Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

নৃত্য, অভিনয় ও সংগীতে একুশে পদক পেলেন তিনজন

এখন সময়: শুক্রবার, ৯ মে , ২০২৫, ০৫:০৬:৩১ পিএম

বিনোদন প্রতিবেদক : নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতউল্লাহ, প্রয়াত গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু, অভিনেতা আফজাল হোসেনসহ এবার ২৪ জন একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ২০২২ সালের জন্য মনোনীতদের নাম জানানো হয়েছে; যার মধ্যে সর্বোচ্চ সাতজন মনোনীত হয়েছেন শিল্পকলা থেকে।

এ বছর নৃত্যের জন্য মনোনীত হয়েছেন জিনাত বরকতউল্লাহ; স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় নৃত্য চর্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি।

ক্যারিয়ারের শুরুতে ভরতনাট্যম, কত্থক, মণিপুরী- উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় নৃত্যের তিন ধারায় তালিম নিলেও জিনাত বরকতুল্লাহ পরে লোকনৃত্যকেই তার জীবনের পাথেয় করে নেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ তিনি যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে। পরে তিনি শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগের অন্তর্ভুক্ত প্রডাকশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।

নৃত্যের পাশাপাশি আশির দশকের শুরু থেকে অভিনয় করেছেন জিনাত।

জিনাত ও তার স্বামী বাংলাদেশের টেলিভিশনের প্রযোজক প্রয়াত মোহাম্মদ বরকতউল্লাহর সংসারে দুই মেয়ে বিজরী বরকতু্ল্লাহ ও কাজরী বরকতুল্লাহ।

সংগীতের জন্য মনোনীত হয়েছেন গীতিকার নজরুল ইসলাম বাবু (মরণোত্তর); ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’, ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’, ‘আমায় গেঁথে দাও না মাগো একটা পলাশ ফুলের মালা’সহ কয়েকটি দেশাত্মবোধক গানের রচয়িতা তিনি।

১৯৯০ সালে ১৪ সেপ্টেম্বর মাত্র ৪১ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে দু হাতে লিখে গেছেন বাবু; যার লেখা বেশিরভাগ গান এখনও মানুষের মুখ থেকে মুখে ফেরে।

স্বাধীনতার পর জামালপুর থেকে থেকে কবি হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকায় এসে সুরকার শেখ সাদী খানের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তার হাত ধরেই গান লেখা শুরু করেন বাবু। পরে শেখ সাদী খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে উপহার দিয়েছেন সুবীর নন্দীর কণ্ঠে ‘হাজার মনের কাছে প্রশ্ন রেখে’, শাম্মী আকতারের কণ্ঠে ‘মনে হয় হাজার ধরে দেখি না তোমায়’, আশা ভোসলে ও বেবী নাজনীনের ‘কাল সারা রাত ছিল স্বপনেরও রাত’, কুমার শানুর কণ্ঠে ‘আমার মনের আকাশে আজ জ্বলে শুকতারা’, হৈমন্তী শুক্লার কণ্ঠে ‘ডাকে পাখি খোল আঁখি’র মতো জনপ্রিয় সব গান।

অমলিন সব গান লিখে গেলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে কোনো স্বীকৃতি না পাওয়ার আক্ষেপ ছিল বাবুর পরিবারের।

সংগীতে বাবুর সঙ্গে মনোনীত হয়েছেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ও গণসংগীতশিল্পী ইকবাল আহমেদ। যিনি স্বাধীনতার জন্য গান গেয়ে পাকিস্তানিদের রোষানলে পড়েছিলেন; পাকিস্তানিদের অমানবিক নির্যাতনের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাকে।

ওয়াহিদুল হক, সনজীদা খাতুন, জাহিদুর রহিমের কাছে রবীন্দ্রসংগীত ও শেখ লুৎফর রহমানের কাছে গণসঙ্গীতের দীক্ষা নিয়েছেন ইকবাল। ১৯৭০ সালে এইচএমভির ব্যানারে প্রকাশিত ইকবাল আহমেদের গাওয়া রবীন্দ্রসংগীত ‘জানি জানি গো’ টপচার্টে উঠে এসেছিল।

