স্পন্দন ডেস্ক: জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদল’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার রাতে রাষ্ট্রীয় ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠকের পরে বেরিয়ে এসে এ দাবির কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, “আমরা আজকে প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের কাছে এসেছিলাম কতগুলো রাজনৈতিক কনসার্ন নিয়ে কথা বলার জন্য। বিশেষ করে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেই জাতীয় সংসদ অনুষ্ঠানকে অর্থবহ, নিরপেক্ষ, সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে যেটা প্রয়োজন, সেটা হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে এখন কেয়ারটেকার গভার্নমেন্টের আদলে নিতে হবে।”
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “কেয়ারটেকার গভার্নমেন্ট বলতে আমরা যা বোঝাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকায় তাদেরকে যেতে হবে। সেজন্য প্রথমেই যে বিষয়টির প্রয়োজন হবে, তা হচ্ছে, প্রশাসনকে জনগণের কাছে পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ করে তৈরি করতে হবে।”
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যুমনায় প্রবেশ করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ ছিলেন এই প্রতিনিধি দলে। সন্ধ্যা ৭টা ১১ মিনিটে তারা যমুনা থেকে বেরিয়ে অপেক্ষামান সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “সেক্রেটারিয়েটে যারা এখনো আছেন, যাদেরকে চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয়, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি।
“আমরা বলেছি যে জেলা প্রশাসন, বিশেষ করে সেখানেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং আমরা কিছু কিছু কথা বলে এসেছি, যেগুলো আমরা মনে করি যে তারা এখনো সেই ফ্যাস্টিস সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদেরকে অপসারণের কথা আমরা বলেছি।”
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে যে সমস্ত পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে, বা যাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হবে, সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে এসেছি।
“পাশাপাশি আমরা বলে এসেছি যে বিচার বিভাগে, বিশেষ করে হায়ার জুডিশিয়ারিতে এখনো যে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের দোসর আছেন, তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা জুডিশিয়ারির ব্যাপার, তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সবকিছুর দায়িত্বে আছেন, তার কাছে আমরা আমাদের সেই কনসার্নগুলো জানিয়ে এসেছি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন, তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়ে এসেছি, এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।”
কোনো উপদেষ্টার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলেছেন কিনা–এমন প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব ‘না’ সূচক জবাব দেন।