রাকিব হোসেন, বাঘারপাড়া : পৌষের কনকনে শীত। সবাই যখন নরম বিছানায় গরম কাপড়ে শুয়ে আছে, ঠিক তখন ভিন্ন এক চিত্র বাঘারপাড়ার বাকড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চত্বরে। প্রাণের টানে বন্ধুত্বের টানে দেশ বিদেশ থেকে ছুটে এসেছেন এই স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। কর্ম সূত্রে এক বন্ধুর সাথে আরেক বন্ধুর দেখা হয়না বছরের পর বছর। তাই যখন ঐতিহ্যবাহী এই প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে প্রথমবারের মত পুনর্মিলনী আয়োজন হচ্ছে তাই কেউ আর ঘরে বসে থাকেনি। এমনই এক বন্ধুত্বের এবং স্কুলের প্রতি ভালোবাসার নজির গড়লেন স্বপন বৈরাগী। স্কুল জীবন শেষ করে প্রতিবেশী দেশ ভারতে থিতু হন তিনি। এরপর আর দেশে না আসলেও স্কুলের অনুষ্ঠানে এবারই প্রথম ৩৮ বছর পর দেশে ফিরলেন স্বপন। পুরনো বন্ধুদের কাছে পেয়ে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন মনের আনন্দে।স্বপনের মত সবাই যখন কেঁদেছেন ক্লাস রুমের কোনো বন্ধুকে পেয়ে।
বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯০তম বর্ষে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়েছে। শুক্রবার এ উপলক্ষে বসেছিল নবীন-প্রবীণের মিলনমেলা। আবেগঘন স্মৃতিচারণে সাবেক শিক্ষার্থীরা ফিরে যান নিজ নিজ শৈশবে।
জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়। উৎসবের পতাকা উত্তোলন করেন গৌরবময় ৯০ বর্ষ উদযাপন ও পুনর্মিলনী উদযাপন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোসাম্মাৎ আসমা বেগম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খুলনা অঞ্চলের সাবেক উপ পরিচালক নিভা রাণী পাঠক। এ সময় বক্তব্য রাখেন আবু নাসের হাসপাতাল খুলনার সাবেক পরিচালক ডা: বিধান চন্দ্র গোস্বামী, অগ্রণী ব্যাংকের সাবেক ডিজিএম নীহার হালদার, সাবেক মৃত্তিকা গবেষক শচীন্দ্রনাথ বিশ্বাস, স্বাস্থ্য বিভাগের সাবেক পরিচালক ডা. সঞ্জয় পাঠক, শহীদ মসিয়ুর রহমান ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক বিপ্লব সেন, বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার মল্লিক, বর্তমান প্রধান শিক্ষক পিয্ষু কান্তি বিশ্বাস, বাঘারপাড়া প্রেসক্লাবের কোষাধক্ষ্য সহকারী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস প্রমুখ । ১৯৩৫ সালে যাত্রা শুরু করা বাকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এই অঞ্চলের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আন্দোলন ও সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আজ শনিবার আয়োজনের দ্বিতীয় দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। এতে সংগীত পরিবেশন ও যাত্রা গানের মধ্য দিয়ে দু’দিনের অনুষ্ঠান শেষ হবে।