কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: কলকাতায় আলোচিত বাংলাদেশের সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী বার্ষিকী ছিল ১৩ মে। একটি বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যাবধি তার মরদেহের খণ্ডাংশ পায়নি পরিবার। যে কারণে ইসলামী শরিয়হ মোতাবেক তার জানাজা নামাজও হয়নি। তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে কালীগঞ্জে পরিবারের থেকে স্বল্প পরিসরে এতিম হাফেজদের নিয়ে মিলাদ মাহফিল করলেও তার স্মরণে অন্যদের কোন আয়োজন ছিল না। বাবার প্রথম মৃত্যু দিবসে সাবেক এমপি কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন গণমাধ্যমকর্মীদের দেয়া সাক্ষাতে তার বাবার মরদেহের খন্ডাংশ পাওয়াসহ খুনের জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান সাবেক এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার। সেখানে বরাহনগর এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে উঠেন। পরদিন ১৩ মে বন্ধুর বাড়ি থেকে বের হয়ে ৯ দিন নিখোঁজ ছিল। এরপর ২২ মে নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের বিউ-৫৬ নম্বর ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহের খন্ডবিখন্ড অংশ উদ্ধার করে কলকাতার পুলিশ। তবে ওই খণ্ড বিখণ্ড টুকরা অংশটি এমপি আনারের কি না তা ডিএনএ টেস্টের জন্য নিশ্চিতে ফরেন্সিকে পাঠানো হয়। এরপর এমপি কন্যা ডরিন ডিএনএ টেস্টের নমুনা দিলে পরবর্তীতে খণ্ড বিখণ্ড টুকরা গুলি এমপি আনারের বলে চিহ্নিত করা হয়। তবে লিখিত কোন কপি এখনো দেয়নি।
দেশ ছেড়ে ভারতে যাবার পর গত বছরের ২২ মে ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানায় সাবেক এমপি আনারের ছোট মেয়ে ডরিন তার পিতাকে খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের এক অভিযোগ এনে মামলা করেন। মামলায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু ও ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল আহমেদ বাবুসহ ৯জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের মূল মাস্টার মাইন্ড আনারের বন্ধু যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আক্তারুজ্জামান শাহীন ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।
বাবার মৃত্যুবাষিকীতে সাবেক এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন মুঠোফোনে জানান, বাবার হত্যার সাথে জড়িতরা ইতোমধ্যে নানাভাবে জামিনের জন্য চেষ্টা করছে। তাদের জামিন হলে মামলার তদন্ত কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে। তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
ডরিন আক্ষেপের সুরে আরো বলেন, গত ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে ভারতে গিয়ে ডিএনএ দিয়েছি। ভারতের সিআইডি তাকে জানিয়েছেন মরদেহের খন্ডাংশের সাথে তার ডিএনএ মিলেছে। কিন্তু অফিসিয়াল ভাবে কোন কাগজ ও মরদেহের খন্ডাংশ আজও দেয়নি। যে কারণে এই এক বছরে বাবার দাফন বা জানাযার ব্যবস্থাও করতে পারিনি। এর থেকে কষ্টের আর কিছু হতে পারে না। দ্রুত বাবার মরদেহের খণ্ডাংশ পেলে দাফনের ব্যবস্থা করতে চাই। ডরিন বলেন, ভারতের সিআইডি কয়েকবার চিঠি দিয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কোন সাড়া দেয়া হচ্ছে না। ডিএনএর রিপোর্টটি তাদের পরিবারের জন্য খুবই প্রয়োজন।