Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল

কতিপয় চিকিৎসক প্রশ্রয় দিচ্ছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের!

এখন সময়: শনিবার, ১২ জুলাই , ২০২৫, ০৮:৩৩:১৬ এম

 

 

বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের (রিপ্রেজেনটেটিভ) প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও মানা হচ্ছেনা বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর তত্ত্বাবধায়ক নিয়ম মানার নির্দেশনা আরও জোরালো করলেও তাদের অবৈধ প্রবেশ বন্ধ নেই। বেধে দেয়া সময়ের বাইরেও তারা গোটা হাসপাতাল দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলার জন্য রীতিমতো হামলে পড়ছেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। আবার চিকিৎসকের কক্ষে গিয়ে জটলা করছেন। অভিযোগ উঠেছে, নানা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হাসপাতালের কতিপয় চিকিৎসকের প্রশ্রয়ে তারা (ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা) হাসপাতালে প্রবেশে কোনো নিয়ম মানছেন না।

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকদের সাথে সাক্ষাতের জন্য সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ রয়েছে সেটা হলো  প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার দুপর  ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত তারা চিকিৎসকের সাথে ভিজিট করতে পারবেন। বাকি দিনগুলোতে তারা হাসপাতাল চত্বরে প্রবেশ পারবে না। কিন্তু বাস্তবে এই নিয়মের বর্তমানে কোনো বালাই নেই। প্রতিদিন সকাল থেকেই তরা হাসপাতালে ভিড় করতে থাকে। তাদের বেপরোয়া কারণে রোগী ও স্বজনেরা বিড়ম্বনায় পড়ছে। কেননা রোগীর ব্যবস্থাপত্র দেয়ার সময় বা ফাঁকে ফাঁকে ওষুধ কোস্পানির প্রতিনিধিরা চিকিৎসকের সাথে লেনদেনে ব্যস্ত থাকে।

সূত্র জানায়, ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের শ্রেনীভেদে নানা উপহার উপঢৌকন মাসিক/বার্ষিক চুক্তিতে রফাদফা রয়েছে। নগদ টাকা, দামি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, এসি, বিভিন্ন সেমিনার খরচ, অনুষ্ঠানের খরচ, পিকনিক, দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের টিকিট, বিদেশ ভ্রমণের ফ্রি টিকিট দেয়া হয়  চিকিৎসকদের। এছাড়াও স্ত্রীর জন্য শাড়ি, তেল, সাবান, শ্যাম্পুসহ নানা প্রসাধনী সামগ্রী উপহার দেয়। ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে হাসপাতালে আসা রোগী স্বজনরা দুর্ভোগের মধ্যে পড়ে। তাদের দৌরাত্ম কমাতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অনেক আগেই নিয়ম করে দেন প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার দুপুর ১ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা চিকিৎসকদের সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পাবেন। একই দিন সকাল ৯ টা থেকে সাড়ে টা মধ্যে তারা চিকিৎসকের ভিজিটিং কার্ড দিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু সাথে কোন ব্যাগ নিতে পারবেন না। এছাড়া জরুরি বিভাগ ও করোনারি কেয়ার ইউনিটে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে ১০ টা,বিকেল ৪ টা থেকে ৫টা ও সাড়ে ৮ টা থেকে সাড়ে ৯ টা পর্যন্ত ভিজিটের সময় পাবেন। হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান করে রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন তখনকার তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবুল কালাম আজাদ লিটু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কড়াকড়ি আরোপের পর কিছু দিন নিয়ম অনুযায়ী হাসপতালে প্রবেশ করতেন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা। তারপর আবার যা তাই। বর্তমানে তাদের দৌরাত্ম অনেক বেড়েছে। শুক্রবার বাদে সপ্তাহের ৬ দিন হাসপাতালের আঙ্গিনায় ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা অবস্থান করেন সকাল ৮ টার আগেই। সুযোগ বুঝে হাসপাতালের বহিঃর্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগে প্রবেশ করে। আবার অনেকে  প্রকাশ্যে চিকিৎসকের কক্ষে গিয়ে জটলা তৈরি করছে। এছাড়া চিকিৎসকের কক্ষের সামনে ও বিভিন্ন কোনে অবস্থান নিয়ে রোগীর ব্যবস্থাপত্রে ছোঁ মেরে কেড়ে নেয়। তারা দেখেন চিকিৎসক তাদের কোম্পানির ওষুধ লিখেছেন কিনা। তারা আবার ব্যবস্থাপত্রের ছবিও তোলেন। তাদের কর্মকাণ্ডে সব চেয়ে বেশি বিব্রত নারী রোগীরা।

ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের প্রশ্রয় দেন কতিপয় চিকিৎসক। তারা নিয়ম না মেনে যখন-তখন চিকিৎসকের কক্ষে যাওয়া আসা করেন। চিকিৎসকের সামনেই ব্যবস্থাপত্র নিয়ে দেখেন কোন কোম্পানির ওষুধ লেখা হয়েছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওষুধ কোম্পানির কয়েকজন প্রতিনিধি জানান, চাকরি রক্ষার্থে কোম্পানির বেঁধে দেয়া নির্দিষ্ট টাকার ওষুধ বিক্রির টার্গেট পূূরণে মার্কেটিং প্রমোশনের নামে তারা সময়-অসময়ে হাসপাতালে প্রবেশ করেন।  নিজ নিজ কোম্পানির ওষুধ লিখতে চিকিৎসকদের নানাভাবে প্রলোভিত করতে হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওষুধ কোম্পানির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে চিকিৎসকেরা চড়ামূল্যের এন্টিবায়োটিকসহ দামি ওষুধ লিখছে  রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রোগীর লোকজন।

হাসপাতালের বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান জানান, ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের অবাধ বিচরণ ঠেকাতে প্রতিনিয়ত হাসপাতাল রাউন্ড দেয়া হয়। এছাড়া নিয়ম মেনে প্রবেশ করার জন্য জোরালোভাবে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তারা হয়তো কর্তৃপক্ষের চোখ আড়াল করে হাসপাতালে থাকছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)