স্পন্দন ডেস্ক : ‘নববর্ষের ঐক্যতান ফ্যাসিবাদের অবসান’ স্লোগান ধারণ করে দিনব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে সোমবার বাংলা নববর্ষ উদযাপিত হয়েছে। গৃহিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, পান্তা উৎসব, সঙ্গীতানুষ্ঠান, পুরস্কার বিতরণ। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো রিপোর্টে-
কপিলমুনি (খুলনা) : কে কে এস পির ব্যবস্থাপনায় বর্ষবরণ কমিটির আয়োজনে সকাল সাড়ে ৭ টায় আনন্দ শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নেয় স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কে কে এস পি, বণিক সমিতি, সিটি প্রেসক্লাব, পেশাজীবী সংগঠন, রাজনৈতিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যসহ সর্বস্তরের মানুষ। সাড়ে ৮ টায় কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দির প্রাঙ্গণে উৎসব মুখর পরিবেশে পান্তা ইলিশের আসর বসে। বিকেলে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ঢালী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
ডুমুরিয়া (খুলনা) : সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কে শোভাযাত্রা বের করা হয়। নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন। এরপর আলোচনা সভা, কবিতা আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ডুমুরিয়া যুবসংঘ মাঠে তিনদিন ব্যাপী লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, ডুমুরিয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান, থানা অফিসার ইনচার্জ মাসুদ রানা, উপজেলা কৃষি অফিসার ইনসাদ ইবনে আমিন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার আশরাফুল কবির, উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম, ডুমুরিয়া সাব-রেজিস্ট্রার অঞ্জু দাস, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ কুমার বিশ্বাস, সমবায় অফিসার সরদার জাহিদুর রহমান, মৎস্য অফিসার জিল্লুর রহমান রিগ্যান, ইউআরসি মনির হোসেন, পিডিবিএফ’র কর্মকর্তা প্রতাপ দাস, কলেজ অধ্যক্ষ খান ফেরদৌস, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ তুহিনুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান জহুরুল হক, শ্রমিকদল নেতা খান ইসমাইল হোসেন, বিএনপি নেতা শেখ ফরহাদ হোসেন, শিক্ষক শফিকুল আলম প্রমুখ। অপরদিকে স্বাধীনতা চত্বরে শিশু সংগঠন ডুমুরিয়ার খেলাঘর আসরের আয়োজনে বৈশাখী প্রভাতি অনুষ্ঠান ও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। খেলাঘর আসরের জাতীয় পরিষদের সদস্য শফিক আহমেদ ও শিশু সংগঠক বেনজির আহমেদ জুয়েলের নেতৃত্বে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ঝিকরগাছা: ঝিকরগাছা উপজেলার নিশ্চিন্তপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, দেশীয় খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকালে আয়োজিত নানা কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন এবং অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন, বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাড. শাহ আনোয়ারুল কবীর। বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রায় নতুন বর-বউ তাদের দাদা-দাদী ও ঘটককে নিয়ে গরুর গাড়িতে বরযাত্রী এবং ঘোড়া ও ভ্যানে মাইক বাজিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে যাত্রা শুরু করে সাদিপুর, কানাইরালী ও নিশ্চিন্তপুর গ্রাম ঘুরে বিদ্যালয়ের এসে শেষ করে। বিকালে বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক গাজী গোলাম মোস্তফার নেতৃত্বে দেশীয় খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেয় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আলমগীর হোসেন। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অ্যাড. শাহ আনোয়ারুল কবীর, প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারী, সকল শিক্ষকবৃন্দের উদ্যোগে দুপুরে মাংস খিচুড়ির আয়োজন করা হয়।
অভয়নগর : সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনের উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে বর্ষবরণে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এসে শেষ হয়। এতে আনন্দ ও উৎসব মুখর পরিবেশে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। পরে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সর্বস্তরের মানুষের জন্য পান্তা-মাছ উৎসবের আয়োজন ছিল। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জয়দেব চক্রবর্তী, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ আল ফারুক, অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলীম, নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান, অভয়নগর থানা বিএনপির সভাপতি ফারাজী মতিয়ার রহমান, নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি আবু নঈম মোড়ল, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম মোল্যা, জামায়াতে ইাসলামীর উপজেলা শাখার আমীর সরদার শরিফ হোাসেন, নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মুজিবর রহমান, সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মল্লিক, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ জাহিদ মাসুদ তাজ, কোষাধ্যক্ষ মল্লিক খলিলুর রহমান, উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
বাঘারপাড়া : সকালে বাঘারপাড়া উপজেলা চত্বর থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। এতে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবক ও সর্বস্তরের জনসাধারণ অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রাটি উপজেলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসময় স্থানীয় শিল্পীরা পরিবেশন করেন বৈশাখী গান, নৃত্য ও আবৃত্তি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শোভন সরকার, সাবেক প্রাথমিক শিক্ষা সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ অধিকারী, বাঘারপাড়া থানা অফিসার ইনচার্জ ফকির তাইজুর রহমান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আশরাফুল আলম, ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং গণমাধ্যম কর্মীরা।
