ম.ম.রবি ডাকুয়া, মোংলা: সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে দুটি ট্রলার থেকে ১৮ বস্তা চিংড়ির শুঁটকি জব্দ করেছে বন বিভাগ। শুঁটকিগুলি পাচার করার ঠিক আগমুহূর্তে এ অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযুক্তরা বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে গভীর জঙ্গলে পালিয়ে যায়, ফলে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দিপক চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, একদল দুর্বৃত্ত সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ ধরছিল, তারপর বনের কাঠ ব্যবহার করে শুঁটকি প্রস্তুত করে পাচারের জন্য প্রস্তুত করছিল। এমন তথ্য পেয়ে বন বিভাগের দলটি শনিবার ভোর থেকে অভিযানে নামে। বড় ডাবুর খাল এলাকায় সন্ধ্যায় দুটি ট্রলার দেখতে পেয়ে সেখানে হানা দেয় বনরক্ষীরা।
অভিযানে পাচারকারীরা পালিয়ে গেলেও ট্রলার দুটি ও শুঁটকি তৈরির বিভিন্ন উপকরণ ফেলে যেতে বাধ্য হয়। জব্দ করা হয় ১৮ বস্তা চিংড়ি শুঁটকি, ট্রলার ও সরঞ্জাম। বন আইনে এসব মালামাল নষ্ট করে ফেলা হয়েছে এবং শুঁটকিগুলি আদালতের নির্দেশনার অপেক্ষায় রয়েছে।
গোপন সূত্রে বন কর্মকর্তারা আরও জানান, মোংলা ও দাকোপের কিছু চিহ্নিত ব্যক্তি, যেমন মোশারেফ হোসেন, ওলি সুমন, লিটন গাজী, বেলায়েত হোসেন, পল্টু জমাদ্দার, মিজান ও জমির উদ্দিনসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত। বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, হরিণ নিধন, নিষিদ্ধ সময়ে কাঁকড়া ধরা এবং পশু পাচার তাদের নিয়মিত কার্যকলাপের অংশ।
রেঞ্জ কর্মকর্তা জানান, অভিযানে থাকা ট্রলার দুটিতে অন্তত ১০-১২ জন জেলে ছিল। পালিয়ে যাওয়ার ফলে তাদের আটক করা যায়নি, তবে তদন্ত চলছে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই চক্র ৬ জুলাই রাতেও পাথরঘাটা হয়ে লিটন গাজীর ট্রলারে ৩০ বস্তা শুঁটকি পাচার করেছে।
এই ঘটনায় বন আইনে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বন বিভাগ জানিয়েছে, অভিযানে জব্দ মালামাল ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে এবং আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী শুঁটকি মাছের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।