স্থানীয়দের দাবি এখনো কোথাও কোথাও আগুন জ্বলছে

হেলিকপ্টার থেকে পানি ছিটিয়ে সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে

এখন সময়: রবিবার, ১৯ মে , ২০২৪, ০২:৩৯:২৯ এম

বাগেরহাট, শরণখোলা ও মোংলা প্রতিনিধি: পূর্ব-সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি এলাকায় ১০ একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।  রোববার ‘ফায়ার লাইন’ কেটে ও হেলিকপ্টার থেকে পানি বর্ষণ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে দাবি করেছে বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্টরা। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি  ইউনিটের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার, নৌ-বাহিনী, বনরক্ষী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়। তবে বন বিভাগ আগুন নিয়ন্ত্রণের দাবি করলেও জেলে, বাওয়ালী ও স্থানীয়রা বলছেন, সুন্দরবনের কোথাও কোথাও এখনো আগুন জ্বলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রোববার সকালে নৌ-বাহিনীর মোংলা ঘাঁটির লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরফাতুল আরেফিনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি ফায়ার ফাইটিং টিম আগুন নেভানোর কাজে নামে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলের প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে ভোলা নদী থেকে পানি তুলতে পাইপ সংযোগ দেয়। বিকেল ৪টা পর্যন্ত চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।

স্থানীয় নিশান বাড়িয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনের লতিফের ছিলা এলাকার অনেক জায়গা জুড়ে আগুন লাগে। বনের মাটিতে পড়ে থাকা বিভিন্ন গাছের পাতার স্তুপের মধ্যে থেকে এখনো ধোঁয়া উড়ছে।

আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়া ‘সিপিজি’ সদস্য মণিময় মাল বলেন, আগুন যাতে নতুন করে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য শনি ও রোববার বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সঙ্গে তারা শুকনো গাছ অপসারণ করেন। বিভিন্ন স্থানে ছোট ড্রেন কেটে রাখা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের বাগেরহাটের উপ-পরিচালক মামুন আহমেদ জানান, সুন্দরবনে আগুন নেভাতে রোববার সকালেই তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে  পৌঁছায়। এরমধ্যে মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলার তিনটি ইউনিট কাজ করেছে। বাকি দুটি ইউনিট ‘স্ট্যান্ডবাই’ রাখা হয়। বর্তমানে ঘটনাস্থলে আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে না। তবে কোথাও কোথাও ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করার সম্ভাবনা নেই।

সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, নানা প্রতিকূলতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে দেরি হয়। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ বাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। হেলিকপ্টার থেকে পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। পুনরায় যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখছেন ফায়ার ফাইটাররা।

শনিবার (৪ মে)  দুপুর সাড়ে ৩টায় আগুন লাগার ঘটনা প্রথম উদঘাটিত হয়। বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।