Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒প্রবহমান নদী আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে খননের চেষ্টা

পলি জমে ভরাট হওয়ার ঝুঁকিতে ডুমুরিয়ার হরি ও তেলিগাতি নদী

এখন সময়: বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর , ২০২৫, ০৮:২৬:১২ এম

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ‘নদী বেঁধে নদী খননের চেষ্টা, এযেন গলাটিপে হত্যা করা ছাড়া আর কিছুই না’! প্রবহমান নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দেয়ায় জোয়ার-ভাটায় স্বাভাবিক স্রোতে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে। নদীর স্রোত আটকিয়ে নদী খননের ফলে আগামী কয়েক মাসে খর্ণিয়া থেকে বারোআড়িয়া পর্যন্ত (প্রায় ২৮ কিলোমিটার) উজান থেকে আসা পলিতে নদী ভরাট হওয়ার আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।
জানা যায়, যশোর ও খুলনার ৫টি উপজেলার (মনিরামপুর, কেশবপুর, অভয়নগর, ফুলতলা ও ডুমুরিয়া) জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬টি নদীর ৮১.৫ কিলোমিটার খনন কাজ শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় এ কাজ বাস্তবায়িত হচ্ছে। খনন প্রকল্পের নদীগুলো হলো, টেকা নদী ৭ কিলোমিটার, হরি ও তেলিঘাতি নদী ২০ কিলোমিটার, শ্রী নদী ১ কিলোমিটার, হরিহর নদী ৩৫ কিলোমিটার ও আপার ভদ্রা নদী ১৮.৫ কিলোমিটার। গেলো অক্টোবরে খনন কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। এরপর কেশবপুর অঞ্চলের কৃষকদের ঘের সেচ দেওয়ার জন্য ২৫ ডিসেম্বর সময় নির্ধারণ করা হয়। যার কারণে দুই মাস কাজটি পিছিয়ে পড়ে। গত ২০ দিন আগে বরাতিয়া-কেশবপুর নামকস্থানে আপার ভদ্রা নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দেয়া হয়। এই নদীটি যশোর জেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বাঁধটি জোয়ারের পানির চাপে কেশবপুর অংশে আংশিক ভেঙে যায়। এবার সেখানে পাইলিং দিয়ে মজবুতভাবে বাঁধ দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এভাবে বাঁধ দিয়ে পানি শুকিয়ে প্রবাহমান জোয়ার-ভাটার নদী স্কেভেটর মেশিন দিয়ে খনন করা হবে। এই পদ্ধতিতে খর্ণিয়া থেকে তেলিগাতি নদীর কুলবাড়িয়া দুই ভেন্ট রেগুলেটর পর্যন্ত খনন করা হবে। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারী ও মার্চ মাসে সাগর থেকে উজানে ভয়াবহ পলি আসে। এ সময়টুকু মূলত নদীতে স্রোতের গতি না থাকলে খর্ণিয়া থেকে বারোআড়িয়া পর্যন্ত পলি জমে ভরাট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই মনে করছেন এলাকার সচেতন মহল। এ বিষয়ে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহাজাহান জমাদ্দার ও আজিজুর রহমান জানান, প্রবহমান নদী বেঁধে যেভাবে খননের চেষ্টা করা হচ্ছে, তাতে মূল নদী পলি পড়ে ভরাট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি অধ্যাপক জিএম আমান উল্লাহ বলেন, আমরা ডুমুরিয়াবাসী দীর্ঘ জলাবদ্ধতায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। উজানের পলিতে শৈলমারী নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে বিলডাকাতিয়াসহ ডুমুরিয়া উপজেলার ৫ ইউনিয়নে বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। কালের বিবর্তনে নাব্যতা হারালেও এখনো কিছুটা সচল রয়েছে খর্ণিয়ার হরি ও তেলিগাতি নদী। কিন্তু সম্প্রতি অপরিকল্পিতভাবে নদী খননের নামে প্রবাহমান নদীতে বাঁধ দেয়ায় মূল নদী পলি পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, যদি সাসটেইনেবলভাবে নদী খনন করতে হয় সে ক্ষেত্রে স্রোতের গতিধারা ঠিক রেখে সঠিক পরিকল্পনা মোতাবেক ড্রেজিং পদ্ধতিতে নদী খনন করা প্রয়োজন। তা নাহলে অদুর ভবিষ্যতে ডুমুরিয়ার মানচিত্র থেকে বিলিন হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে হরি ও তেলিঘাতি নদী।
নদী খননের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী বলেন, যেহেতু নদী সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে খননের কাজ চলছে। যে কারণে প্রকল্পের বিষয়ে বা কিভাবে খনন করা হবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। জনগণ চেয়েছেন তাই সেনাবাহিনী কাজ করছেন। কিভাবে নদী খনন করবে সেটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে আগামী জুন মাসের মধ্যে খনন শেষ করার কথা রয়েছে।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)