্তা হওয়ার পথ সহজতর করবে। উদ্যোক্তা হওয়ার নতুন শিক্ষার মাধ্যমে তরুণরা প্রস্তুত হবে। চাকরিপ্রার্থী তৈরির শিক্ষার স্থলে উদ্যোক্তা-কেন্দ্রিক শিক্ষার অভিষেক হবে।’

পরিবেশের সুরক্ষায় একটি নতুন জীবনধারার প্রয়োজন উল্লেখ করে ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী ড. ইউনূস বলেন, নতুন জীবনধারা চাপিয়ে দেয়া হবে না, এটি হবে পছন্দ বেছে নেয়া।

তিনি বলেন, তরুণরা সেই জীবনধারাকে পছন্দ হিসেবে বেছে নেবে। প্রতিটি যুবক তিন শূন্য ভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে বেড়ে উঠবে। এগুলো হচ্ছে- শূন্য নেট কার্বন নিঃসরণ, শুধু সামাজিক ব্যবসা গড়ে তোলার মাধ্যমে শূন্য সম্পদ পুঞ্জীভবন ও নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে শূন্য বেকারত্ব।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষ তিন শূন্য ভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে বেড়ে উঠবেন এবং সারাজীবন তিন শূন্য ভিত্তিক ব্যক্তি হিসেবে থাকবেন। এটি নতুন সভ্যতা রচনা করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি সম্ভব। আর সেজন্য আমাদের যা করতে হবে তা হলো- আমাদের এ গ্রহ এবং এতে বসবাসরত সকলের নিরাপত্তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি নতুন জীবনধারা গ্রহণ করতে হবে। বাদবাকি কাজ আজকের তরুণ প্রজন্মই করবে। তারা তাদের গ্রহকে ভালোবাসে।’

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা এই স্বপ্ন দেখায় আমার সাথে যোগ দেবেন। আমরা যদি একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি তবে তা সম্ভব হবে।’

বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জলবায়ু সংকট তীব্রতর হচ্ছে এবং সে কারণে মানব সভ্যতা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। মানুষ আত্ম-বিধ্বংসী মূল্যবোধের প্রচার-প্রচার করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক, আর্থিক ও যুব শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আত্ম-রক্ষাত্মক ও আত্ম-শক্তিবর্ধক একটি নতুন সভ্যতার গোড়া পত্তন করতে হবে।’

এই গ্রহের মানব বাসিন্দারা এই গ্রহের ধ্বংসের কারণ’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, মানুষ ইচ্ছাকৃতভাবে এটি করছে এবং তারা এমন একটি জীবনধারা বেছে নিয়েছে যা পরিবেশের প্রতিকূলে কাজ করে। তারা এটিকে একটি অর্থনৈতিক কাঠামো দিয়ে ন্যায্যতা দেয়ার প্রয়াস পাচ্ছে। আর এই অর্থনৈতিক কাঠামো সৌরজগতের মতই প্রাকৃতিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, ‘এই অর্থনৈতিক কাঠামোটি সীমাহীন ভোগের ওপর ভিত্তি করে চলছে। যত বেশি ভোগ, তত বেশি প্রবৃদ্ধি। আর যত বেশি প্রবৃদ্ধি, তত বেশি অর্থ। মুনাফা সর্বাধিকীকরণকে সিস্টেমের সবকিছুকে আমাদের ইচ্ছামাফিক কাজ করানোর কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)