Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒আমদানিকারকদের মাশুল দিতে হবে না

বেনাপোলে চালু হচ্ছে কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল, কমবে যানজট বাড়বে রাজস্ব

এখন সময়: সোমবার, ১৪ অক্টোবর , ২০২৪, ০৯:৪৩:২৮ পিএম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বেনাপোলের কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি আগামী মাসেই (অক্টোবর) চালু হচ্ছে। উদ্বোধন হলে এই টার্মিনালে একসঙ্গে রাখা যাবে প্রায় দেড় হাজার পণ্যবাহী ট্রাক। এর ফলে বন্দরে ট্রাকের মালামাল দ্রুত লোড-আনলোড সম্ভব হবে। এতে একদিকে যেমন যানজট কমবে, তেমনি বেশি রাজস্ব আয় হবে সরকারের।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সড়ক ও রেল যোগাযোগ সহজ হওয়ায় যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য বেড়েছে বহুগুণ। তাই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পণ্য পরিবহনের ভোগান্তিও। আর এই সংকট থেকে উত্তরণে এবং স্থলবন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেনাপোলে ‘কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক রাশেদুল সজিব নাজির বলেন, ‘ভূমি অধিগ্রহণপূর্বক এ প্রকল্পের নির্মাণকাজ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়। প্রায় ২৪ একর জমির ওপরে ৩২৯ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় এই কার্গো ভেহিকেল টার্মিনাল নির্মাণে। এর মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ ১০৯ এবং নির্মাণকাজ বাবদ ২২০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়।’

বন্দর সূত্র জানায়, কার্গো টার্মিনালে ১২০০ থেকে ১৫০০ ট্রাক ধারণক্ষমতা রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় পার্কিং ইয়ার্ড, কার্গো ভবন, বন্দর সেবা ভবন, ইউটিলিটি ভবন, ফায়ার স্টেশন, আধুনিক টয়লেট কমপ্লেক্স, ওয়েব্রিজ স্কেলসহ অন্যান্য অবকাঠামো নির্মিত হয়েছে। টার্মিনালটি আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন।  বিদ্যুৎ-সংযোগ পেলেই  টার্মিনালটি চালু করা সম্ভব। এটি চালু হলে বন্দরের দীর্ঘদিনের যানজট হ্রাস পাবে এবং বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

টার্মিনালের বিষয়ে কথা হয় বেনাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং (সিঅ্যান্ডএফ) এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান বলেন, ‘টার্মিনাল উদ্বোধন হলে দীর্ঘদিনের যানজট, পণ্যজট কমে যাবে। যেহেতু এখানে এক থেকে দেড় হাজার ট্রাক একসঙ্গে থাকতে পারবে, সে কারণে দ্রুত পণ্য আনলোড সম্ভব হবে। সেক্ষেত্রে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভারতীয় ট্রাক পণ্য নামিয়ে চলে যাবে। তার ফলে আমদানিকারকদের অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে না। কেননা, পণ্যছাড় করতে দেরি হলে আমদানিকারকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হতো। সেটি আর লাগবে না। আর যত বেশি পণ্যবাহী ট্রাক আনলোড হবে, সরকারও তত বেশি রাজস্ব পাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘টার্মিনাল নির্মাণের কাজ ভালো হয়েছে। এখানে যেসব অবকাঠামো বানানো হয়েছে সেগুলো যুগোপযোগী ও মানসম্পন্ন বলে জানতে পেরেছি। এই টার্মিনাল উদ্বোধন হলে নিশ্চয়ই পণ্যজট কমবে, ভোগান্তি হ্রাস পাবে।’

বন্দর সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন ভারত থেকে প্রায় ৭ থেকে ৮ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমদানি হয়। ফলে জায়গা সংকটে অনেক পণ্য রাখা হয় খোলা আকাশের নিচে। এ ছাড়া ভারতীয় ট্রাকগুলো পণ্য নিয়ে দিনের পর দিন বসে থাকে বন্দরে। জায়গা না থাকায় আনলোড করতে সমস্যা হয়। টার্মিনাল চালু হলে এ সমস্যা অনেকটা কেটে যাবে বলে মনে করেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরে আমদানি করা হয়েছিল ২৬ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমদানি হয়েছিল ১৮ লাখ ৯৫ হাজার ৫৪৩ মেট্রিক টন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে পণ্য আমদানি করা হয় ২০ লাখ ৩ হাজার ৬৭০ মেট্রিক টন। আর গেল ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আমদানি হয়েছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৪৪১ মেট্রিক টন। 

যশোরের আমদানিকারক এজাজ উদ্দিন টিপু বলেন, বেনাপোল বন্দরে পণ্যজটের কবলে পড়ে আমাদের জরিমানা গুনতে হতো। কিন্তু টার্মিনালটি চালু হলে সব পর্যায়ের আমদানিকারকদের জন্য সুবিধা হবে।

বন্দরের প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, ‘কার্গো ভেহিকেল টার্মিনালটি নির্মাণে সর্বোচ্চ গুণগতমান নিশ্চিত করা হয়েছে বুয়েট, কুয়েট এবং আমাদের নিজস্ব ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে।’

আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিদ্যুৎ-সংযোগের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আর পরের মাস অর্থাৎ অক্টোবরেই টার্মিনালটি উদ্বোধন হবে। টার্মিনাল চালু হলে বন্দরের সক্ষমতা ও রাজস্ব আয় দুটোই বাড়বে। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য আরও সহজ হবে।

এব্যাপারে যশোর চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানান, ‘টার্মিনাল উদ্বোধন হলে দীর্ঘদিনের যানজট, পণ্যজট কমে যাবে। যার সুবিধাভোগি হবেন আমদানিকরাকরা। তবে পেট্রাপোলে যদি জট নিরসন না হয় তাহলে এই সুবিধা কোন কাজে আসবেনা।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)