Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীর ‘ঐতিহাসিক’ ভূমিকা চান প্রধান উপদেষ্টা

এখন সময়: বৃহস্পতিবার, ৪ ডিসেম্বর , ২০২৫, ১২:১৪:৪৭ এম

স্পন্দন ডেস্ক : আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
একইসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা জাতীয় নিরাপত্তা, অগ্রগতি, জাতি গঠন এবং সংকটকালে জনগণের পাশে দাঁড়ানোয় সশস্ত্র বাহিনীর অবদানের প্রশংসা করেন।
বুধবার রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে চলতি বছরের ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স (এনডিসি) ও আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স এর সমাপনী আয়োজনে সরকারপ্রধান বক্তব্য রাখছিলেন।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে একসঙ্গে করার প্রস্তুতি গুছিয়ে আনছে সরকার। নির্বাচন কমিশন চলতি মাসের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলছে।
বাসস লিখেছে, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতে আমাদের জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটে সত্যিই একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে। এটি শুধু একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হবে না, বরং শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করবে।
“ভোটাররা যখন ভোট দিতে বের হবেন, তা উৎসবমুখর হবে এবং জাতি গর্বের সঙ্গে স্মরণ করবে যে তারা দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তে অংশ নিয়েছেন।”
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশের নিরাপত্তা, অগ্রগতি ও জাতি গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আপনারা যে ত্যাগ ও নিষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন, তা দৃষ্টান্তমূলক।”
তিনি বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং মহামারীর মতো সংকটে সশস্ত্র বাহিনীর অব্যাহত প্রচেষ্টা দেশের জনগণের কল্যাণে তাদের প্রস্তুতি ও অটল নিষ্ঠার প্রমাণ বহন করে।”
তিন বাহিনীর সদস্যদের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে বৈশ্বিক শান্তিতে অবদান রাখার জন্যও ধন্যবাদ দেন অন্তর্বর্তী সরকারে প্রধান উপদেষ্টা। যা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক খ্যাতি বাড়িয়েছে।
বক্তব্যের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, “এটি একটি বিশেষ মাস। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক বিজয়ের মাস। আমরা সকলেই গর্বের সঙ্গে স্মরণ করি সেই সব বীরদের, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছেন। এছাড়াও সকল শ্রেণিপেশার মানুষের আত্মত্যাগকে আমরা স্মরণ করি, যারা দেশের মুক্তির সংগ্রামে অবদান রেখেছেন।”
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গ করা সকল শহীদ ও আহতের প্রতি সম্মান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
তিনি বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে সম্ভব করা সকল শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা, যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সঙ্গে জীবন উৎসর্গ করেছেন ও আহত হয়েছেন।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় প্রধান উপদেষ্টা দেশবাসীকে দোয়া ও প্রার্থনা করার আহ্বান জানান।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানের এই আনন্দময় মুহূর্তে আসুন আমরা সকল বাংলাদেশির সঙ্গে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।”
স্নাতক সম্পন্ন করা অফিসারদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আজকের গ্র্যাজুয়েশন আপনার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স সফলভাবে সম্পন্ন করা সত্যিই একটি বড় অর্জন।”
তিনি বলেন, “এটি আপনার জীবনের স্মরণীয় মুহূর্ত। এই অর্জন বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের প্রতিফলন। এখন আপনি উচ্চতর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, যা আপনাকে জাতীয় নিরাপত্তা, রাষ্ট্র পরিচালনা, নীতি নির্ধারণ, কৌশল প্রণয়ন এবং জাতীয় উন্নয়নের জটিলতাগুলো বোঝার ক্ষমতা প্রদান করবে।”
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য নিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, কলেজটি এমন নেতৃবৃন্দ গড়ে তোলার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যারা জটিল ও ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নিজেকে নিবেদিত করতে সক্ষম হবেন।
তার ভাষায়, “আমরা এমন এক এক সময়ে আছি যখন অর্থনৈতিক কেন্দ্রীকরণের গুরুত্ব এশিয়ার দিকে স্থানান্তরিত হচ্ছে, বাংলাদেশ এমন একটি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে যা অসাধারণ সুযোগ প্রদান করে। ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য এই অনন্য ভূ-রাজনৈতিক সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে দেশের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।”
বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশা করি, এখানে আপনার সময়কালে আপনি এমন বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছেন যা দিগন্ত বিস্তারী, যা আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরতর বোঝাপড়া তৈরি করে।”
এনডিসির অবদানের প্রশংসা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ প্রতিষ্ঠার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করেছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর-আইএসপিআর এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিরপুর সেনানিবাসে ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজ কমপ্লেক্সে সমাপনী আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেছেন, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট অধ্যয়নের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ একটি উৎকর্ষতার কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
“দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ নেতৃত্ব তৈরিতে প্রতিষ্ঠানটি যথাযথ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে।”
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতির জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘জ্ঞানই নিরাপত্তা’- এই দর্শনকে ধারণ করে ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ সামরিক ও অসামরিক পর্যায়ের জ্যেষ্ঠ ও মধ্য-স্তরের কর্মকর্তাদের রাষ্ট্রীয় নীতি প্রণয়ন, জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নে কার্যকর অবদান রাখার জন্য প্রস্তুত করে যাচ্ছে।
এ বছর ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্সে মোট ৯৬ জন কোর্স সদস্য অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৪৯ জন, অসামরিক প্রশাসনের ১৮ জন এবং ভ্রাতৃপ্রতিম ১৮টি দেশের ২৯ জন সদস্য অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর ৫৬ জন কর্মকর্তা সফলভাবে আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স সম্পন্ন করেন।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)