Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

যশোরে লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য ৮৯ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক অবাধে চলছে

এখন সময়: রবিবার, ১৩ অক্টোবর , ২০২৪, ০৭:৪২:০৫ পিএম

 

বিল্লাল হোসেন: যশোরে হালনাগাদ লাইসেন্স ছাড়াই চলছে আড়াই শতাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সেবিকা, প্যাথলজিস্ট ও চিকিৎসার উন্নত পরিবেশ নেই। এদিকে, স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমতি ছাড়াই নতুন নতুন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেই কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

বিগত দিনে লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরে প্রতিবেদন পাঠানো ৮৯ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অধিকাংশ হঠাৎ করে যোগ্য হয়ে গেছে। কোনো রকম ত্রুটি সংশোধন ছাড়াই সেসব প্রতিষ্ঠানে আগের মতো কার্যক্রম চলছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

জানা গেছে, যশোর জেলায় বর্তমানে মোট ৩৫৯ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে ক্লিনিক ১৭০টি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার ১৮৯টি। খাতা কলমের বাইরে জেলায় আরও শতাধিক ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। সেখানে পুরোপুরি অবৈধভাবে কার্যক্রম চলছে।

সিভিল সার্জন অফিসের সূত্রমতে, বিগত দিনে অবৈধ একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্ধ ঘোষণা করা অবৈধ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো, যশোর শহরের মুজিব সড়কে অবস্থিত পিস হসপিটাল ছাড়াও তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রোটারি হেলথ সেন্টারের প্যাথলজি ল্যাব, ঘোপ জেল রোডের এমসি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেন্ট্রাল হসপিটালের প্যাথলজি ল্যাব ও ভোলা ট্যাংক রোডের নুরুল ইসলাম ডায়াবেটিক সেন্টার, মণিরামপুর উপজেলার মডার্ন ক্লিনিক, রাজগঞ্জ ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কপোতাক্ষ ক্লিনিক ,পারবাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রয়েল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, বেনাপোল পৌর শহরে বেনাপোল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, স্টার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ঝিকরগাছা উপজেলার ফেমাস মেডিকেল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ছুটিপুর প্রাইভেট ক্লিনিক, আয়েশা মেমোরিয়াল মেডিকেল সেন্টার, মোহাম্মদ আলী ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সীমান্ত ডায়াগনস্টিক এন্ড ডায়াবেটিস কেয়ার, ছুটিপুর প্রাইভেট ক্লিনিক, সালেহা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও আনিকা ক্লিনিক, বাঘারপাড়া উপজেলার হাজি ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

নিম্মমানের এসব প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম ও  ত্রুটির মধ্যে রোগীর অস্ত্রোপচার, চিকিৎসা ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হতো। মানসম্মত যন্ত্রপাতি বা ল্যাব টেকনোলজিস্ট ছিলো না কোনোটির। এ ছাড়া ভাড়া করে চিকিৎসক ডেকে অপারেশন করানো হতো। এসব অভিযোগে উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

সূত্রটি আরও জানায়, ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত ছিল ২৮৭ টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে নতুন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স গ্রহণ ও পুরাতন প্রতিষ্ঠানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঘোষণা অনুযায়ী সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়। এরমধ্যে ২৩৪ টি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষ লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করেন। বাকি ৫৩ প্রতিষ্ঠান মালিক সরকারি আদেশ প্রথম অবস্থায় মানেননি। যে কারণে প্রতিষ্ঠান মালিকদের কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করা হয়। এরমধ্যে ৩৬ টি প্রতিষ্ঠানের মালিক নোটিশের জবাব ছিলো অসন্তোষজনক। পরবর্তীতে সূর্যের হাসি ক্লিনিক ছাড়া সব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স পাওয়ার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে অনলাইনে আবেদন পাঠায়। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করে পক্ষে বিপক্ষে কর্তৃপক্ষের কাছে মতামত পাঠিয়ে দেয়া হয়।

সিভিল সার্জন অফিস আরও জানিয়েছে, মতামত প্রতিবেদনে জেলার ৮৯ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য বলে জানানো হয়। ওই সব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, সেবিকা ও প্যাথলজিস্ট নেই। এছাড়া নিম্নমানের অস্ত্রোপচার কক্ষ, প্যাথলজি বিভাগ নোংরা পরিবেশছাড়াও মানুষকে জিম্মি করে অর্থ আদায় করা হয়।  ফলে ৮৯  হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার লাইসেন্স পাওয়ার অযোগ্য বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরে প্রতিবেদন পাঠিয়েছিলেন সাবেক সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহিন। এসব নামমাত্র প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স না দেয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছিলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে হালনাগাদ লাইসেন্স ছাড়াই চলছে বেসরকারি হসপিটাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সেখানে চিকিৎসা সেবায় নানা ধরণের অনিয়ম হলেও দেখার কেউ নেই। আবার নতুন করে গড়ে ওঠা একাধিক ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ফ্রি-স্টাইলে চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে। মালিকপক্ষ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেই কার্যক্রম শুরু করলেও স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।

অভিযোগ উঠেছে, সিভিল সার্জন অফিসের জড়িত একজন কর্মচারীর সাথে এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিকদের সাথে সম্পর্ক রেখে অবৈধভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করেন। বিনিময়ে ওই কর্মচারীর মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা পৌঁছে দেয়া হয়। ফলে তারা লাইসেন্স ছাড়া কার্যক্রম শুরুর সাহস পেয়ে থাকে।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধভাবে পরিচালনা হওয়া ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে।  সরকারের নির্দেশনার বাইরে কোন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সুযোগ দেয়া হবে না।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)