তিনি দুই মেয়েসহ সপরিবারে সুইজারল্যান্ডে বসবাস করছেন; বছর তিনেক আগে একবার ঢাকায় এসে জাতীয় জাদুঘরে গান পরিবেশন করেছিলেন।

তাদের সঙ্গে এবার পদক পাচ্ছেন একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান বেনু; যিনি বেনু ভাই নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প, মুক্তাঞ্চল ও শরনার্থী শিবিরে গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণায় ভূমিকা রেখেছেন ও শরনার্থী শিবিরের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন তিনি।

কলকাতার লেলিন রোডে গঠিত সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার’ সেক্রেটারির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

১৯৭৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন তিনি।

অভিনয়ের জন্য একুশে পদকে মনোনীত তিন জনের মধ্যে একজন খালেদ মাহমুদ খান (মরণোত্তর); আশির দশকে মঞ্চনাটকের মধ্য দিয়ে অভিনয়ে যাত্রা করেন তিনি।

হুমায়ূন আহমেদের ধারাবাহিক নাটক 'এইসব দিনরাত্রি' ও ইমদাদুল হক মিলনের 'রূপনগর' নাটকে অভিনয় করে সে সময় দারুন জনপ্রিয়তা পান তিনি। রূপনগর নাটকে ‘ছি, ছি, তুমি এতো খারাপ’ সংলাপটি সেই সময় দর্শকদের মুখে মুখে ফিরত।

নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ের হয়ে মঞ্চে দেওয়ান গাজীর কিসসা, নূরুল দীনের সারাজীবন, দর্পনসহ ৩০টির বেশি নাটকে অভিনয় করেছেন। নির্দেশনা দিয়েছেন পুতুল খেলা, ক্ষুধিত পাষাণসহ ১০টির বেশি নাটক।

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক তার স্ত্রী। কণ্ঠশিল্পী ফারহিন খান জয়িতা তাদের সন্তান।

২০১৩ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে খালেদ খান মারা যান।

অভিনয়ের জন্য মনোনীত হয়েছেন আফজাল হোসেন; সত্তরের দশকের মাঝামাঝির দিকে থিয়েটারে ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল তার।

পরবর্তীতে বিটিভিতে নাটকে অভিনয় করে দর্শকমহলে পরিচিতি পান। নাটকের বাইরে ‘দুই জীবন’,‘পালাবি কোথায়’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন।

আশির দশকের মাঝামাঝির দিকে বিজ্ঞাপন নির্মাণে যুক্ত হন; পাশাপাশি তিনি ছবিও আঁকেন; লেখালেখিও করেন।

মঞ্চ, টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রের অভিনেতা মাসুম আজিজকে একুশের পদদের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।

তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মাসুম আজিজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার চোখে পানি চলে এসেছে। আমি এই আনন্দ ভাষায় বোঝাতে পারব না। সরকারকে ধন্যবাদ। অভিনয়ের জন্য আমি অনেক সংগ্রাম করেছি। জীবনের সব বাদ দিয়ে থিয়েটার করেছি। সেই স্বীকৃতি পেলাম। স্বীকৃতি পেতে কার না ভালো লাগে!”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পরবর্তীতে অভিনেতা, নাট্যকার ও নির্দেশক হিসেবে মঞ্চনাটকে খ্যাতি পান।

হুমায়ূন আহমেদের ‘উড়ে যায় বকপক্ষী’, সালাউদ্দিন লাভলুর ‘তিন গ্যাদা’সহ অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি।

‘ঘানি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য ২০০৬ সালে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে রাইসুল ইসলাম আসাদের সঙ্গে যুগ্মভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন মাসুম আজিজ।

‘গহীনে শব্দ’, ‘এই তো প্রেম’, ‘গাড়িওয়ালা’সহ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

সরকারি অনুদানে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘সনাতন গল্প’ পরিচালনা করেছেন। ছবিটি ২০১৮ সালে মুক্তি পায়।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)