স্পন্দন ডেস্ক: নতুন নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের বেছে নেওয়ার ভার যাদের ওপর বর্তাবে, সেই সার্চ কমিটিতে কারা থাকছেন, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ইতোমধ্যে বলেছেন, সার্চ কমিটিতে কারা থাকবেন, তা ঠিক হয়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টা সই করলেই দুয়েক দিনের মধ্যে কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হবে।
বিদ্যমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ’ আইন, ২০২২ অনুযায়ী শূন্য পদে নিয়োগ দিতে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি করার বিধান রয়েছে।
এ কমিটির সভাপতি হবেন প্রধান বিচারপতি মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারক। সদস্য হিসেবে থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত হাই কোর্ট বিভাগের একজন বিচারক, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাষ্ট্রপতি মনোনীত দুই জন বিশিষ্ট নাগরিক। রাষ্ট্রপতির মনোনীত ওই দুজন বিশিষ্ট নাগরিকের মধ্যে একজন হবেন নারী।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের একজন কর্মকর্তা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ইতোমধ্যে আপিল বিভাগ ও হাই কোর্ট বিভাগের একজন করে বিচারপতিকে সার্চ কমিটির জন্য মনোনীত করেছেন।
তাদের মধ্যে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী আপিল বিভাগে জ্যেষ্ঠতার বিচারে তৃতীয় এবং বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান হাই কোর্ট বিভাগে জ্যেষ্ঠতার বিচারে দ্বিতীয়।
সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের অনুমোদন পেলে বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীই হবেন সার্চ কমিটির সভাপতি। সব আনুষ্ঠনিকতা সারা হলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন করবে।
মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মো. নূরুল ইসলাম এবং সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান (পিএসসি) মোবাশ্বের মোনেম পদাধিকার বলে সার্চ কমিটির সদস্য হবেন।
আর রাষ্ট্রপতির মনোনয়নে কারা সার্চ কমিটিতে আসছেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য এখনও মেলেনি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সার্চ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবে। সার্চ কমিটি দায়িত্ব পাওয়ার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নতুন ইসি গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে নাম প্রস্তাব করবে।
এ আইনের অধীনে ২০২২ সালের নির্বাচন কমিশনই প্রথম নিয়োগ পেয়েছিল। সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত ১০ জনের নাম থেকে পাঁচজনকে বেছে নিয়ে নতুন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি।
সেই কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন সাবেক আমলা কাজী হাবিবুল আউয়াল।আর কমিশনার হিসেবে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবিব খান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা, অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের এক মাসের মাথায় ৫ সেপ্টেম্বর বিদায় নেয় কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন, যাদের অধীনে এ বছরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্র্বতীকালীন সরকার ইতোমধ্যে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। সেই সংস্কার শেষে নতুন ইসির অধীনে হবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন। অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের তরফে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর ‘ন্যূনতম ঐক্যমতের’ উপর নির্ভর করছে নির্বাচনের ‘টাইমলাইম’।
সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের নির্বাচনমুখী যাত্রা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
মঙ্গলবার সচিবালয়ের তিনি বলেন, “আমাদের নির্বাচন কমিশন গঠন করার যে সার্চ কমিটি, সেই সার্চ কমিটির গঠন করা হয়ে গেছে। আমি যতটুকু জানি, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় সিগনেচার করে দিলেই- হয়তো করেছেনও, আজকালের মধ্যে জেনে যাবেন। আমাদের সরকারের নির্বাচনমুখি প্রক্রিয়া গ্রহণ করার যে কাজ, তা শুরু হয়ে গেছে। নির্বাচনমুখি যাত্রা শুরু হয়ে গেছে বলতে পারেন।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, “এবার আমরা ভুয়া নির্বাচন করব না। একটা অসাধারণ সুন্দর, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করব।