যশোর জেনারেল হাসপাতাল

পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডের কার্যক্রম না থাকায় অহেতুক রোগী ভর্তি বাড়ছে

এখন সময়: বুধবার, ২৪ এপ্রিল , ২০২৪, ১০:০৩:৫৬ এম

 

 

বিল্লাল হোসেন: যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে একটি পর্যবেক্ষণ (অবজারভেশন) ওয়ার্ড থাকলেও সেটির কোনো কার্যক্রম নেই। রোগীর অসুস্থতার মাত্রা বুঝে ভর্তি রেখে; না প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেয়া হবে সেটি নির্ধারণে ওয়ার্ডটি স্থাপন করা হয়। অনেক সময় পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডে রেখে রোগীর অবস্থা বুঝে চিকিৎসা না দিয়েই সরাসরি ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছে। অথচ অহেতুক রোগী ভর্তি বন্ধ করতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওয়ার্ডটি চালু করা হয়। 

হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সরকারি এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীদের জন্য পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড তৈরির নির্দেশনা পত্র আসে। নির্দেশনা পত্রে উল্লেখ করা হয়, জরুরি বিভাগে আসা সব রোগীকে ভর্তি করা যাবে না। রোগীর শারীরিক অবস্থা বুঝে দায়িত্বরত চিকিৎসকের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তাকে ভর্তি করতে হবে না, পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসককে ‘অনকলে ডাকতে হবে। জরুরি বিভাগে রোগীকে কয়েক ঘন্টা পর্যবেক্ষনে রাখার পর যদি শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয় তাহলে ভর্তি না করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছাড়পত্র দিতে হবে। এতে ওয়ার্ডে বাড়তি রোগীর চাপ কমে যাবে।

এই নির্দেশ পেয়ে তখনকার ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর রহিম মোড়লের নির্দেশে ২০ মার্চ অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম ফারুককে সভাপতি করে ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। জরুরি বিভাগে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড কীভাবে তৈরি করা যায় সে বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে প্রতিবেদনে দেয় ওই কমিটি। পরে জুলাই মাসে জরুরি বিভাগে নামমাত্রভাবে অবজারভেশন ওয়ার্ড তৈরি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকের কক্ষের দরজার সামনে লাল কালি দিয়ে লিখে দেয়া হয় অবজারভেশন কক্ষ। ভিতরে রাখা ছিল ২টি বিছানা। চিকিৎসার পরিবেশ ছিল না। এক কথায় সেখানে কোন সুবিধা ছিলো না।

এদিকে, ২০১৭ সালের ২৩ অক্টোবর স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক ম্যানেজমেন্ট) অধ্যাপক ডা. কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতার পরিদর্শনে আসেন। ওই সময় তিনি পূনাঙ্গভাবে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড তৈরি করে কার্যক্রম চালুর নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর জরুরি বিভাগে তৈরি করা অবজারভেশন ওয়ার্ডে  রোগী রেখে চিকিৎসাসেবা ব্যবস্থা চালু করা হয়। তালাবদ্ধ কক্ষ থেকে দুটি শয্যা বের করে বাইরে শয্যা পাতানো হয়। শয্যায় রোগীকে পর্যবেক্ষণে রাখার পাশাপাশি চিকিৎসাসেবাও দেয়া হতো।

তবে বর্তমানে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ডটি আবার নামমাত্র হয়ে গেছে। সেখানে বরাদ্দ নেবুলাইজার ও  ইসিজি মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জামগু বিকল হয়ে গেছে।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আব্দুস সামাদ জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পর্যবেক্ষণ ওয়ার্ড তৈরি করে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু সেখানে কার্যক্রম নামমাত্র হওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে জানাতে পারবেন।