সুব্রত কুমার ফৌজদার, ডুমুরিয়া: ডুমুরিয়ায় জমি অধিগ্রহণের জটিলতায় দুই বছর ঝুলে আছে বাদুরগাছা-কুলটি ও গজেন্দ্রপুর এলাকার দুটি গার্ডার ব্রিজ। ব্রিজ নির্মাণ কাজ শেষ হলেও অ্যাপ্রোচ সড়ক না হওয়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে না ব্রিজ দুইটি। ফলে ব্যাপক জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সেতু চালু হলে এসব অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি ঘটবে।
জানা যায়, খুলনা বিভাগ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ডুমুরিয়া উপজেলায় ২টি গার্ডার ব্রীজের মুল কাজ সম্পন্ন হলেও জায়গা অধিগ্রহনের জটিলতায় অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ কাজে বিলম্বিত হচ্ছে। বাদুরগাছা-কুলটি সড়কে কৈয়া নদীর উপর ৪ কোটি ৩৪ লাখ ২৫ হাজার ৯২৮ টাকা বরাদ্দে ৮৬ মিঃ চেইনেজ ৬৫ মিঃ দীর্ঘ গার্ডার ব্রিজের মূল কাজ শেষ হয়েছে দুই বছর আগে। কিন্তু অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ না করায় ব্রিজ দিয়ে মানুষ যাতায়াত করতে পারছে না। জমি অধিগ্রহণ তালিকায় রয়েছে কুলটি গ্রামের শংকর সানা, চিরঞ্জিত সানা, রনজিত সরকার ও বাদুরগাছা গ্রামে প্রভঞ্জন সরকার, গোপাল মন্ডল, নারায়ন সরকার ও অনাদি সরকার। তাদের জায়গা অধিগ্রহন না হওয়ায় জমির মালিক দখল ছাড়ছে না। ব্রীজটি ১৯১৮ সালের ১৩ ডিসেম্বর নির্মাণ কাজ শুরু করার কথা থাকলেও তা অনেক দেরিতে শুরু হয়। এক বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করে ব্রিজের মুল কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
বাদুরগাছা গ্রামের পরিতোষ কুমার সরকার জানান, ব্রিজের কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু অ্যাপ্রোচ সড়ক না হওয়ায় জনসাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। বিকল্প হিসেবে কুলটি ও বাদুরগাছা গ্রামের দু’পারের মানুষ এতদিন বাঁশের সাকো তৈরি করে পারাপার হতো। কিন্তু বর্তমানে সেটাও নেই। এখন বাঁশ দিয়ে সিঁড়ি তৈরি করে সেতুতে সংযোগ করা হয়েছে। সিঁড়ি বেয়ে ব্রিজে উঠতে হচ্ছে মানুষের। বিশেষ করে কমলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে।
এদিকে একই বিষয় নিয়ে ঝুলে আছে ভদ্রা নদীর উপর নির্মিত শরাফপুর ইউনিয়নের গজেন্দ্রপুর গার্ডার ব্রিজটি। ৪ কোটি ৪৬ লাখ ৭৪ হাজার ৩১১ টাকা বরাদ্দে উলা বাজার থেকে শরাফপুর ইউপি অফিস (বানিয়াখালী) সড়কে ৮৪ মিঃ দীর্ঘ গার্ডার ব্রীজ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে গত বছর দুই আগে। ১৯১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর শুরু হয় নির্মাণ কাজ। কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ব্রিজের মূল কাজ সম্পন্ন করে। কিন্তু ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিকদের সঠিক ক্ষতিপূরণ না দেওয়া এবং জমি নিয়ে বিরোধের মত সমস্যাগুলোর কারণে সেতু নির্মাণের পূর্ন কাজ সম্পন্ন হতে বিলম্বিত হচ্ছে। ভুমি অধিগ্রহণ না করে প্রকল্প শুরুর অভিযোগ এলাকাবাসীর।
এ বিষয় বিএনপি নেতা মশিউর রহমান লিটন জানান, গজেন্দ্রপুর ব্রীজটি নির্মাণ শেষ হলেও তা ব্যবহৃত হচ্ছে না। দীর্ঘদিন পড়ে আছে ব্রিজটি। এ এলাকায় ব্যাপক কৃষি ফসল উৎপাদন হয়। কৃষকরা তাদের ফলানো সবজি নিয়ে বাজারে যেতে অনেক অসুবিধা হচ্ছে। কিছুদিন আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসে অ্যাপ্রোচ সড়কের জায়গা মেপে প্লাগ টানিয়ে দিয়েছে। মনে হয় জমি অধিগ্রহনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ দারুল হুদা জানান, ভুমি অধিগ্রহণের বিষয়টি আমাদের দায়িত্ব না। এটা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে হয়ে থাকে। তবে কুলটি ব্রিজের ভুমি অধিগ্রহন কার্যক্রম অনেকটা এগিয়ে গেছে এবং গজেন্দ্রপুর গার্ডার ব্রিজে কয়েকদিন হলো ভুমি পরিমাপের কাজ শেষ হয়েছে। অধিগ্রহণ কার্যক্রম শেষ হলেই অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের জন্য টেন্ডার দেয়া হবে।