ঈদ বাজার

প্রিন্ট ও মাঝারী দামের শাড়ির বিক্রি বেশি

এখন সময়: শনিবার, ২০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:৪১:৩৯ পিএম

মারুফ কবীর : নতুন প্রজন্মের আধুনিক পোশাকে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া থাকলেও ঈদে নারীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে  শাড়ি। এছাড়া নানা উৎসব পার্বনসহ সকল বাঙালি উৎসবে শাড়ি না হলেই নয়। বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় যশোরের ঈদ বাজারের শাড়ির দোকানে তরুণীসহ সব বয়সী নারীর কেনার ব্যস্ততা। তরুণী থেকে শুরু করে মধ্য বয়সীদের আনাগোনায় জমজমাট যশোরের বাজার ও শপিংমলগুলোর শাড়ির দোকান।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবছর প্রিন্টের শাড়ির চাহিদা বেশি। তাছাড়া মাঝারী দামের শাড়ি বেশি কিনছেন ক্রেতারা। বেশি দামের শাড়ির বিক্রি একেবারেই নেই বলে জানার দোকানিরা। সুতা, রঙ, কাপড়সহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধির কারণে এবার শাড়ির দাম গেল বছরের চেয়ে বেশি। ব্যবসায়ীরা স্বীকার করছেন, গত বছরের চেয়ে এবার ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বাড়তি দামে শাড়ি কিনতে হচ্ছে পাইকার মার্কেট থেকে।

যশোর শাড়ি কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তন্ময় সাহা বলেন, সুতার দাম বাড়তি হওয়ায় এবছর শাড়ির দাম একটু বেশি। তার পরেও ক্রেতারা  ২ টার জায়গায় একটি শাড়ি কিনছেন। যশোরে আলাদা করে বেশ কয়েকটি শাড়ির দোকান আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য  মনসা বস্ত্রালয়, পাঁড় আঁচল, আটপৌরে, ইত্যাদি, বিদিশা ,আল আমিন, বন্ধন, তাঁত কুটির, রং ফ্যশন ইত্যাদি। এছাড়া শহরের শপিংমলগুলোতে রয়েছে শাড়ির দোকান।

যশোরের আদি শাড়ির দোকান মনসা বস্ত্রালয়ের পোপাইটর চিন্ময় সাহা বলেন, বিশেষ করে গ্রামের কাস্টমারের উপস্থিতি এবছর কম। দ্রব্যমূল্যের দাম বেশি, তারপর ধান ওঠেনি কৃষকের ঘরে। তারপর পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় শহরে এসে শাড়ি কিনতে আগ্রহ হারাচ্ছেন ক্রেতারা।

পাঁড় আঁচল শাড়ির দোকানের প্রোপাইটর মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তা বলেন, গরমের কারনে  কাস্টমারের কষ্ট হলেরও উৎসবের অনন্দে শাড়ি কিনছেন নারীরা। প্রিন্টের শাড়ির চাহিদা বেশি। এক থেকে ২  হাজার টাকার মধ্যে বাজেটের শাড়ি কিনছেন কাস্টমাররা।

তিনি আরও বলেন ৫ শ’ টাকার মধ্যের শাড়ির দাম এবছর বেড়েছে এক-দেড়শ টাকা। মাঝারী দামের শাড়িতে বেড়েছে ২ থেকে ৪ শ’ টাকা।

ছুটিপুর কায়েমকোলা থেকে হাসিনা নামে এক নারী মঙ্গলবার এসেছিলেন তিনিসহ পরিবারের অন্যান্যে নারীদের জন্য শাড়ি কিনতে। তিনি বলেন, আগে ঈদে এক একজন একের অধিক শাড়ি কিনতাম। তবে এবছর শাড়ির দাম বেশি এবং মানুষের হাতে অর্থকড়ি কম। এজন্য ঈদ উৎসবে সাধ্যের মধ্যে শাড়ি কিনেছি।

আটপৌরের প্রোপাইটর অচিন্ত কুমার ধর বলেন, দেশি শাড়ির মধ্যে টাঙ্গাইলের শাড়ির বিক্রি বেশি। যশোরের শাড়ির দোকানগুলোতে ঈদ উপলক্ষে আরও পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের ক্যাটালকের শাড়ি , ড্রিম গার্ল সিল্ক, এমব্রোডারি, ব্লক, হাতের কাজ, প্রিন্ট, সিঁড়ি কাতান, কোহিনূর সিল্ক,  রাজশাহীর মেগা সিল্ক ও কারচুপির কারুকাজ করা শাড়ি। প্রিন্টের শাড়ি ৪ থেকে ৬ শ’ টাকা, টাঙ্গাইল তাঁত  ৫শ’ থেকে ৩ হাজার ২ শ’ , টাঙ্গাইল সুতি ৫শ’ থেকে ২হাজার ৫শ’, টাঙ্গাইল সিল্ক প্রিন্ট এক হাজার ২শ’ থেকে আড়াই হাজার,  হ্যান্ড পেইন্ট শাড়ি (সুতি)  ১৫ শ’ থেকে ৩ হাজার, (মসলিন) ৩ থেকে ৬ হাজার, বাটিক (দেশি সুতি) ৮শ ’ থেকে ১৫শ’ (ইন্ডিয়ান)  ১৩শ’ থেকে ৩ হাজার,সিকোগাদোয়াল ১৭শ’ থেকে সাড়ে ৩ হাজার, অরগাঞ্জা ৩ থেকে ৯ হাজার , লহেঙ্গা স্টাইলের শাড়ি ৪ থেকে ২০ হাজারে মিলবে।  ক্যাটালকের শাড়ি ১৫শ’ থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা , অনান্য সুতির শাড়ি ৬শ’ থেকে  আড়াই হাজার , গ্যাস সুতার শাড়ি ১৫শ’ থেকে ৪ হাজার,  তাঁতের শাড়ি ৮শ’ থেকে  ১৫শ’ টাকা, কারচুপি ৯শ’ থেকে ৩ হাজার , বুটিক ৮শ’ থেকে ৭ হাজার , টাঙ্গাইল সুতি জামদানি ২ হাজার থেকে ৫ হাজার , টাঙ্গাইল কাতান ৩ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকা, মসলিন জামদানি আড়াই হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা, রেডি শাড়ি ২ থেকে ১০ হাজার ও বেনারসি সিল্ক ২৫শ’ থেকে ৪ হাজার, রাজশাহী সিল্ক দেড় হাজার  থেকে ৬ হাজার, পিয়র সিল্ক ২হাজার ২শ’ থেকে ১০ হাজার,  হাফ সিল্ক ১ থেকে ৫ হাজার, মিরপুরীর কাতান আড়াই হাজার থেকে ৩০ হাজার, ঢাকাই জামদানি ৪ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা।