Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒যশোর চেম্বারের মতবিনিময়সভা

বিদ্যুৎ-গ্যাস সাপ্লাই নিশ্চিত করতে না পারলে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে না : আমীর খসরু

এখন সময়: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি , ২০২৫, ০৬:২৩:১৪ পিএম

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপিকে সংস্কারের ব্যাপারে কারও ছবক নেয়া লাগবে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর যত সংস্কার হয়েছে ৯০ শতাংশ বিএনপি বাস্তবায়ন করেছে।

তিনি মঙ্গলবার দুপুরে যশোরে এক মতবিনিময়  সভায় এই মন্তব্য করেন। যশোর শহরের একটি হোটেলে “খুলনা বিভাগের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক অঙ্গীকার” শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সংস্কার অনেক দলের কাছে নতুন কিছু হতে পারে; তবে বিএনপির জন্য নতুন কিছু না। বিএনপি একমাত্র দল বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ৯০ শতাংশ সংস্কার যা করা প্রয়োজন সেটা বিএনপিই করেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ যেখানে এসেছে, এটা বিএনপির সংস্কারের কারণেই। সেটা শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমানের একদলীয় শাসন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র; সরকার চালিত মুক্ত অর্থনীতি থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি থেকে। প্রতিটি পদক্ষেপে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ এখানে এসেছে। আমরা একটি শক্তিশালী অর্থনীতি করেছিলাম; সেটা অব্যাহত থাকলে অনেক আগেই উন্নতশীল দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ। কিন্তু বিগত সময়ে লুটপাটের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। সুতরাং বিএনপিকে সংস্কারের ব্যাপারে কারও কাছ থেকে ছবক নেয়া দরকার হবে না। আমরা আমাদের ৩১ দফা শুধু দেই নাই; তার আগে দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ মাধ্যমে দেশ সংস্কারের প্রস্তাব তুলে ধরে ছিলেন। সেখানে দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না, দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সবগুলো দেয়া হয়েছে ছয় বছর আগে। আর দেড় বছর আগে ৩১ দফা তৈরি করেছি, আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে যারা সংশ্লিষ্ট ছিলো তাদের মতামতের ভিত্তিতে। সকলের মিলেই জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

নতুন ভ্যাট ও শুল্কে আরো চাপে পড়বে মানুষ উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, মানুষ নিত্যপণ্যে দামে নাকাল হয়ে পড়েছে। দু’বেলা খেতে পারছেনা তারা। টিসিবির ট্রাকের লাইনে মধ্যবিত্তরা দাঁড়াচ্ছেনা। অনেকের দৈনন্দিন জীবন চালাতে কঠিন হয়ে পড়েছে মূল্যস্ফীতির কারণে। এই কর ভ্যাট দরিদ্র সীমার নিচে যাবে অকল্পনীয়। ফলে এই সরকারকে বলছি, কর-ভ্যাট প্রত্যাহার করেন। আপনাদের এখন করা উচিত, স্বৈরাচার সরকারের বাজেট বাতিল করা। আপনারা এখন অন্তর্বর্তী বাজেট ঘোষণা করেন। কারণ স্বৈরাচারের বাজেট তো দুর্নীতির আর লুটপাটের বাজেট ছিল।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, দেশের সব চেম্বারকে অর্থনীতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করতে হবে। অর্জন করতে হবে সক্ষমতা। নতুন বাংলাদেশ গড়তে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ ব্যবসায়ীকভাবে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। এখানে ব্যবসা করা কঠিন ব্যাপার। সামনে মধ্যম আয়ের দেশে যেতে হলে সব কিছু সহজ ও ব্যবসা বন্ধব আইন করতে হবে। ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে না তুললে কর্মসংস্থান বাড়বেনা। এজন্য ব্যবসায়ীদেরকে সাহস করে শিল্প করার উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য সততা ও দেশেপ্রেম থাকতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের যোগাযোগ অবকাঠামোর উন্নয়ন, বিদ্যুৎ-গ্যাস সাপ্লাই নিশ্চিত করতে না পারলে ভালো শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবেনা। এজন্য আগে দরকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন। আগামীতে বিএনপির যদি ২শটিও আসন পায় তারপরও জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। জনগণের ম্যান্ডেট না থাকলে সংস্কার টেকসই কখনও হবেনা। সার, বীজ কৃষকের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখা প্রয়োজন।

