Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)

❒স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন জয়ন্ত কুমার কুন্ডু

বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়নে ঝিনাইদহে দুইটি আসনে অসন্তোষ

এখন সময়: বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর , ২০২৫, ১১:২৮:১২ পিএম

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ জেলার চারটি সংসদীয় আসনে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি। ঝিনাইদহ-১ (শৈলকুপা) আসনে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ঝিনাইদহ-২ (সদর-হরিণাকুণ্ডু) আসনে জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদ ও ঝিনাইদহ-৩ (মহেশপুর-কোটচাঁদপুর) আসনে সাবেক এমপি শহিদুল ইসলাম মাস্টারের পুত্র মেহেদী হাসান রনি ধানের শীষের মনোনয়ন পেয়েছেন। ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ ও সদরের একাংশ) আসন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানকে ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি। ফলে ওই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের কোনো প্রার্থী থাকছেন না।
এদিকে চার আসনে প্রার্থী ঘোষণার পর ঝিনাইদহ-১ ও ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির নেতাকর্মীদের অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু। বিএনপি সূত্র বলছে, এই দুইটি আসন থেকে দলের দুইজন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। বিশেষ করে ঝিনাইদহ-৪ আসন আসনছাড়ের বিষয়টি কোনোভাবেই মানতে পারছেন না স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
ঝিনাইদহ-১ আসনের বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী জয়ন্ত কুমার কুন্ডু দীর্ঘদিন ধরেই ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। তৃণমূল বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী তার প্রচারণা আর গণসংযোগে অংশ নিয়ে আসছেন। জানতে চাইলে জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বলেন, ‘জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য ঝিনাইদহ-১ আসনে আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে শৈলকুপাবাসী তাদের প্রতিনিধি বেছে নেবেন।’ শিগগিরই দল থেকে পদত্যাগ করবেন বলেও জানিয়েছেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা।
ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় শৈলকুপাবাসী, সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ-১ আসনে গত ১৭ ডিসেম্বর আমার পক্ষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একজন প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আপনাদের সকলের দোয়া ও আশীর্বাদ প্রার্থনা করছি।’
এদিকে ঝিনাইদহ-৪ আসনে মনোনয়ন ঘোষণার পরই নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দেয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। বুধবার দুপুরে কালীগঞ্জ থানা রোডে উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। এতে বিএনপি ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন- যারা বিগত ১৭ বছর কালীগঞ্জে বিএনপির হাল ধরে ছিল তাদের মধ্য থেকে মনোনয়ন না দিয়ে বহিরাগত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। রাশেদ এই এলাকার ভোটার না। এমন সিদ্ধান্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। বহিরাগতকে চাপিয়ে দিলে দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন না দেয়ার খবরে কানে ধরে বিএনপির রাজনীতি করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ফরহাদ হোসেন নামের এক যুবদল কর্মী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৫২ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, কালীগঞ্জ হাসপাতালে সামনে কানে ধরে দাঁড়িয়ে আছেন ওই যুবক আর তাকে ঘিরে আছে লোকজন। এ সময় ফরহাদ হোসেন বলতে থাকেন, ‘ঝিনাইদহ-৪ আসনে ফিরোজ ও হামিদ ভাইয়ের একজনও মনোনয়ন না পাওয়ার কারণে আমি কানে ধরে বিএনপির রাজনীতি ত্যাগ করছি। কারণ ঢাকা সিটি থেকে যখন ট্রাকের ভর (ওজন) নিতে পারেনি, তাহলে ঝিনাইদহ-৪ থেকে ট্রাকের ভর নেবে কোন কায়দায়। তাই এই ভর আমরা ঠেকাতে পারব না। আজ থেকে সব বন্ধ করে দেব। কালীগঞ্জে বিগত ১৭ বছর যারা বিএনপির রাজনীতি টিকিয়ে রেখেছিল, তাদের যদি আজ মনোনয়ন না দেয়া হয়, তাহলে কিসের রাজনীতি।’
কালীগঞ্জের একাধিক বিএনপি নেতাকর্মী জানান, ঝিনাইদহ-৪ আসনে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার কথা। নির্বাচনি হালচাল সেটাই জানান দিচ্ছে। কাজেই এই আসনে দলের ত্যাগী প্রার্থীরা স্থান পেলে বিএনপির ভোটের পাল্লা ভারি হওয়া সহজ হবে। তবে, রাশেদ খান বিএনপির প্রার্থী হলে কালীগঞ্জের তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে নিরবতা অবলম্বল করতে পারে। যাকে কালীগঞ্জের মানুষ কখনো দুর্দিনে পাশে পায়নি- আমরা এমন কাউকে দলের পক্ষ থেকে চাই না। বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে আমরা বিএনপির জন্য নিজেদের জীবন বাজি রেখেছি। আমরা এখানে দলের প্রার্থী চাই।
তাজু জোয়ারদার নামে বিএনপির এক কর্মী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘গত ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি সাইফুল ইসলাম ফিরোজের সঙ্গে। এখন একজন বহিরাগতকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই মানতে পারছি না।’
সাধারণ ভোটার নিমাই চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘কালীগঞ্জে বিএনপির রাজনীতি বলতে ফিরোজ ও হামিদ ভাই। আমরা এই দুজনের যেকোনো একজনকে প্রার্থী হিসেবে পাবো বলে আশা করেছিলাম। এখানে রাশেদ খান বিএনপির প্রার্থী হলে নেতাকর্মীরা নিরুৎসাহিত হবে।’
কালীগঞ্জ শহরের চা দোকানি মাহাবুর রহমান জানান, ‘আমরা আমাদের এলাকার প্রার্থীকেই প্রার্থী হিসেবে পাওয়ার আশা করেছিলাম। নিজ এলাকার বাইরের প্রার্থীকে মানুষ সাধারণ ভাবে গ্রহণ করবে কিনা সেটাই প্রশ্ন।
এই আসনে স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ ও জেলা বিএনপির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক এমপি শহিদুজ্জামান বেল্টুর সহধর্মিণী মুর্শিদা জামান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাইফুল ইসলাম ফিরোজ ধানের শীষের প্রার্থী ছিলেন।

Ad for sale 100 x 870 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
Ad for sale 225 x 270 Position (4)
Position (4)