ভুয়া নিবন্ধন সনদে ১৪ বছর চাকরি করা শিক্ষককে নিয়োগ, আদালতে মামলা

এখন সময়: শনিবার, ২৭ জুলাই , ২০২৪, ১০:৪০:১৮ এম

 

নিজস্ব প্রতিবেদক, মণিরামপুর: ভুয়া নিবন্ধন সনদে সহকারী শিক্ষক পদে ১৪ বছর চাকরি করা আব্দুল মালেককে মণিরামপুরের বোয়ালিয়াঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেছেন মণিরামপুর উপজেলার উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ বিশ্বাসের ছেলে বিএম মোস্তফা জামান মিলন। ওই বিদ্যালয়টিতে আব্দুল মালেককে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

মামলায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুদ্দুস আলম, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার ও  শিক্ষক আব্দুল মালেক ও সাবেক সভাপতি জিএম মঞ্জুরুল হাসান সাজ্জাদকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই যশোরকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর।

মামলায় মোস্তফা জামান মিলন বলেছেন, তিনি এ বিদ্যালয়টিতে ২০২১ সালের ২৮ জুন থেকে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তীতে জিএম মঞ্জুরুল হাসান সাজ্জাদ একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ সালের ২৮ ডিসম্বর পর্যন্ত সভাপতি ছিলেন। এ সময় বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ছিলেন মোছা নাছরিন। যিনি বর্তমানে উপজেলা খামারবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে রয়েছেন। মোছা. নাছরিন খামারবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চলে যাওয়ায় পদটি শূন্য হয়ে যায়। তখন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুদ্দুস আলম সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দিতে  সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যেসব প্রার্থী এ পদের জন্য আবেদন করেন তার মধ্যে আব্দুল মালেকের আবেদন ছিল না। পরবর্তীতে আব্দুল মালেকের আবেদন ‘ব্যাক ডেটে’ গ্রহণ করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুদ্দুস আলমসহ বিবাদীরা যোগসাজসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ভুয়া নিবন্ধনধারী শিক্ষক আব্দুল মালেককে নিয়োগ দেন।

মামলায় আরো বলা হয়, বিষয়টি জানার পর বাদীসহ এলাকার সুধীজনেরা বিদ্যালয়ে যান। তার জানতে পারেন ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর আব্দুল মালেককে যোগদান দেখানো হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আব্দুল মালেক একটি ভুয়া নিবন্ধনের মাধ্যমে উপজেলার খেদাপাড়া ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসায় দীর্ঘ ১৪ বছর সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করেন। চাকরি নেয়ার সময় তার দাখিলকৃত নিবন্ধন রোল নম্বর ৩১৯১২৫৭১, রেজিস্ট্রে,ন নম্বর ৯০০০২৬৬৩/২০০৯।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল মালেক বলেন, আমার সব কাগজপত্র ঠিক আছে। এক শ্রেণির ব্যক্তিরা আমার বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লেগেছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কুদ্দুস আলম জানান, এ নিয়োগের বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার এবং এক শীর্ষ জনপ্রতিনিধি ভাল বলতে পারবেন। এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এ নিয়োগের ব্যাপারে আমি কেবল কর্তৃপক্ষের আদেশ পালন করেছি। তা ছাড়া নিবন্ধন যাচাই-বাছাইয়ের সুযোগ না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।

অপর এক প্রশ্নে তিনি  বলেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ নিয়োগের বিষয়ে যা বলছেন, তা সঠিক নয়, তিনি মিথ্যা বলেছেন।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, এ নিয়োগ এখনও চূড়ান্ত করা হয়নি।