খুলনা : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে বেলুন, ফেস্টুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী, বাংলা নববর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি এবং ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. নূর আলম, কমিটির সদস্য সচিব ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. নাজমুস সাদাত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে চারুকলা স্কুল থেকে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী মেলা। শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বসানো হয় পিঠা-পুলি, হস্তশিল্প, ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও পণ্যের স্টল। শিশুদের জন্য ছিল নাগরদোলা, ম্যাজিক শো ও অন্যান্য আনন্দ আয়োজন। মেলায় দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে গোটা প্রাঙ্গণ। এছাড়াও বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় গান, কবিতা, নৃত্য ও নাটকের মাধ্যমে বাংলা সংস্কৃতির নান্দনিক রূপ তুলে ধরা হয়।
কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : সকালে উপজেলা প্রশাসন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শহরে বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। নানান রঙে সাজিয়ে গরুর গাড়ি, ঘোড়ার গাড়ি, ব্যানার, মুখোশ, ঢাক-ঢোল ও ঐতিহ্যবাহী বাংলার নানা প্রতীক নিয়ে হাজারো মানুষ অংশ নেয়। র্যালিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দেদারুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহিন আলম, সরকারি কর্মকর্তা, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রিয় সংসদের সিনিয়র সহ-সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক হামিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক কর্মী ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। শহর ঘুরে শোভাযাত্রা শেষে উপজেলা পরিষদের মুক্ত মঞ্চে স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। লোকগান, নৃত্য, আবৃত্তি ও নাট্য পরিবেশনার মাধ্যমে বাংলার লোকজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়। এদিকে উপজেলা বিএনপির দু’টি পক্ষের আয়োজনে পৃথক পৃথকভাবে শহরে র্যালি বের করা হয়। শহরের থানা রোডে দলীয় কার্যালয়ে সাইফুল ইসলাম ফিরোজের পক্ষে নেতাকর্মীরা এবং ফয়লা রোডে হামিদুল ইসলাম হামিদ পক্ষের নেতাকর্মীরা বর্ষবরষের পান্তা উৎসব সহ আলোচনা সভা করে। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও পৃথক পৃথকভাবে দিনব্যাপী নানা উৎসবের আয়োজন করে।
মাগুরা : সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নোমানী ময়দানে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাহবুবুল হক, সিভিল সার্জন ডাক্তার শামীম কবির, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিবুল হাসানসহ সরকারি বে-সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা,সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়। আনন্দ শোভাযাত্রা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম। এছাড়া জেলার শ্রীপুর, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বরণ করে নেয়া হয়। পহেলা বৈশাখ পালনে জেলার বিভিন্ন স্থানে বৈশাখী মেলা, গরুর গাড়ির র্যালি, নানা গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
ফকিরহাট (বাগেরহাট) : সকালে উপজেলা কেন্দ্রিয় শহিদ মিনার চত্বর থেকে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয় নাচ, গান, কবিতা আবৃতি। এসময় উপজেলা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় পান্তাভাতের উৎসব। এছাড়া উপজেলা প্রশাসন বনাম সূধিজনদের মধ্যে দড়াটানা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমনা আইরিন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শোভা রানী রায়ের উপস্থাপনায় এসময় সহকারী কমিশনার (ভূমি) এএসএম শাহনেওয়াজ মেহেদী, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাখাওয়াত হোসেন, প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান, উপজেলা প্রকৌশলী আজিজুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান, ওসি (তদন্ত) আলমগীর হোসেন, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাহিরা খাতুন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস, পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম আনন্দ কুমার কুন্ডু প্রমুখ।
আশাশুনি : আশাশুনিতে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে আনন্দ শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উপজেলা প্রশাসন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসব কর্মসূচি পালন করে।
উপজেলা প্রশাসন সকাল ৮ টায় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে দিবসের সূচনা করে। এরপর বৈশাখী মেলা উদ্বোধন ও আনন্দ শোভাযাত্রা বের করা হয়। এরপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমিক সুপার ভাইজার হাসানুজ্জামানের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কৃষ্ণা রায়। সভায় আশাশুনি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নজরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আ. অদুদ, সমাজ সেবা অফিসার রফিকুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম, আইসিটি কর্মকর্তা আক্তার ফারুক বিল্লাহ বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্য, সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। সবশেষে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। আশাশুনি সরকারি কলেজে নানা আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করা হয়েছে।
দেবহাটা (সাতক্ষীরা) : সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পরিষদ চত্বর বৈশাখী শোভাযাত্রা শুরু হয়ে বনবিবির বটতলা গিয়ে শেষ হয়। পরে এখানে পান্তা উৎসব ও দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, নবাগত ওসি গোলাম কিবরিয়া, বিএনপি নেতা শেখ সিরাজুল ইসলাম, মহিউদ্দিন সিদ্দিকী, ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক বাবু, দেবহাটা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসরিন জাহান, দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বকুল, নওয়াপাড়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোনায়েম হোসেন, উপজেলা জিয়া পরিষদের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক ইয়াছিন আলী প্রমুখ।
