বাঘারপাড়ায় সাবমারসিবল পাম্প বসানোয় গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহারের অভিযোগ

এখন সময়: মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল , ২০২৪, ০৩:১২:২২ এম

 

বাঘারপাড়া প্রতিনিধি : যশোরের বাঘাড়রপাড়া উপজেলায় সাবমারসিবল পানির পাম্প বসানোর সময় বেন্টোনাইট-ক্লে’র (রাসায়নিক মিশ্রণ) বদলে গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহার করে ২৩৪টি সাবমারসিবল পাম্প বসিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ কাজে ব্যবহারের জন্য ‘বেন্টোনাইট-ক্লে’ উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে আনাই হয় না।

উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা যায়, নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এ উপজেলায় ২৩৪ টি সাবমারসিবল পানির পাম্প (নলকূপ) বরাদ্দ দেয় অধিদপ্তর। প্রতি নলকূপ স্থাপনে গ্রাহককে ১০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে চালান জমা দিতে হয়। এরপর সরকার ঠিকাদারের মাধ্যমে ছয়শত ফুট পাইপ, ১ হর্স পাওয়ার পাম্প, ১০০০লিটারের ১টি ট্যাংকি (পানি ধরে রাখার জার), ২০ কেজি বেন্টোনাইট -ক্লে ও ৫ ফিট উচ্চতার ১০ ইঞ্চি গাঁথুনি স্ট্যান্ড সরবরাহ করে। এতে প্রতিটি নলকূপ স্থাপনে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ টাকা।

অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, দরপত্র চুক্তি মোতাবেক নলকূপ খননের সময় অবশ্যই বোরিং ফ্লুইড হিসাবে বেন্টোনাইট -ক্লে মিশ্রিত পানি ব্যবহার করতে হবে। বোরিং ফ্লুইড হিসাবে গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহার করা যাবে না। নলকূপ স্থাপনের সময় মনিটরিং এর দায়িত্বে নিয়জিত কর্মকর্তা ও মেকানিক নলকূপ খননের সময় রোরিং ফ্লুইড হিসাবে বেন্টোনাইট-ক্লে মিশ্রিত পানি ব্যবহার নিশ্চিত করবেন। গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহার করলে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। একই সাথে বলা হয়েছে নলকুপ স্থাপনের সময় গোবর পানি ব্যবহারের কারণে ভূগর্ভের পানি দূষণে স্থায়ী সমস্যা হতে পারে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

জানা গেছে, আব্দুল ওহাব এন্টারপ্রাইজ ঢাকা ও মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ যশোর নামের দু’টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নলকূপ স্থাপনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। অধিদপ্তরের আদেশ উপেক্ষা করে এ সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে নলকূপ বসানোর সময় রোরিং ফ্লুইড হিসাবে গোবর মিশিয়ে নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করছে।

নলকূপ বরাদ্দ পাওয়া একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করেছেন, উপজেলা জনস্বাস্থ্যের লোকজন বেন্টোনাইট-ক্লে মিশ্রিত পানি ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করছে। এমনকি বোরিংয়ে বেন্টোনাইট-ক্লে মিশ্রিত করলে নলকূপ নষ্ট হয়ে যাবে বলেও গ্রাহকদের বোঝানো হচ্ছে। পাশাপাশি ঠিকাদারের শ্রমিকরা গোবর ব্যবহার না করতে দিলে বোরিং হবে না এমন ভয়ভীতি দেখানোরও অভিযোগ উঠেছে। 

চাড়াভিটা এলাকার অরুন দে জানান, তিনি উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের মাধ্যমে একটা সরকারি নলকূপ পান। নলকূপ বসানোর সময় ঠিকাদারের লোকজন গোবর ব্যবহার করতে বাধ্য করছেন। গোবর ছাড়া নলকূপ বসাতে রাজি হচ্ছেন না তারা।

 আব্দুল ওহাব এন্টারপ্রাইজ মালিক শাহাদাত হোসেন ও মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ মালিক আলমগীর কবির সুমন অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে জানান, বেন্টোনাইট -ক্লে ব্যবহার করে নলকূপ বোরিং করা হচ্ছে। গোবর ব্যবহার হচ্ছে না । 

 উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবু হানিফ জানান, ঠিকাদারকে বেন্টোনাইট-ক্লে’র দাম বাদ রেখে বিল পরিশোধ করা হয়। অধিদপ্তরের চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নলকূপ বোরিংয়ে গোবর ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। বেন্টোনাইট-ক্লে ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।