সাতক্ষীরা প্রতিনিধি: অপেক্ষার প্রহর শেষ। আমের রাজ্যে সাতক্ষীরায় মধু মাস জৈষ্ঠ্য আসার আগেই বাজারে উঠতে শুরু করেছে পরিপক্ক গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, শরিখাস, ক্ষীরসরায়, গোলাপখাসসহ হরেক রকম বিভিন্ন প্রজাতির সুসাদু দেশীয় আম। আমের গুণগত মান বজায় রেখে নিরাপদে আম বাজারজাত করতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের বেধে দেয়া নির্ধারিত সময় অনুযায়ী কৃষি সম্প্রসারণের সহায়তায় সাতক্ষীরায় গাছ থেকে আম সংগ্রহের কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। সাতক্ষীরার আমের কদর রয়েছে বিশ্বজুড়ে। এবছরও সাতক্ষীরা থেকে যুক্তরাজ্য, বৃটেন, ইটালি, ফ্রান্স সৌদি আরবসহ বিভিন্ন প্রজাতির আম বিদেশে রপ্তানি হবে। আবহাওয়া ও মাটিরগুনগত কারনে বিশ্বজুড়ে সাতক্ষীরা আমের বেশ কদর রয়েছে। সোমবার (৫ মে) বেলা সাড়ে ১১টার সময় জেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে প্রথম দফায় সদর উপজেলা ফিংড়ী গ্রামের আম চাষীর বেলাল হোসেনের আম বাগানে গাছ থেকে গোবিন্দভোগ ও গোপালভোগ. গোলাপ খাস, শরিখাস আম গাছ থেকে কোটা দিয়ে ছাড়ানোর মাধ্যমে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তাক আহম্মেদ।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মনির হোসেনের সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন এনডিসি প্রনয় বিশ্বাসসহ অন্যান্য কৃষি কর্মকর্তা, আম চাষী ও ব্যবসায়ীরা বৃন্দ।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, প্রকৃতির একটা উর্বর ভূমি সাতক্ষীরা। এখানে আম, কুল,পেয়ারাসহ নানা রকমের ফসলে সয়লব। সাতক্ষীরার আম, চিংড়ি ও সুন্দরবনের জন্য বিখ্যাত। এখানকার আমের পাশাপাশি এ জেলার কাঁকড়া বিদেশে রপ্তানি হয়ে থাকে। সাতক্ষীরার আম এত সুস্বাদু যে জাতীয় ফল কাঠালের নাম পরিবর্তন করে আমকে জাতীয় ফল করা উচিত। বিশেষ করে সাতক্ষীরার হিমসাগর আম। এ আমটি ব্র্যান্ডিং করা উঠিত। সাতক্ষীরার আম প্রতি বছর আরও কিভাবে বেশি বেশি বিদেশে রপ্তানি করা যায় সে ব্যবস্থার উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে কোন ব্যক্তি ও চাষি ক্যামিক্যালমিশ্রিত আম বাজারজাত করবেন না। করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। প্রত্যেকটি জেলার এক একটি বৈশিষ্ট থাকে তার মধ্যে সাতক্ষীরা জেলার বৈশিষ্ট অন্যন্য। এটি একটি কৃষিতে সয়ংসম্পন্ন জেলা।
সাতক্ষীরা সদর উপজেলা কৃষি সস্প্রসারণ অফিসার মনির হোসেন জানান, সাতক্ষীরা ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আমের আবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৮ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৬০০ কোটি টাকা। এবছরও গোপালভোগ ও গোবিন্দভোগ, হিমসাগর, লেংড়া, আম্রপালি আমসহ সব মিলিয়ে ১০০ মোট্রিক টনের অধিক উৎপাদিত বিষমুক্ত আম যুক্তরাজ্য, বৃটেন, ইটালি, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হবে।