নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে অহিদুজ্জামান অনিক নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন ও ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন যশোরের একটি আদালত। বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম কবির এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল। অনিক শহরতলীর চাঁচড়া মধ্যপাড়ার কেসমত আলীর ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, যশোর শহরের স্বনামধন্য একটি বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতো ওই কিশোরী। ২০২৩ সালের ১৬ মে ওই কিশোরী বিদ্যালয় থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। পরদিন দুপুরে কিশোরীর পরিবার জানতে পারে চাঁচড়া মধ্যপাড়ার আকাশের বাড়িতে আটক আছে। পুলিশ নিয়ে তাকে উদ্ধারে যাওয়ার সময় খবর মেলে ওই কিশোরী সেখান থেকে পলিয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে। কিশোরী তার স্বজনদের জানায়, আসামি অহিদুজ্জামান অনিক ও তার সহযোগীরা তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর একটি বাড়িতে নিয়ে হত্যার হুমকি দিয়ে অপহরণকারীরা দুইটি স্ট্যাম্পে স¦াক্ষর করিয়ে নেয়। এরপর অনিকের সাথে তার বিয়ে হয়ে গেছে বলে জানায়।
মামলায় সূত্রে আরো জানা গেছে, এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা অপহরণের অভিযোগে ২৪ মে ৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। আদালতের আদেশে ৩০ মে অভিযোগটি কোতয়ালি থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এ মামলার তদন্ত শেষে অপরণ ও ধর্ষণের সাথে জড়িত থাকায় অহিদ্জ্জুামান অনিক ও সহযোগিতা করায় কাকলী ওরফে শম্পা আক্তার চাদনীকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ৩১ আগস্ট আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা হেলাল উজ্জামান। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ না না পাওয়ায় অপর তিন আসামি আশরাফুজ্জামান আকাশ, কেসমত আলী ও পারভীন আক্তারের অব্যাহতির আবেদন করা হয়।
দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি অহিদুজ্জামান অনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে অপহরণের দায়ে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদেণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি কাকলীকে খালাস দেয়া হয়েছে। সাজাপ্রাপ্ত অহিদুজ্জামান অনিক কারাগারে আটক।