নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনাপোলে বহুলালোচিত রেশমা হিজড়া হত্যা মামলায় ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় দুই জনের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে চর্জশিটে। তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শংকর কুমার বিশ^াস।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো, বেনাপোলের কাগজপুকুর গ্রামের মৃত নুর ইলামের ছেলে ফারুক হোসেন, সমির হোসেন সামিদ ওরফে আব্দুস ছানির ছেলে আল মামুন, গহর শেখের ছেলে শরিফ শেখ, শাহাবুদ্দিন বিশ^াস লিটনের ছেলে সাগর উদ্দিন, মৃত বাহার আলী সরদারের ছেলে হোসাইন, মৃত হুমায়ুন কবিরের ছেলে জাফর হোসেন, মৃত মসলেম মোড়লের ছেলে টিটু মোড়ল ও নাসির উদ্দিনের ছেলে আতউল্লাহ।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, চলতি বছরের ১১ মার্চ বিকেলে ডিবি পুলিশ খবর পায়; রেশমা হিজড়াকে হত্যা করে লাশ গুম করেছে তার বন্ধু ফারুক হোসেন ও তার সহযোগীরা। রেশমা হিজড়া নিখোঁজের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ফারুককে আটক করে ডিবি পুলিশ। এ সময় তার স্বীকারোক্তিতে কাগজপুকুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানের উত্তর কোণায় পুঁতে রাখা রেশমার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অপরিচিত ৩/৪ জনকে আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, রেশমা ও তার স্বামী পরিচয়দানকারী জাফর একসাথে সীমান্ত এলাকায় মাদকের ব্যবসা করতো। নিজেদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হলে কথিত স্বামী জাফরকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিতো রেশমা। আবার তাকে ছাড়িয়েও আনতো। বিষয়টি জানতে পেরে রেশমার ওপর ক্ষিপ্ত হন জাফর।
এরই মধ্যে বেনাপোল এলাকার সোহাগের বাড়ি ভাড়া নেয় রেশমা। বিষয়টি জানতে পেরে সেখানে গিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে জাফর। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করে রেশমা। ওই মামলায় সাক্ষী করা হয় ফারুককে। কিন্তু ফারুক মামলায় সাক্ষ্য দিতে রাজী না হওয়ায় তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল রেশমা। এ ছাড়া এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করতো রেশমা।
এরই জের ধরে ঘটনার দিন রাতে কৌশলে রেশমাকে ডেকে এনে মারপিট ও শ্বাসরোধ করে বস্তায় ভরে কবরস্থানে নিয়ে যায় আসামিরা। কবরস্থানের পাশে নিয়ে রেশমার মৃত্যু নিশ্চিত করতে জবাই করা হয়। এরপর রেশমার লাশ বস্তাবন্দি করে কবরস্থানে পুঁতে রাখা হয়।
এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় ওই ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ না পাওয়ায় মফিজুর গাজী মফি ও রুবেলের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে চার্জশিট। অভিযুক্ত ৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার ও বাকি তিন জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।