যশোর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মিজানুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ও নির্বাহী সদস্য রফতানিকারক শ্যামল দাসের সঞ্চালনায় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি ও শিল্প উদ্যোক্তা সলিমুল হক কামাল, বিজিএমইএ সাবেক সহসভাপতি মাহমুদুল হাসান বাবুল, বেনাপোল সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সভাপতি শামসুর রহমান, যশোর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক তানভিরুল ইসলাম সোহান, ব্যবসায়ী চিন্ময় সাহা, বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি শাহজাহান হোসেন, জ¦ালানি তেল পরিবেশক সমিতির সভাপতি সাজ্জাদুল করিম কাবুল, রফতানিকারক আক্তারুজ্জামান তুহিন, খুলনা চেম্বারের পরিচালক হাফিজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া চেম্বারের পরিচালক খন্দকার জিয়াউল হক, বাগেরহাট চেম্বারের সভাপতি শেখ মঈনুদ্দিন আহমদ প্রমুখ। এসময় অন্যান্য চেম্বারের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।

মতিবিনিময় সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জেলার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ জেলায় বিভিন্ন সমস্যা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরে বলেন, যশোরে সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল ও নওয়াপাড়ায় নৌবন্দর রয়েছে। বাগেরহাটে মোংলা সুমদ্রবন্দর ও সাতক্ষীরায় রয়েছে ভোমরা বন্দর। বেনাপোল-ভাঙ্গা সড়ক ৬ লেনে উন্নীত করা গেলে এই অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা সচল হবে। নওয়াপাড়া নৌবন্দরে বড় জাহাজ ভিড়তে পারছেনা। মোংলা বন্দরে রফতানি পণ্য স্প্রিডি মানি দেয়া লাগে। যেখানে ভারত সরকার রফতানিতে ২০ শতাংশ প্রণোদনা দেয়, সেখানে বাংলাদেশ সরকার দেয় ১২ শতাংশ। বক্তারা আরও বলেন, বিগত ১৭ বছর ধরে ফেসিস্টরা অর্থনীতিকে ফোকলা করে দিয়েছে ডলার পাচার করে। খুলনা বিভাগের সব নিউজ প্রিন্ট ও জুটমিলগুলো ধ্বংস করে দিয়েছে বিগত সরকার। এখনও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণ পাচ্ছেনা। এরমধ্যে সরকার ভ্যাট বাড়িয়েছে। ভ্যাটের আওতা না বাড়িয়ে এনবিআর যারা ভ্যাট দিচ্ছে তাদেরকেই চেপে ধরছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। নতুন কোনা উদ্যোগ তারা নিচ্ছেনা।

সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম, সদস্য সচিব সাবেরুল হক সাবু, যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যশোর চেম্বারের সহসভাপতি জাহিদ হাসান, যুগ্ম সম্পাদক এজাজ উদ্দিন টিপু, নির্বাহী সদস্য গোলাম রেজা দুলু, যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি কল্যাণ সম্পাদক একরাম উদ দ্দৌলা, কোষাধ্যক্ষ ও দৈনিক স্পন্দনের নির্বাহী সম্পাদক মাহবুব আলম লাবলু, যশোর টায়ার ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি কাওছার আহমদ, যশোর মটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শাহিনুর হোসেন ঠান্ডু, যুগ্ম সম্পাদক রাজু আক্তার, কোষাধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান দিলু, মদিনা অটোসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হোসেন, রিপন অটোসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আইয়াজ উদ্দিন রিপন, নারী উদ্যোক্তা তনুজা রহমান মায়া প্রমুখ।

 

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)