নিজস্ব প্রতিবেদক : মণিরামপুরের সরশকাটি গ্রামের পারভেজ হোসাইন শিমুল হত্যা মামলায় পিতা-পুত্রসহ ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে যশোরের পিবিআই। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সৈয়দ রবিউল আলম।
অভিযুক্ত আসামিরা হলো, সরশকাটি গ্রামের আব্দুস সামাদ মোড়ল ও তার ছেলে জাহিদুল ইসলাম, মৃত বিল্লাল হোসেনে ছেলে আকাশ হোসেন, কুলটিয়া গ্রামের মাহাবুবুর রহমানের ছেলে ও আব্দুস সামাদ মোড়লের জামাই সিরাজুল ইসলাম সিরাজ।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, সরশকাটি গ্রামের রফিকুল ইসলাম আনসার ব্যাটালিয়নের চাকরির সুবাদে গাজীপুর থাকেন। তার স্ত্রী ছেলে পারভেজ হোসাইন শিমুলকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে থাকতেন। ২০২৮ সালের ১০ ডিসেম্বর রাতে শিমুল রাত সাড়ে ৯টার দিকে বন্ধু আকাশের ফোন পেয়ে র্যাকেট নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। গভীর রাত হলেও শিমুল বাড়ি না ফেরায় স্বজনের খোঁজাখুঁজি করে তাকে উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। পরদিন সকালে রাজগঞ্জ সড়কের পাশে মাঠের মধ্যে থেকে শিমুলের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় নিহতের পিতা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে মণিরামপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব পায়।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম আনসার বাহিনীতে চাকরি করার সুবাদে আব্দুস সামাদ মোড়লের ছেলে জাহিদুল ইসলামকে একই বাহিনীতে চাকরি দেন। রফিকুল ইসলাম চাকরি দিতে আব্দুস সামাদ মোড়লের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নিয়েছিলেন। জাহিদুল ইসলাম আনসার বাহিনীতে যোগদানের পর গাজীপুর ৬ মাসের ট্রেনিং করে। এরমধ্যে পুলিশ ভেরিফিকেশনে চাকরি বাতিল হয়ে যায় জাহিদুল ইসলামের। জাহিদুল বাড়ি ফিরে আসায় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে রফিকুল ইলামের কাছে চাকরির জন্য দেয়া ৮ লাখ টাকা ফেরত চায় আসামি আব্দুস সামাদ মোড়ল। টাকার ব্যবস্থা না করে রফিকুল ইসলাম তার কর্মস্থলে ফিরে যায়। জাহিদুল ইসলাম এবং দুলাভাই ক্ষিপ্ত হয়ে রফিকুল ইসলামের স্ত্রী-সন্তানের ক্ষতি করার ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার রাতে শিমুলের বন্ধু আকাশকে দিয়ে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে আনে জাহিদুল। এরপর তারা শিমুলকে ফুসলিয়ে মাঠের মধ্যে নিয়ে হত্যার পর লাশ ফেলে আসে।
মামলার তদন্ত কালে শিমুলের ফোনের কললিস্ট ধরে প্রথমে আকাশকে আটক করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তিতে আব্দুস সামাদ ও তার জামাইকে আটক করা হয়। এ মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও স্বাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই ৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলামকে পলাতক দেখানো হয়েছে।