নিজস্ব প্রতিবেদক : এনজিওতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সাড়ে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আওয়ামী লীগ নেত্রী বহুলালোচিত মাহমুদা জামানের বিরুদ্ধে যশোর আদালতে দুইটি মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার যশোর শহরের ঘোপ জেল রোড এলাকার ইমরান সিকদারের স্ত্রী তানজিনা রহমান ও শহরতলীর শেখহাটি এলাকার ইকবাল হোসেনের মেয়ে ইন্নাতুল হাসান বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমিন অভিযোগ দুইটির তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন কোতয়ালি থানার ওসিকে। মাহমুদা জামান যশোর সদরের বসুন্দিয়া মোড়স্থ মৃত ডাক্তার মুনসুর আলীর মেয়ে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ইন্নাতুল হাসান যশোরের কুইন্স হাসপাতালে চাকরি করেন। আসামি মাহমুদা জামান অসুস্থ হয়ে কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি হন। এ সময় তাদের মধ্যে পরিচয়, একপর্যায় ইন্নাতুল হাসানকে বেশি বেতনে একটি এনজিওতে চাকরির প্রলোভন দেখায় মাহমুদা। আর ওই চাকরি পাইয়ে দিতে তাকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হবে। চলতি বছরের ১২ এপ্রিল চাকরি পাওয়ার আশায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মাহমুদাকে দেন ইন্নাতুল হাসান। চাকরি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় টাকা ফেরত না দিয়ে ঘোরাতে থাকেন। গত ২ ডিসেম্বর বিকেলে কুইন্স হাসপাতালের সামনে মাহমুদার দেখা হলে টাকা ফেরত চান ইন্নাতুল হাসান। টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করেন মাহমুদা। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।
অপরদিকে, তানজিনা রহমানও কুইন্স হাসপাতালে চাকরি করেন। হাসপাতালে মাহমুদা জামানের সাথে তার পরিচয়। মাহমুদ তাকে এনজিওতে চাকরি পাইয়ে দিতে ৮ লাখ টাকা দাবি করেন। রাজি হয়ে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল মাহমুদাকে ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেন তানজিনা রহমান। পরবর্তীতে চাকরি দিতে পারেনি মাহমুদা। তাকে দেয়া টাকা ফেরত চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন।
এরইমধ্যে তানজিনাকে দিয়ে মাহমুদা প্রতারণা করে একটি কোম্পানিতে ইন্সুরেন্স করিয়ে দেন। সেখানে তানজিনা ৫০ হাজার টাকা জমা দিলেও ২৫ হাজার টাকার একটি মেসেজ মোবাইলে পাঠান মাহমুদা। গত ২ ডিসেম্বর বিকেল ৪টার দিকে মাহমুদা কুইন্স হাসপাতালে আসেন। এ সময় তার চাকরির জন্য দেয়া টাকা ফেরৎ চাইলে অস্বীকার করেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ মামলা করেছেন।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে মাহমুদার নাম শুনলে অনেকেই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। গত ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি নৌকা মার্কায় সাধারণ আসন এবং সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি প্রার্থী হওয়ার জন্য দুইবার করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে জমা দিয়েছিলেন। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে সুচতুর মাহমুদ রাজনৈতিক দল পরিবর্তন করে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে তাল মিলিয়ে এলাকায় বহাল তবিয়তে চলছেন।