শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মেঘমালা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গেলেও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছেন না উপকূলের জেলেরা। বুক ভরা আশা নিয়ে ১১ জুন মধ্যরাতে সাগরে পাড়ি জমালেও সমুদ্রের উত্তাল ঢেউ ও প্রতিকূল আবহাওয়া তাদের পথের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলেরা জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে গভীর সমুদ্রে অবস্থান করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অনেক ট্রলার নির্ধারিত সময়ের আগেই ফিরে আসছে। মাছ ধরতে না পারায় অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা।তারা আরও বলেন, “সাগরে আবহাওয়া স্বাভাবিক না থাকায় মাছ ধরা ব্যাহত হচ্ছে। তবে আবহাওয়ার উন্নতি হলে মাছের পরিমাণ বাড়বে বলে তারা আশা করছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য মতে, গত সোমবার বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার সৃষ্টি হয়।
এ কারণে উপকূলজুড়ে ভারি বৃষ্টি ও দমকা বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে। কিন্তু গত বুধবার দুপুরে মেঘমালা থেকে সুস্পষ্ট লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত জারি করা হয়েছে।
এর প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকেই সাগর ভয়ংকর রূপ নিতে শুরু করেছে যা এখনো অব্যাহত আছে।
ইতোমধ্যে সাগর ছেড়ে কূলে ফিরতে শুরু করে ফিশিং ট্রলারগুলো। ফলে গভীর সমুদ্রে বন্ধ হয়ে যায় ইলিশ আহরণ।
শরণখোলার জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানান, সাগর থেকে উঠে আসা উপকূলীয় অঞ্চল শরণখোলা, পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া, চরদোয়ানী, পিরোজপুর, সাপলেজা ও বাগেরহাটের এলাকার শত শত ফিশিং ট্রলার সাগরতীরবর্তী পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার চর, আলোর কোল, কটকা- কচি খালি এলাকার বনের ছোট খালের ভেতরে নোঙর করে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছে। এছাড়া ওই সকল এলাকার বন সংলগ্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শরণখোলা উপজেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবর মেম্বার বলেন, বর্তমানে রায়েন্দা মৎস্য ঘাটে অসংখ্য ট্রলার নিরাপদে আছে।
শরণখোলা ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, ৫৮ দিনের অবরোধ শেষে ফিশিং ট্রলার গুলোর জেলেও মহাজনরা লক্ষলক্ষ টাকা দাদন নিয়ে সাগরে গেলেও গত এক সপ্তাহ ধরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে লোকসানের মুখে পড়বে এ সকল জেলেও মহাজনরা।
তবে বঙ্গোপসাগর এলাকার তীরে অবস্থানরত জেলেরা জানায়, এই বৈরী আবহাওয়ার মধ্যও কিছু জেলেরা সাগরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাছ ধরছে যা তাদের জীবনে বড় ধরনের বিপদ আনতে পারে।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের এক কর্মকর্তা বলেন , ‘সাগর থেকে বেশ কিছু ফিশিং ট্রলার সুন্দরবন এ বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে যা তারা অবহিত আছেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য বনরক্ষীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।