আলমগীর কবির, কোটচাঁদপুর (ঝিনাইদহ) : কোটচাঁদপুরে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে রাস্তা তৈরি ও শোভাবর্ধনের জন্য ফুল ও ফলজ বৃক্ষরোপণে পৃথক ৩টি প্রকল্পের ১৯ লাখ টাকার কাজে নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তা নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ৬ মাস শেষ হতে না হতে প্রায় ৭শ’ ফুট রাস্তা হুমকির মুখে পড়েছে। ইতোমধ্যে এ অংশের রাস্তার কমপক্ষে ৪ স্থানে ফাটল ধরে নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে।
স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে টিআর প্রকল্পের আওতায় এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়। প্রকল্প ৩ হলো শহরের আলামপুর ব্রীজঘাট এলাকার ব্রীজের পূর্বপাশে ৭শ’ ফুট ও পশ্চিম পাশে ৬শ’ ফুট এবং ওই রাস্তার পাশে শোভা বর্ধনের জন্য ফুল ও ফলজ বৃক্ষ রোপণ। এখানে উভয় পাশের রাস্তা নির্মাণের জন্য ১৪ লাখ টাকা ও চারা রোপণের জন্য ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দেখা যায় কোন রকম প্রটেকশন বা গাইডওয়াল ছাড়াই দু’পাশের রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই পানির চাপে পূর্বপাশের ৭’শ ফুট রাস্তার অংশে ৪ স্থানে ফাটল ধরে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। যে কারণে এ রাস্তা স্থানীয় জনগণের কোন কাজে আসছে না। যথাযথ পরিকল্পনা ও টেকসইভাবে এ প্রকল্পের কাজ না করায় সরকারি টাকার অপচয় করা হয়েছে। নামমাত্র কাজ করে বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করে ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলেও জোর অভিযোগ রয়েছে। অভিজ্ঞদের মতে এ ৩ প্রকল্পে সর্বসাকুল্যে ৬-৭ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। ব্রীজের পূর্বপাশের রাস্তার কাজে পিআইসি ছিলেন সদ্য প্রয়াত শহরের সলেমানপুর শেখ পাড়ার আমিরুল ইসলাম। পশ্চিম অংশের ৬শ’ ফুটের পিআইসি ছিলেন ব্রীজঘাট হালদার পাড়ার শীতল মন্ডল। ফলজ বৃক্ষ ও ফুল গাছ লাগানো প্রকল্পে সভাপতি ছিলেন সলেমানপুর পালপাড়ার কাজী শিপলু সামাদ। প্রকল্পের বিষয়ে কাজী শিপলু সামাদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কাজ শুরু হওয়ার আগে পিআইও অফিসের রবিউল প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে নেন। এ সময় তিনি বলেন, এ প্রকল্পের বরাদ্দ আসলে আপনার মাধ্যমে কাজ করানো হবে। কিন্তু শিপলু সামাদের সাথে কোনোরকম যোগাযোগ ও না জানিয়ে তারা প্রকল্পের কাজ শেষ করেন। পশ্চিম পাশের রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি শীতল মন্ডল বলেন, আমার প্রকল্পে ৭ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। এ কাজ প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ও ইউএনও স্যার দেখভাল করেছেন। তিনি আরো বলেন, প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে তারা আমার সাথে তেমন কোনো যোগাযোগ করেননি। সভাপতি হিসেবে কিছু পয়সা দেয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাও দেননি। এ ব্যাপারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের সাথে বারবার মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উছেন মে বলেন, বিষয়টি সত্যি হলে অবশ্যই দুঃখজনক। তবে উদ্দেশ্যমূলক হলে সেটি হবে হয়রানি। তিনি প্রকল্পের সভাপতিদের সাথে কথা বলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবেন বলেও জানান।