যশোরে ব্যবসায়ির ৭৪ ভরি সোনা ছিনতাই

সোনা ছিনতাইকারীর বাড়ি থেকে ১৫শ’ রাউন্ড গুলি-অস্ত্র উদ্ধার, দুই জুয়েলার্স মালিক আটক

এখন সময়: শুক্রবার, ২৯ মার্চ , ২০২৪, ০৭:০১:৫৮ এম

নিজস্ব প্রতিবেদক : যশোরে পাটকেলঘাটার ব্যবসায়ির ৭৪ ভরি সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনায় আটক শাহরিয়ার আলম খাঁনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ১৫শ রাউন্ড রাইফেলের অবৈধ গুলি, ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত তার বৈধ ১টি রাইফেলসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ।

এসময় দুইটি ম্যাগজিন, ৩০টি গুলির বক্স, ২৮টি ২২ বোরের গুলির খোসা, একটি মোবাইল ফোন, একটি অস্ত্রের লাইসেন্স, একটি কীট বক্স ও একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়।

এছাড়া অবৈধভাবে সোনা কেনার অভিযোগে শহরের চুড়িপট্টির নিলয় জুয়েলার্সের মালিক নিশিত কুমার সরকার ও কাপুড়িয়াপট্টির বিশ্বরূপ জুয়েলার্সের মালিক কার্তিক চন্দ্র চন্দকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গত শনিবার বিকেলে তাদের আটক এবং ওই সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। 

সোনা ছিনতাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের এসআই নুর ইসলাম জানিয়েছেন, তারা সোনা ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত ২ জনকে এবং ছিনতাইকৃত সোনা কেনার অপরাধে আরো ৩ জনকে গত শনিবার আটক করেন।

এরা হলেন, সোনা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য যশোর শহরের বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডের মৃত শামসুল আলম খানের ছেলে বর্তমানে ষষ্টিতলা বুনোপাড়া রোডের বাবলুর ৩ তলা ভবনের দ্বিতীয়তলার ভাড়াটিয়া শাহরিয়ার আলম খাঁন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা কাটাখালী গ্রামের শেখ আব্দুস সামাদের ছেলে বর্তমানে যশোর শহরের বেজপাড়া পিয়ারী মোহন রোডের প্রফেসর ওয়ালিউর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলাম নয়ন, লোন অফিসপাড়ার উমেশ চন্দ্র লেনের শম্ভু দত্তের ছেলে বাবু দত্ত, বেজপাড়া নলডাঙ্গা রোডের মৃত নিমাই কুমার সরকারের ছেলে নিশিত কুমার সরকার ও বেজপাড়া শ্রীধর পুকুরপাড় এলাকার মৃত কৃষ্ণ চন্দ্র চন্দের ছেলে কার্তিক চন্দ্র চন্দ।

ডিবি পুলিশ জানায়, আটক ছিনতাইকারী শাহরিয়ার আলম খাঁনের স্বীকারোক্তিতে গত শনিবার বিকেলে ষষ্টিতলায় তার ভাড়া বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বৈধ একটি দশমিক ২২ বোরের রাইফেল ও ২টি ম্যাগজিন জব্দ করা হয়। এছাড়া সেখান থেকে দশমিক ২২ বোর রাইফেলের অবৈধ ১৫শ রাউন্ড গুলি এবং ২৮ রাউন্ড গুলির খোসা ও ৪টি মাঙ্কি টুপি জব্দ করা হয়।

এসআই মো. নুর ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আটক শাহরিয়ার আলম খান ডিবি পুলিশকে জানান যে, সোনা বিক্রির ৪০ লাখ টাকার মধ্যে তিনি ১৮ লাখ টাকা ভাগ পেয়েছিলেন। এই টাকার মধ্যে ১৩ লাখ টাকা দিয়ে তিনি একটি মাইক্রোবাস কিনেছেন। পরে তার ওই মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা জানান, সোনা বিক্রির বাকি ২২ লাখ টাকা ও ২৪ ভরি সোনা ছিনতাই মিশনে অংশ নেয়া রামপ্রসাদ দত্ত ওরফে রাম বাবু নামে চক্রের আরেক সদস্যের কাছে রয়েছে। রাম বাবু মণিরামপুর উপজেলার পারখাজুরা গ্রামের মৃত নিতাই চন্দ্র দত্তের ছেলে।

ডিবি পুলিশ জানায়, লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে বৈধ অস্ত্র ছিনতাই কাজে ব্যবহার এবং অবৈধ ১৫শ রাউন্ড গুলি জব্দের ঘটনায় আটক শাহরিয়ার আলম খান এবং পলাতক রাম বাবুসহ আরো ৩ আসামির বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন এসআই মো. নুর ইসলাম। অপর আসামিরা হলেন, শার্শার সেতাই গ্রামের মৃত নাজির উদ্দিন শেখের ছেলে দেলোয়ার হোসেন, শার্শা এলাকার  বাবু গাজী ও কুষ্টিয়ার দক্ষিণ মিলপাড়ার ফজলুল খান বাবুর ছেলে রাকিবুল খান।

এদিকে রোববার আটক ৫ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে এর মধ্যে শাহরিয়ার আলম খান, সাইফুল ইসলাম নয়ন ও বাবু দত্ত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার দালাল তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন।