সান্ত্বনা দিতে গিয়ে অশান্ত খাজরা : গুলিতে আহত ২০, আটক ২৫

এখন সময়: শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল , ২০২৪, ০২:০৮:৪৫ পিএম

বিএম আলাউদ্দীন, আশাশুনি : আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নে নির্বাচনোত্তর সহিংসতা ও গুলিতে শিশু, মুক্তিযোদ্ধাসহ ২০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকালে ইউনিয়নের গদাইপুর গ্রামে পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ অহিদুল ইসলাম মোল্যার বাড়ির সামনে এঘটনা ঘটে। পুলিশ, বিজিবি, ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। গুলিবিদ্ধ ও আহতদের আশাশুনি ও সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  
প্রত্যক্ষদর্শী রিয়াজুল ইসলাম, জাহিদ হাসান, জুলফিকর আলিসহ অনেকেই জানান, তুয়ারডাঙ্গা ওয়ার্ডে মেম্বার প্রার্থী ইব্রাহীম খলিল টুকু ও আনারুল সমান ভোট পান। মনোকষ্টে থাকা টুকুকে শান্তনা দিতে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডালিম সকালে বাড়ি থেকে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে পায়ে হেটে টুকুর বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পরাজিত বিদ্রোহী প্রার্থী আলহাজ অহিদুল ইসলাম মোল্যার বাড়ির সামনে পৌঁছলে তার বাড়ির ছাদ থেকে তাদের উপর ইটের খোয়া নিক্ষেপ করা হয়। এতে সিরাজুল ইসলাম আহত হন। এসময় ডালিমের পক্ষের কেউ না কেউ রাস্তার পাশের খোয়া নিয়ে পাল্টা জবাব দিলে পরবর্তীতে ছাদ থেকে দিদারুল ইসলাম রাব্বাী, রাসেল, মোস্তফা, আক্কারুজ্জামানসহ খুলনা থেকে হায়ার করে আনা কয়েকজন তাদের উপর আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি ও ইটপাটকেল ছুঁড়লে ডালিম চেয়ারম্যানের পক্ষের সাজু মোল্যার ছেলে শিশু সাজিদ (১২) এর পায়ে গুলি লাগে। এছাড়া তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের ওয়াদুদ সরদার (৫০) এর চোখে, আমের আলীর ছেলে টুকু সরদার (৪৫) এর নাকে, নুর বখত সরদারের ডানপায়ে, গদাইপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রাসেল (১৮) এর মাথায়, নফিল সরদারের ছেলে আসাদুল (৩৫) এর মাথার ডানপাশে, জামাই হাফিজুল (৪০) এর বাঁ চোখে, বাবর আলীর ছেলে খোকন সানার হাতে, আবু সুফিয়ানের ছেলে নাইম সানা (২২) এর পায়ে ও ইমাম এর শরীরে গুলি লাগে। এছাড়া সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রব সানা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আমজাদ হোসেন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এঘটনায় চেয়ারম্যান ডালিম সামান্য আহতসহ কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনার পরপরই আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন এবং পরিস্থিতি আরও গুরুতর না হতে পারে সেজন্য পুলিশ ৪টি ফাঁকা গুলি করেন বলে জানাগেছে। পরবর্তীতে অতিঃ পুলিশ সুপার সজিব খান, এএসপি (সার্কেল) জামিল চৌধুরী, ডিপি ওসি ইয়াছিন আলম চৌধুরী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন সুলতানা এবং বহু পুলিশ, ডিবি পুলিশ, বিজিবি সদস্য এলাকা ঘিরে ফেলেন। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ ডালিম জানান, সম্পুর্ন বিনা উস্কানিতে অহিদুল তার সমর্থকদের নিয়ে আমাকে হত্যা করতে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গুলি ছোড়ে। এতে কমপক্ষে ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে যার মধ্যে রাসেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে তিনি জানান। পরে অহিদুল ইসলাম এর বাড়ি থেকে তাকেসহ তার ২৫ সহযোগিকে থানা হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। 
আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম কবির দুপুরের পরে ঘটনাস্থল থেকে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকা এখন শান্ত রয়েছে। তবে সন্ধ্যায় থানায় নিয়ে আসা ব্যক্তিদের নাম পরিচয় ও সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে মোবাইল করা হলেও ওসি গোলাম কবির ফোন রিসিভ না করায় কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।