 
                    নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরের বাজারে বেড়েছে আটার দাম। খুচরা পর্যায়ে কেজিতে আটার দাম ৫ টাকা বেড়েছে। কমেছে খোলা চিনি ও কিছু সবজির দাম। আর খুচরা দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ আগের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে।
শুক্রবার শহরের বড় বাজার ঘুরে ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানান, খোলা ও মোড়কজাত (প্যাকেট) উভয় ধরনের আটার দামই বেড়েছে। শহরের বিভিন্ন খুচরা দোকান থেকে দুই সপ্তাহ আগে মোড়কজাত আটা (দুই কেজি) কেনা যেত ১০৫-১১০ টাকায়। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। আর খোলা আটার কেজি ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা হয়েছে। 
এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে আটার দাম এক দফা বেড়েছিল। তখন দুই কেজির মোড়কজাত আটা ৯০-৯৫ থেকে বেড়ে ১১০ টাকা হয়েছিল। খোলা আটার দাম বেড়ে হয়েছিল ৪৫-৪৮ টাকা। মাঝে আটার দামে ২-৩ টাকা ওঠানামা হয়।
চালের বাজারে দরদামে কিছুটা পরিবর্তন আছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে মঞ্জুর, সাগর, ডায়মন্ড ও আনোয়ার—এই চার ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দাম কেজিতে এক-দেড় টাকা বেড়েছে। তবে খুচরা বিক্রেতারা আগের দামেই অর্থাৎ ৮০-৮২ টাকা কেজি এসব চাল বিক্রি করছেন। এ ছাড়া নাজির, পাইজাম প্রভৃতি চালের দাম আগের মতো রয়েছে।
ব্রয়লার, সোনালি মুরগি ও ডিমের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। গতকাল বড় বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৪০ টাকা বিক্রি হয়েছে। আর সাদা ডিমের দাম ডজনে এর চেয়ে ৫ টাকা কমে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি ২৯০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, খুচরা পর্যায়ে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়েনি। তবে ডিলার পর্যায়ে দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে বিক্রেতাদের কমিশনের পরিমাণ কমেছে। সপ্তাহ দুই আগে খুচরা বিক্রেতারা ডিলারের কাছ থেকে ৫ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল কিনতেন ৮৯০-৮৯৫ টাকায়; বিক্রি করতেন ৯১৫-৯২০ টাকায়। এখন সেটি ৯০০-৯১০ টাকায় কিনে আগের দামে বিক্রি করছেন।
বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহও কিছুটা কম রয়েছে। অর্থাৎ কোম্পানিগুলো অথবা ডিলাররা বাজারে কম পরিমাণে তেল সরবরাহ করছেন। বড় বাজারের মুদি দোকানী আশিষ সাহা জানালেন, গত মঙ্গলবার ডিলারের কাছে ৫ লিটারের ৫ কার্টন তেল চেয়েছিলেন। বুধবার ডিলার মাত্র ২ কার্টন তেল দিয়ে গেছে। এতে আমরা ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে পারছিনা।
শীতে সাধারণত চায়ের চাহিদা বেড়ে যায়। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, শীত আসার আগেই বেড়েছে চাুপাতার দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে (প্যাকেটজাত) চাপাতার দাম কেজিতে ১০০ টাকার মতো বেড়েছে। বর্তমানে চাপাতা বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি। অবশ্য বাজারে দাম কমেছে চিনির। ১৫ দিন আগে প্রতি কেজি খোলা চিনি ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। গতকাল তা ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
সবজি বিক্রেতা শংকর কুমার জানান, বাজারে শীতের আগাম কিছু সবজি আসতে শুরু করেছে। এতে কিছু সবজির দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এখন ১০০ টাকা কেজির নিচে বেশির ভাগ সবজি কেনা যাচ্ছে। গতকাল প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় ও টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া করলা, কাঁকরোল, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, পটোল, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল প্রভৃতি সবজির দাম রাখা হয়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। এক-দুই সপ্তাহ আগে এসব সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা বেশি ছিল।
বর্তমানে শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লালশাকের মতো শীত মৌসুমের কিছু আগাম শাকসবজি বাজারে এসেছে। যদিও এসব সবজির দাম তুলনামূলক বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।
শহরের বেজপাড়ার বাসিন্দা বেসরকারি চাকরিজীবী গোলাম হোসেন বলেন, ‘দুই-তিন মাস ধরে চড়া দামে সবজি কিনছি। এখন সবজির দাম কিছুটা কমা শুরু হয়েছে। কিন্তু এর আগেই বেড়ে গেছে আটা ও মিনিকেট চালের দাম। বাড়তি খরচ থেকে আমাদের মুক্তি নেই।’