অসীম মোদক, মহেশপুর : মহেশপুরে শুরু হয়েছে নতুন ইরি ধান কাটা, মাড়াই ও শুকানোর ব্যস্ততা। উপজেলার বিস্তৃত ফসলের মাঠ জুড়ে সোনালী ধান কাটার যেন উৎসব চলছে। নতুন ধান কাটতে ও ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষক-কৃষাণী। সেই সাথে ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসবের প্রস্তুতি।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকরা দল বেধে ধান কাটছেন আর মনের সুখে গান গাইছেন। কেই ধানের আটি বাঁধছেন, কোথাও কোথাও ধান কেটে মাঠের মধ্যেই ‘বাদা’ দিয়ে রাখছেন। আবার বিভিন্ন যানবাহনে ও কৃষকরা কাঁধে করে ধান বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। ফসলের মাঠ থেকে বাড়ি সর্বত্র চলছে নতুন ধান ঘরে তোলার মাহা উৎসব।
কৃষকরা জানান, এখন পুরোদমে ইরি ধান কাটা শুরু হয়েছে। কাঠ ফাঁটা রোদ উপেক্ষা করে সকাল-সন্ধ্যা মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। কৃষকরা আরো জানান, যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তাহলে ১০-১২ দিনের মধ্যে ধান কাটা, মাড়া ও শুকিয়ে ঘরে তোলার কাজ সম্পন্ন হবে।
কৃষক ও দিনমজুরদের সাথে কথা বলে জানাগেছে, এবার এক বিঘা ধান কেটে ও আটি বেধে কৃষকের বাড়িতে আনতে খরচ হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা।
গামন্তার কচুয়ার পোতা গ্রামের কৃষক কওছার আলী জানান, বিঘা প্রতি ৫ হাজার টাকায়ও ধান কাটতে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছেনা। তাই নিজেরা ধান কাটতে শুরু করেছি। তিনি আরো জানান, তেল-সারসহ সব জিনিসের দাম বেশি তবে এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় কোনো রকমে আসলটা বাচবে।
দিন মজুররা জানান, এবছরে তাপমাত্রা প্রচন্ড বেশি তারপরও দিন মজুর সংকট সে কারণে মজুরি একটু বেশি। তারা আরো জানান, আমরা এবছর বিঘাপ্রতি কাটা বান্দা ৫ হাজার টাকা নিচ্ছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, মহেশপুর উপজেলায় এ বছর ইরি বোরো মৌসুমে ২১ হাজার ৮ শ’ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এ বছর ধান উৎপাদ লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৯ শ’ ৬০ মেট্টিক টন। বর্তমানে এ উপজেলায় প্রায় ৬০ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে আছে বলে কৃষকরা যে ফলন আশা করেছিল তার চাইতে বেশি ফলন পাচ্ছেন। তবে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আগামী সোমবার থেকে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। সে কারণে উপজেলার সকল কৃষকদেরকে জমির ধান যদি ৮০ ভাগ পেকে থাকে তাহলে দেরি না করে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য আহবান জানান।