লোহাগড়া (নড়াইল): লোহাগড়া উপজেলা ও পৌর বিএনপিসহ সকল অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে সকালে লোহাগড়ার সিএনবি চৌরাস্তা থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে লক্ষীপাশা চৌরাস্তা হয়ে আরএল পাশা স্কুলে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেয় জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার এজাজুল হক বাবু, টিপু সুলতান, লোহাগড়া উপজেলা সভাপতি আহাদুজ্জামান বাটু, সাধারণ সম্পাদক কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিম, পৌর সভাপতি মিলু শরিফ, সাধারণ সম্পাদক মসিয়ার রহমান সান্টুসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নববর্ষ উপলক্ষ্যে লোহাগড়া শহরে শ্রমিকদলের আহবায়ক আকতার হোসেন ও সদস্য সচিব শহিদের নেতৃত্বে একটি র্যালি শহরের প্রধান পধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে লোহাগড়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে নানা কর্মসূচির মধ্যে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়।
এদিকে আরএল পাশা বিদ্যালয়ে বটমুলে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কেশবপুর (পৌর) : কেশবপুরে সকালে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ উপলক্ষ্যে বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেকসোনা খাতুন বাংলা নববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ, কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজাদ, সহসভাপতি আলাউদ্দিন আলা, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুস সামাদ বিশ্বাস প্রমুখ। কেশবপুর শিশু একাডেমির আয়োজনে চিত্রাংকন, রচনা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএনও রেকসোনা খাতুন, উপজেলা শিশু বিষযক কর্মকর্তা বিমল কুন্ডু প্রমুখ। এর আগে চারুপীঠ একাডেমির উদ্যোগে পৌরসভা চত্বরে বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে প্রভাতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সহকারী অধ্যাপক তাপস মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা বিমল কুমার কুন্ডু, জ্যেষ্ঠ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ বিশ্বাস, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রুপালী রানী, পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা সুজন কুমার চন্দ্র ও শামীম আখতার মুকুল। স্বাগত বক্তব্য দেন, চারুপীঠ একাডেমির পরিচালক উৎপল দে।
শ্রীপুর (মাগুরা) : সকাল সাড়ে ৮ টায় উপজেলা চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের এসে শেষ হয়। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা, সাপ খেলা, লোকজ মেলা, যেমন খুশি তেমন সাজ, রচনা প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়। এ সকল অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাখী ব্যানার্জীর সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার একান্ত সহকারী মোয়াজ্জেম হোসেন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস, শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ইদ্রিস আলী, শ্রীপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ নির্মল কুমার সাহা, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আশরাফুল আলম জোয়ারদার, শ্রীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ড. মুসাফির নজরুল, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ, যুব উন্নয়ন অফিসার রিয়াজুল আলম, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোল্যা মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। পরে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক ও শ্রীপুর প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি আশরাফ হোসেন পল্টুর সঞ্চালনায় ও একাডেমির শিল্পিবৃন্দ এবং স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পিদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে অতিথিগণ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার প্রদান করেন।
অপরদিকে, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে। শোভাযাত্রাটি শ্রীপুর উপজেলা মিনি স্টেডিয়ামে আলোচনা সভায় মিলিত হয়। পরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জেলা আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ হাসান টগর, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শ্রীকোল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফুল আলম জোয়ার্দার, সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বদরুল আলম হিরো, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ খোন্দকার আব্বাস উদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুন্সি রেজাউল করিম, সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুব-উর-রহমান, সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার আশরাফুল ইসলাম নালিম, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্যা খলিলুর রহমানসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
শরণখোলা (বাগেরহাট) : শরণখোরায় সকালে উপজেলা প্রশাসন, শরণখোলা থানা পুলিশ, উপজেলা প্রেসক্লাব, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক সংগঠনের সমন্বয়ে বর্ণাঢ্য র্যালি রায়েন্দা পাইলট স্কুলের সামনে থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে রায়েন্দা পাইলট হাই স্কুল মাঠে মিলিত হয়। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুদীপ্ত কুমার সিংহ ও শরণখোলা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। পরে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
শালিখা : শালিখা উপজেলা প্রশাসন সকালে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মেলার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি,,আড়পাড়া সরকারি আইডিয়াল হাই স্কুল, আড়পাড়া ডিগ্রি কলেজ, মহিলা কলেজসহ বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও সংগঠন পৃথক কর্মসূচি পালন করে। বুনাগাতী ডিগ্রী কলেজে বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে প্রভাষক মীর ইব্রাহিম হোসেন বেল, জামরুল, জাম, কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করেন।