কেশবপুর প্রতিনিধি : যশোরের কেশবপুর উপজেলায় চুরির ঘটনার সালিশের নামে লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চোর ও সালিশকারীদের বিরুদ্ধো থানায় পৃথক তিনটি অভিযোগ করা হয়েছে।
থানায় করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, রাজনগর বাঁকাবরশী গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মোস্তফা সরদারের ছেলে জিহাদ ও তার সহযোগী একই গ্রামের জোবায়ের দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই করছে। গত ১৭ আগস্ট দিনে দুপুরে রাজনগর বাঁকাবরশী গ্রামের জামসেদ মোড়লের বাড়ি থেকে বাইসাইকেল চুরি করার সময় জিহাদ ও জোবায়েরকে স্থানীয় লোকজন হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে মারধর করে উত্তম মাধ্যমের এক পর্যায়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে তাদের তুলে দেয়া হয়। সেময় তারা গত ২০ জুন রাজনগর বাঁকাবরশী গ্রামের মৃত মকছেদ মোড়লের ছেলে প্রতিবন্ধী মশিয়ার মোড়লের মোটরভ্যান চুরি, গত ০৮ আগস্ট একই এলাকার বজলু রহমান সরদারের ছেলে সবুজের বাড়ি থেকে বিদেশি জাতের মুরগি চুরি, গত ১৩ জুলাই নতুনহাট চিনিগোলা পুকুর পাড় খেকে বড় মাদারডাঙ্গা গ্রামের অনিল মন্ডলের ছেলে মদনের মোটরভ্যান, একই গ্রামের পাগলা মাসুসের বাড়ি থেকে চাল চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধের কথা স্বীকার করে।
এ সময় স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার মধ্যস্থতায় লক্ষাধিক টাকার চুরিতে জড়িত এই চোরেরা ছাড়া পায়। পরে ২২ আগস্ট স্থানীয় মাঝের পাড়া মসজিদের সামনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের উপস্থিতিতে চুরির ঘটনায় এক সালিশ হয়। উভয়পক্ষের কথা শোনার পর চোরদের ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন সালিশে উপস্থিত মাতব্বররা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শালিসে জরিমানা শুধুমাত্র লোক দেখানো জরিমানা করে আগেই চোরদের কাছ থেকে মাতবররা প্রায় লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্য করেছে।
শালিশের মাতব্বরদের কাছ থেকে জরিমানার টাকা না পেয়ে অবশেষে প্রতিবন্ধী ভ্যানচালক মশিয়ারের স্ত্রী রিজিয়া বেগম, সবুজ সরদার ও মদন মন্ডল কেশবপুর থানায় চোর ও মাতবরদের বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি অভিযোগ করেছেন।
রিজিয়া বেগম দৈনিক স্পন্দনকে জানান, আমার স্বামীর ভ্যানের দাম ৩৭ হাজার টাকাসহ অন্যান্য চুরির জন্য মাতব্বররা চোরদের কাছ থেকে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার বাণিজ্য করেছে। আমার প্রতিবন্ধী স্বামীও তাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি। টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে অবশেষে বাধ্য হয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান বাবু জানান, চুরির ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ করা হয়েছিল। তবে লক্ষাধিক টাকা বাণিজ্যের কথা সত্য নয়। সামান্য কিছু টাকা লেনদেন হয়েছে সে টাকা চুরি যাওয়া ব্যক্তিদের দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা কেশবপুর থানার এসআই তাপস কুমার দৈনিক স্পন্দনকে বলেন, তদন্ত চলছে,। ঘটনা সত্য প্রমাণিত হলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।